শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ || ১৩ পৌষ ১৪৩১ || ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বিবিসিকে ভারতের পররাষ্ট্র কর্মকর্তা

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভ্যাকসিন রপ্তানি শুরু করবে ভারত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

০২:১১, ৬ জানুয়ারি ২০২১

আপডেট: ০২:২১, ৬ জানুয়ারি ২০২১

১০৮৩

বিবিসিকে ভারতের পররাষ্ট্র কর্মকর্তা

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভ্যাকসিন রপ্তানি শুরু করবে ভারত

টিকাদান কর্মসূচি শুরুর সপ্তাহদুয়েকের মধ্যে ভ্যাকসিন রপ্তানি শুরু করবে ভারত। এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়। তবে বিবিসির প্রতিবেদনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।

আগের স্থানীয় চাহিদা মেটানোর জন্য ভারত ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে বলে যে খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে,সেটিও নাকচ করেছেন ওই কর্মকর্তা।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভ্যাকসিন দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি তাদের সরকার দিয়ে আসছিল, সেটি এখনও অটুট রয়েছে। চুক্তি থেকে সরে আসার কোনো প্রশ্নই ওঠে না বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার বলেছেন-
'আমাদের এখানে ভ্যাকসিন দেওয়া দেওয়া শুরু হলেই ১৫ দিনের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে। এর মধ্যে কিছু ভ্যাকসিন আমরা উপহার হিসেবে দেব। আমাদের সরকার যে দামে ভ্যাকসিন কিনবে,মোটামুটি সেই দামেই বাকি ভ্যাকসিন রপ্তানি করা হবে।'

এদিকে মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক একটি ঘোষণা দিয়েছে। সেটি হলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার করোনার ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারত সরকার কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চাইলে যে কোনো দেশে টিকা রপ্তানি করতে পারবে। এবং  ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে জিটুজি ব্যবস্থাপনায় করোনার টিকা পাবে।

 ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেন-
'আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার কোভিড ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। এ কথাটা পরিষ্কার হওয়া উচিত। যখন আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কথা বলি, তখন তিনটি মন্ত্রণালয়ের প্রসঙ্গ এসে যায়। এর একটি হলো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয় টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও নিষেধাজ্ঞা আনেনি। বিপিআই আই পি, এটাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি দপ্তর। এই দপ্তরটিও নিষেধ করেনি। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেডও। কাজেই আমি আমাদের মিডিয়ার বন্ধুদের বলব, যখন এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য আপনাদের কাছে আসে, তা প্রচার থেকে বিরত থাকবেন আপনারা।'

আরও পড়ুন**ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা নেই

একই দিনে অর্থাৎ মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) ভারত থেকে সব দেশেই করোনা ভ্যাকসিন রপ্তানির অনুমোদন আছে, এ কথা জানিয়ে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা টুইট করেছেন।

টুইটে তিনি বলেছেন, 
‘মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় আমি দুটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। প্রথমত, অন্যান্য দেশে ভ্যাকসিন রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত একটি যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে ভারতে বায়োটেক নিয়ে যত ভুল তথ্য প্রচার হয়েছে সবকিছু পরিষ্কার করা হবে।'

আরও পড়ুন**ভারত থেকে ভ্যাকসিন রপ্তানিতে বাধা নেই: জানালেন সেরামের সিইও

এই  টুইটের আগে মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) সকালে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে ১৩৭ পৃষ্ঠার নীতিমালা চূড়ান্ত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এবং আগের দিন সোমবার (৪ জানুয়ারি) রাতে সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশের দিনই ভ্যাকসিনের আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন।

আরও পড়ুন**করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে নীতিমালা চূড়ান্ত করলো অধিদপ্তর

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ সংগ্রহের জন্য গত ৫ নভেম্বর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে সরকার। চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অনুমোদন দেওয়ার এক মাসের মধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট ৫০ লাখ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে বেক্সিমকোর মাধ্যমে। এরপর প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন দেবে। এভাবে মোট তিন কোটি ভ্যাকসিন কেনা হবে সেরাম থেকে।

আরও পড়ুন**ভ্যাকসিনের আমদানি ও ব্যবহারের অনুমোদন দিলো ওষুধ প্রশাসন

সোমবার ভারতের ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশের পর থেকে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, সেটি কাটাতে তৎপর হয় বাংলাদেশ-ভারত দুইবন্ধু প্রতীম রাষ্ট্র। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বেক্সিমকোর ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়, ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে কোথাও বিভ্রান্তির কিছু নেই। বারবার বলা হয়, বাংলাদেশ যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাবে।

আরও পড়ুন**ভ্যাকসিন নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই, বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এছাড়া ভারতের পক্ষ থেকে প্রথমেই এই অনিশ্চয়তা কাটাতে উদ্যোগ নেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোরালোভাবে জানিয়ে দেয়, চুক্তি ভঙ্গ করে ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আনার প্রশ্নই ওঠেনা।

আরও পড়ুন**ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা, অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ

সবমিলিয়ে গত দুইদিনে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন পক্ষ থেকে চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে  অনিশ্চয়তা কাটাতে নেওয়া তুমুল পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়েছে।
 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
স্পটলাইট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত