ডাবের পানির আদ্যোপান্ত
মাহফুজা আফরোজ সাথী, প্রধান পুষ্টিবিদ, ইমপেরিয়াল হসপিটাল
১৩:৩৮, ২৬ নভেম্বর ২০২০
আপডেট: ১৩:৪৪, ২৬ নভেম্বর ২০২০
৬৩২১
ডাবের পানির আদ্যোপান্ত
আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ থেকে ডাক্তার পর্যন্ত সবার কাছে সকল রোগের এক মহৌষধের নাম হলো কচি ডাবের পানি। জ্বর হলো ডাব খাও, উচ্চরক্তচাপ ডাব খাও আবার নিম্নরক্তচাপ তাও ডাবের পানি,মাথা ব্যথা ডাবের পানি। আসুন জেনে নেই কি আছে এই ডাবের পানিতে।
ডাবের পানি বা ডাবের জল হলো কচি ডাবের ভিতরের রস বা তরল। ডাব পেকে নারিকেল হবার সাথে সাথে পানির পরিমান কমতে থাকে তার জায়গায় শাঁস জমা হয়। মাটির গুনাগুনের উপর নির্ভর করে ডাবের পানির স্বাদ কেমন হবে। বাংলাদেশে মিষ্টি ও নোনতা দুই স্বাদের ডাবের পানিই পাওয়া যায়।
ডাবের পানিতে যে খনিজ লবন সবচেয়ে বেশি থাকে তা হলো পটাশিয়াম। যার কারণে পটাশিয়ামের ঘাটতি কমাতে ডাবের পানি খুব ভালো কাজে আসে। পটাশিয়ামের ঘাটতি নানাবিধ কারণে হতে পারে। কারো ডায়রিয়ার সাথে বমি হলে পটাশিয়ামের ঘাটতি হয় তখন ডাবের পানি দেয়া যায়। অনেক কিডনি রোগীর ইলেকট্রোলাইড ইমব্যালন্স হলে পটাশিয়াম কমে যায় তাদের ক্ষেত্রে ডাবের পানি ভালো কাজ করে।
আবার উচ্চরক্তচাপের কারণ হলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যাওয়া যেহেতু এতে পটাশিয়াম আছে তাই রক্তচাপ কমাতে সহায়ক তবে রক্তচাপ কমে গেলে ডাবের পানি খাওয়ানো বিপদজনক হতে পারে। এছাড়াও মুত্রথলি বা মুত্রনালীর কোন রোগে ডাবের পানি ক্লিয়ারিং এজেন্ট হিসেবে উপকারী। এতে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকাতে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে পারে ডাবের পানি। ডাবের পানিতে কিনেটিন নামের এক প্রকার হরমন থাকে যা কিনা স্নায়ুতন্ত্রের রক্ষনাবেক্ষণ করে।
যার এত গুণ তাই বলে কি আমরা যখন তখন যে কোন কারণে ডাবের পানি খাব? না, কিছু ক্ষেত্রে এটি উপকারী হলেও অনেক ক্ষেত্রে এর অপকারী দিকও আছে। যেমন- এটি রক্তচাপ কমিয়ে দেয় তাই যারা হাইপোটেনশনে ভুগছেন তারা ডাবের পানি কম খাবেন। কিডনি রোগীর ক্ষেত্রে অবশ্যই প্লাজমা ইলেকট্রোলাইড রিপোর্ট দেখে ডাবের পানি খাওয়া বাঞ্চনীয়। ডাবের পানি ন্যাচারাল লেক্সেটিভ তাই অতিরিক্ত পানে পাতলা পায়খানা হতে পারে।
যাদের হার্ট অ্যাটাক বা হার্টের মাসল দূর্বল তাদেরকে ডাবের পানি দেয়া খুবই বিপদজনক কেননা ডাবের পানিতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে যা কার্ডিয়াক মাসলের উপর কাজের চাপ বাড়িয়ে দেয় তাই এটা প্রাণঘাতী হতে পারে। যদিও ডাবের পানিতে খুব বেশি চিনি থাকে না তবুও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগীর জন্য এটি খুব একটা নিরাপদ নয়।
সব খাবারেই পুষ্টি উপাদান আছে এবং তার স্বাস্থ্যের ওপর উপকারী ভূমিকাও আছে তাই বলে একটি খাবার সকল রোগের ঔষধ হতে পারে না। যখন তখন যে কোন কারণে ডাব খাওয়া স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে তাই পরিমিত পরিমাণে ডাবের পানি পান করে সুস্থ থাকাই উত্তম পন্থা।
মাহফুজা আফরোজ সাথী: প্রধান পুষ্টিবিদ, ইমপেরিয়াল হসপিটাল, চট্টগ্রাম।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- যেসব কারণে ত্বক কালো হয়ে যায়
- মেরুদণ্ডের যত্ন নিন
- কাঁচা পেঁপে কাজে পাকা
- সর্দি-কাশিতে কফ সিরাপ নয়, বিকল্প নাগালেই
- বয়সের ছাপ দূর করার ঘরোয়া উপায়
- দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে কী হয়?
- মুখের কালো দাগ দূর করার সহজ উপায়
- গুণে ভরা লাল কলা
- দক্ষ কর্মীরা কেন প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যায়?
- যে ১০ কারণে মানুষ ব্যর্থ হয়!