অ্যান্টিগা টেস্ট: ১১২ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ
অ্যান্টিগা টেস্ট: ১১২ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ১১২ রানে পিছিয়ে সফরকারী বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে নিজেদের করা ১০৩ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৫ রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ বোলাররা। এরপর ১৬২ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দিন শেষে ২ উইকেটে ৫০ রান করেছে বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে টেস্টের প্রথম দিনই অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর নিজেদের ইনিংস শুরু করে দিন শেষে ২ উইকেটে ৯৫ রান করেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখনও ৮ রানে পিছিয়ে ছিলো ক্যারিবীয়রা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ৪২ ও এনক্রুমার বোনার ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনের সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারি দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লিড এনে দেন ব্র্যাথওয়েট। তবে দিনের দশম ওভারে উইকেট শিকারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। পেসার খালেদ আহমেদের ডেলিভারি ঠিক-ঠাক খেলতে পারেননি বোনার। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে প্রথম স্লিপে যাওয়া বল মিস করেন শান্ত। উইকেট শিকারের সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ।
পরের ওভারে ১৭৪তম বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ব্র্যাথওয়েট।
অধিনায়কের ধৈর্য্যশীল হাফ-সেঞ্চুরির পর বিদায় নেন বোনার। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের আর্ম বলের ডেলিভারিতে বোল্ড হন ২৩ রানে জীবন পাওয়া বোনার। শেষ পর্যন্ত ৩টি চারে ৩৩ রান করেন বোনার। তৃতীয় উইকেটে ব্র্যাথওয়েট-বোনার জুটি ৬২ রান যোগ করেন।
জার্মেই ব্ল্যাকউডকে সাথে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন ব্র্যাথওয়েট। ফলে ৩ উইকেটে ১৫৯ রান তুলে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বিরতি থেকে ফিরে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের দুই ওভারে ১টি করে বাউন্ডারি মারেন ব্র্যাথওয়েট-ব্ল্যাকউড। ৯০তম ওভারে ব্র্যাথওয়েটকে তুলে নেন খালেদ। খালেদের হালকা ইনসুইংয়ের বল সামলাতে না পেরে লেগ বিফোর আউট হন ব্র্যাথওয়েট। তবে রিভিউ নেননি ব্র্যাথওয়েট। নাভার্স-নাইন্টিতে আউট হয়ে ৬ রানের জন্য টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি মিস করেন ব্র্যাথওয়েট। ৪০০ মিনিট ক্রিজে থেকে ৯টি চারে ২৬৮ বল খেলে ৯৪ রান করেন তিনি। এই নিয়ে পঞ্চমবার নাভার্স-নাইন্টিতে আউট হলেন ব্ল্যাকউডের সাথে ৬৩ রান করট ব্র্যাথওয়েট।
অধিনায়কের বিদায়ের পর বাংলাদেশ বোলারদের বিপক্ষে স্বাচ্ছেন্দ্যে খেলেছেন ব্লাকউড ও কাইল মায়ার্স। মায়ার্সকে ৭ রানে লেগ বিফোর আউট করে ইনিংসে প্রথম উইকেটের দেখা পান স্পিনার মিরাজ। রিভিউ নিয়ে মায়ার্সকে ফেরায় বাংলাদেশ।
মায়ার্স ফেরার পর বাউন্ডারি দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ব্ল্যাকউড।
নিজের প্রথম উইকেট শিকারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটরক্ষক জশুয়া ডা সিলভাকে ১ ও আলজারি জোসেফকে খালি হাতে বিদায় দেন মিরাজ। দু’জনই উইকেটের পেছনে নুরুলকে ক্যাচ দেন।
মিরাজের জোড়া আঘাতের পর উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন পেসার এবাদত। কেমার রোচকে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় দেন এবাদত।
১৫ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে আড়াইশর নীচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আটকে দেয়ার পথ তৈরি করেন মিরাজ ও এবাদত। তবে ৩টি চারে দলের রানকে আড়াইশ পার করেন মতি।
তারপরও যত দ্রুত সম্ভব ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ২ উইকেট তুলে নিতে মরিয়া ছিলো বাংলাদেশ। অবশেষে মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে ব্ল্যাকউডকে থাকায় বাংলাদেশ। খালেদের করা বলে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ২১৩ মিনিটে ১৩৯ বল খেলে ৯টি চারে ৬৩ রান করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সহ-অধিনায়ক ব্ল্যাকউড।
ব্লাকউডকে শিকারের পরের ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ইতি টানেন মিরাজ। শেষ ব্যাটার জেইডেন সিলেসকে ১ রানে থামান তিনি। ২৬৫ রানে অলআউট হয় ক্যারিবীয়রা। ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন মতি। মিরাজ ৫৯ রানে ৪টি, খালেদ-এবাদত ২টি করে উইকেট নেন। মুস্তাফিজুর-সাকিবের শিকার ছিলো ১টি করে।
১৬২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় বলেই বাউন্ডারি আদায় করেন তামিম ইকবাল। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি আসে মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাট থেকে। আর অষ্টম ওভারে পরপর দু’বলে চার মারেন তামিম। এতে দলের স্কোর বিনা উইকেটে ২৭ অতিক্রম করে। সর্বশেষ তিন ইনিংসে এমনটা দেখা যায়নি। শ্রীলংকার বিপক্ষে আগের টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে ৫ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ রানে ৪ উইকেট ও চলমান টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিলো বাংলাদেশ।
তামিম-জয়ের সাবধানী শুরু ৩৩ রানে থমকে যায়। জোসেফের আউট-সুইং ডেলিভারি উইকেটরক্ষক জশুয়া তালু বন্দী করলে ৪টি চারে ৩১ বলে ২২ রানে থামে তামিমের ইনিংস।
তামিমের আউটের পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে তিন নম্বরে নামেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ২২ বলে ২ রান করা মিরাজ, এবার ৬ বলে ২ রান করেন। জোসেফের অফ-স্টাম্পের বল ব্যাকফুটে খেলে প্রথম স্লিপে মায়ার্সকে ক্যাচ দেন মিরাজ।
দলীয় ৩৫ রানে মিরাজ ফেরার পর দিনের বাকী সময়ে আরও কোন উইকেট পড়তে দেননি জয় ও শান্ত। ৫০ বল খেলে ১৫ রান যোগ করেন তারা। জয় ১৮ ও শান্ত ৮ রানে অপরাজিত আছেন। জোসেফ ২ উইকেট নেন।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- এবার কোটা আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন মিরাজ
- ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশি বোলারদের আধিপত্য
- কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী শুটার আতিকুর রহমান মারা গেছেন
- ফুটবল দিয়ে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই বড় অর্জন: শেষ সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা
- পৃথিবীর দিকে হাত বাড়াও ঈশ্বর, ফুটবল ঈশ্বর তোমার দিকে হাত বাড়িয়েছে
- এবার শিক্ষার্থীদের সমর্থনে মুশফিক-শান্তদের স্ত্রীরা
- ফিরে যাচ্ছেন সাকিব
- দেশের ফুটবল আবারও সালাউদ্দিনের হাতে
- এভারিস্তো: যে ব্রাজিলিয়ানকে সমান ভালোবাসে রিয়াল-বার্সা
- আইপিএল ২০২০
সূর্য কিরণে পুড়লো রাজস্থান