শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বাসার সামনে ১০ ঘণ্টা বসে থেকে ভক্ত পেলেন মেসির দেখা

স্পোর্টস ডেস্ক

১০:২৭, ১১ এপ্রিল ২০২৩

৩৫০

বাসার সামনে ১০ ঘণ্টা বসে থেকে ভক্ত পেলেন মেসির দেখা

লিওনেল মেসির সঙ্গে দেখা করার স্বপ্ন অনেকেরই। কতজনেরই বা এই স্বপ্নপূরণ হয়! হুয়ান পোলকান তেমনই সৌভাগ্যবানদের একজন। পিএসজি তারকা মেসির সঙ্গে তিনি শুধু দেখাই করেননি, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের বাসায় ঢুকেছেন এবং তাঁর দেওয়া অটোগ্রাফ শরীরে ট্যাটুও করিয়েছেন। তবে সেই ভক্তও বেশ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। মেসির দেখা পেতে প্যারিসে তার বাসার সামনে বসেছিলেন ১০ ঘণ্টা। জুয়ান পোলকান নামের সেই ভক্ত আর্জেন্টিনার একজন ফুটসাল খেলোয়াড়। পরবর্তীতে তার সেই অপেক্ষার পুরস্কারও পেয়েছেন। দরজা খুলে মেসি তাকে নিয়ে যান নিজের বাসায়।

আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের খবরে এই তথ্য বলা হয়েছে। মূলত যুক্তরাস্ট্রের অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ইনফোবে’র সঙ্গে ওই বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকার দেন পোলকান। এর আগে তিনি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ও টিকটকে মেসির সঙ্গে সাক্ষাতের ভিডিও প্রকাশ করেন।

তবে মেসির বাসা খুঁজে পেতে পোলকানের বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। মেসির সাক্ষাৎ পাওয়ার মতো সেই সৌভাগ্যের ভাগিদার হতে রীতিমতো সংগ্রাম শুরু করেন এই ফুটসাল খেলোয়াড়, ‌‌‘সেখানে যাওয়ার আগে আমি সম্ভাব্য সবকিছু করেছি। (মেসির বাসার) ঠিকানাটা ইন্টারনেটে অনেক খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। শেষ পর্যন্ত একজন হেয়ারড্রেসারের কাছে ঠিকানাটা পেয়েছি, যে প্যারিসেই থাকে এবং তার (মেসি) বাসায় গিয়েছিল। সে আমাকে ঠিকমতো জায়গাটা দেখায়নি। তবে বাসাটা কোথায় তা বুঝিয়ে দিয়েছে। তবে অনেকেই তার বাসার ঠিকানা পেতে কল দিয়েছিল, কিন্তু মেসির প্রতি সম্মান রেখে কাউকে আমি ঠিকানা দিইনি। এরপর যখন তার বাসার সামনে পৌঁছাই তখন সকাল ৮টা। বাসাটা খুঁজে পেতে ৪৫ মিনিটের বেশি লাগেনি।’

এরপর মেসির বাসার সামনে অপেক্ষা করা নিয়েও কথা বলেন পোলকান, ‘অপেক্ষা করেছি ভালোবাসা থেকে। তার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাটা মনের ভেতর পুষে রেখেছিলাম। যে হোস্টেলে ছিলাম সকালে সেখানে শুধু একটা কফি খেয়েছিলাম, এরপর রাতে ফেরার আগপর্যন্ত সারা দিনে কিছু খাইনি। (মেসির বাসার সামনে অপেক্ষার সময়) লোকজন আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জার্সি দেখে ভেবেছে, মেসির সঙ্গে হয়তো কোনো সংযোগ আছে! সকাল ৯টা পর্যন্ত বসে থাকার পর তাকে অনুশীলনে যেতে দেখি। শুরুতে সে একা ছিল, দুপুরের দিকে একটি ছেলে এসে তাঁর সঙ্গে যোগ দেয় এবং দুর্দান্ত একটি চিত্রকর্মও এনে দেয়।’

তবে মেসি যখন অনুশীলন শেষে বাসায় ফিরছিলেন তখনও তার কাছে দৌড়ে যাননি অপেক্ষারত এই যুবক। তখন প্রায় ১০ ঘণ্টা হতে চলল, এরপরই মেসির স্ত্রী অ্যান্তোনেলা রোকুজ্জোকে বের হতে দেখেন পোলকান, ‌‘বিকালে বাসায় ফেরার সময় আমি ভেবেছিলাম মেসি আমাকে দেখবেন। সেজন্য আমি তার কাছে যাইনি। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় হঠাৎ অ্যান্তোনেলা সন্তানদের আনার জন্য গাড়িতে উঠছিল। তখন জানালা খুলে তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল মেসির সঙ্গেও হয়তো দেখা করা সম্ভব নয়। আবার ভেবেছি বাসার নিরাপত্তারক্ষী পুলিশকে কল দিয়ে আমাকে ধরিয়ে দেয় কিনা!‌‌ কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি, বহুল কাঙ্ক্ষিত সেই দেখা পেতে প্যারিসে দু’দিন কাটিয়েছি।’

পরবর্তীতে সেই ধৈর্যের ফল পান পোলকান। তার ধৈর্য দেখে শেষ পর্যন্ত লিওনেল মেসি–অ্যান্তোনেলা রোকুজ্জো দম্পত্তির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। যা নিয়ে পোলকান নিজেও হতবাক হয়েছেন, ‘হঠাৎ অ্যান্তোনেলা কোত্থেকে যেন উদয় হয়ে দরজা দেখিয়ে আমাকে ভেতরে যাওয়ার ইশারা দিয়ে বলল “আসো আসো”। সেই দৃশ্যটা কখনো ভুলব না। সে আমার জন্য বাসার দরজা খুলেছে! অন্য কোথাও দেখা করতে পারত, কিন্তু তা না করে নিজের বাসায় ডেকেছে।’

বাসায় ঢোকার পর অন্যরকম এক উচ্ছ্বাসে কাঁপা শুরু করেন পোলকান। সেই বর্ণনা তিনি এভাবে দেন, ‘আমি ভেতরে ঢুকেই দেখি মেসি শর্টস আর স্লিপার পায়ে দাঁড়ানো। এরপর আমাকে বললেন ‘হ্যালো’। এটি এক অবিশ্বাস্য মুহূর্ত। এরপর আমি তাকে কত ভালোবাসি তা বলতে লাগলাম। পরবর্তীতে আমরা ছবি তুললাম, মেসি আমার ফুটসাল জার্সি ও হাতে অটোগ্রাফ দেন এবং জড়িয়ে ধরেন। তখন আমি বেশ নার্ভাস হয়ে পড়ি এবং হাত কাঁপা শুরু করে। এরপর য্নে অটোগ্রাফ নষ্ট হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনিই আমাকে শান্ত করেন।’

মেসির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পোলকান বলছেন, ‘লিও, আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সেটি বিশ্বকাপ জয়ের জন্য নয়। শৈশব থেকে যে স্বপ্ন দেখে আসছি তা পূরণ করে আমাকে সুখী করার জন্য ধন্যবাদ। তোমার প্রতিটি ম্যাচেই আমার মুখে হাসি ফোটে। আমি ভাইরাল হতে চাই না। আমি সবাইকে জানাতে চাই মেসি কেমন, কতটা সরল, কতটা আন্তরিক।’

 

 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank