চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলংকা বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলংকা বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ
ওপেনার তামিম ইকবালের সেঞ্চুরির সাথে মাহমুদুল হাসান জয়-মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের অর্ধশতকে শ্রীলংকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ভালো অবস্থায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ১০৭ ওভারে ৩ উইকেটে ৩১৮ রান করেছে টাইগাররা। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে এখন ৭৯ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৩৯৭ রান করেছিলো শ্রীলংকা।
তামিম ১৩৩ রান করে আহত হয়ে অবসর নেন। জয় ৫৮ রানে আউট হলেও, দিন শেষে মুশফিক-লিটন যথাক্রমে ৫৩ ও ৫৪ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে হতকাল দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে অলআউট হয় শ্রীলংকা। এরপর দ্বিতীয় দিন ১৯ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। বিনা উইকেটে ৭৬ রান তুলে দিন শেষ করতে পারে বাংলাদেশ। টাইগারদের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ৩১ ও তামিম ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ তৃতীয় দিনের শুরু থেকে শ্রীলংকার বোলারদের বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াই করেছেন জয় ও তামিম। দিনের ষষ্ঠ ওভারে দলের স্কোর ১শতে নিয়ে যান তারা। এর মাধ্যমে টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে শতরানের খরা কাটলো বাংলাদেশের। ৬১ ইনিংস পর বাংলাদেশের ওপেনাররা জুটিতে সেঞ্চুরি করেন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে গল টেস্টে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১১৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ও সৌম্য সরকার।
দলীয় স্কোর ১শতে পৌঁছানোর আগেই হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম। টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩২তম হাফ-সেঞ্চুরি পেতে ৭৩ বল খেলেন তিনি।
সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ম্যাচের দুই ইনিংসেই জোড়া শুন্য ছিলো জয়ের। অবশেষে ১১০ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন জয়ও। হাফ-সেঞ্চুরির পরপরই জীবন পান জয়। পেসার আসিথার শর্ট বল হুক করতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দেন তিনি। ফাইন লেগে জয়ের ক্যাচ ফেলেন লাসিথ এম্বুলদেনিয়া। তখন ৫১ রানে ছিলেন জয়।
জয় ও তামিমের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪৭ ওভারে বিনা উইকেটে ১৫৭ রান তুলে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এ সময় তামিম ৮৯ ও জয় ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বিরতির আগে জীবন পেলেও, দ্বিতীয় সেশনের ১১তম বলে বিদায় ঘটে জয়ের। আসিথার লেগ সাইডের শর্ট বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জয়। বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে শ্রীলংকার নিরোশান ডিকবেলার হাতে জমা পড়ে। ফলে শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১৬২ রানে ভাঙ্গে জয়-তামিমের উদ্বোধনী জুটি। ৯টি চারে ১৪২ বলে ৫৮ রান করেন জয়।
জয় আউট হওয়ার সময় ৯৪ রানে ছিলেন তামিম। ৫১তম ওভারে আসিথার প্রথম বলে বাউন্ডারি আদায় করে নিয়ে ৯৯ রানে পৌঁছে যান তিনি। আর পরের বলে স্কয়ার লেগে ঠেলে ১ রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তামিম। ১৬২ বল খেলে ৬৬ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১০ম ও শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম। সাড়ে সাত বছর চট্টগ্রামের মাটিতে ও সাড়ে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পর দেশের মাটিতে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। আর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির পর টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম।
তামিমের সেঞ্চুরির পর চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ২২ বলে খেলে ১ রানে বিদায় নেন তিনি। বিশ^ ফার্নান্দোর কনকাশন সাব কাসুন রাজিথার অফ-স্টাম্পের বল খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন শান্ত।
এরপর শ্রীলংকার অফ-স্পিনার রমেশ মেন্ডিসের বলে ডিফেন্সিভ খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন তামিম। লংকানদের আবেদনে আউট দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তামিম। তখন ১০২ রানে ছিলেন তিনি।
তামিম বেঁেচ গেলেও, অধিনায়ক মোমিনুল হক নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। বিশ^র পরিবর্তে খেলতে নেমে বল হাতে জ¦লে উঠেন রাজিথা। এবার মোমিনুলকে দারুন ডেলিভারিতে বোল্ড করে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন রাজিথা। ১৯ বলে ২ রান করেন মোমিনুল। সর্বশেষ পাঁচ ইনিংসে দু’অংক স্পর্শ করতে ব্যর্থ হলেন চট্টগ্রামের এই ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি ৭টি সেঞ্চুরি করা মোমিনুল।
রমেশের বলে রিভিউ নিয়ে বাঁচার পর ব্যক্তিগত ১১৪ রানে তামিমকে জীবন দেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। স্লিপে তামিমের ক্যাচ ফেলেন তিনি।
মোমিনুলের বিদায়ের পর ক্রিজে তামিমের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। দলের স্কোর বাড়ানেরা পাশাপাশি দু’জনের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা ছিলো। সেটি হলো, দেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ৫ হাজার রান স্পর্শ করা। এই টেস্টের আগে ৫ হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করতে মুশফিক প্রয়োজন ছিলো ৬৮ রান, আর তামিমের ১৫২ রান।
চা-বিরতি পর্যন্ত তামিম ১৩৩ ও মুশফিক ১৪ রানে ছিলেন। তবে চা-বিরতির পর আর মাঠে নামেননি তামিম। ব্যাটিং করার সময় অস্বস্তি বোধ করায় তামিমের জায়গায় উইকেটে আসেন লিটন।
উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে মুশফিকের সাথে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন লিটন। তবে ব্যক্তিগত ৩৩ রানে ধনাঞ্জয়ার বলে শর্ট লেগে ওশাদা ফার্নান্দোর ক্যাচ মিসে জীবন পান তিনি। জীবন পেয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন লিটন। ২৬তম হাফ-সেঞ্চুরি পান মুশফিক। দু’জনের হাফ-সেঞ্চুরির আগে ১০১তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩শ স্পর্শ করে।
শেষ পর্যন্ত হাফ-সেঞ্চুরি নিয়ে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন মুশফিক ও লিটন। ২টি চারে ১৩৩ বলে মুশফিক ৫৩ ও ৮টি চারে ১১৪ বলে লিটন ৫৪ রানে অপরাজিত আছেন । পঞ্চম উইকেট জুটিতে ২১১ বল খেলে অবিচ্ছিন্ন ৯৮ রান করেন মুশফিক-লিটন। আজ মুশফিক বা তামিমের কেউই ৫ হাজার রানের ক্লাবে নাম লেখাতে পারেননি। এ জন্য মুশফিকের প্রয়োজন ১৫ রান, আর তামিমের দরকার ১৯ রান।
শ্রীলংকার কনকাশন সাব রাজিথা ১৭ রানে ২ ও আসিথা ১ উইকেট নেন।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- এবার কোটা আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন মিরাজ
- ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশি বোলারদের আধিপত্য
- কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী শুটার আতিকুর রহমান মারা গেছেন
- ফুটবল দিয়ে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই বড় অর্জন: শেষ সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা
- পৃথিবীর দিকে হাত বাড়াও ঈশ্বর, ফুটবল ঈশ্বর তোমার দিকে হাত বাড়িয়েছে
- এবার শিক্ষার্থীদের সমর্থনে মুশফিক-শান্তদের স্ত্রীরা
- ফিরে যাচ্ছেন সাকিব
- দেশের ফুটবল আবারও সালাউদ্দিনের হাতে
- এভারিস্তো: যে ব্রাজিলিয়ানকে সমান ভালোবাসে রিয়াল-বার্সা
- আইপিএল ২০২০
সূর্য কিরণে পুড়লো রাজস্থান