ফেসবুক বিস্ফোরক মাশরাফি
দক্ষিণ আফ্রিকান বেকার কোচদের রিহ্যাব সেন্টার বাংলাদেশ
ফেসবুক বিস্ফোরক মাশরাফি
দক্ষিণ আফ্রিকান বেকার কোচদের রিহ্যাব সেন্টার বাংলাদেশ
জাতীয় দলের বর্তমান কোচিং স্টাফদের কড়া সমালোচনা করলেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাদের বাংলাদেশ দলের কোচ হওয়ার যোগ্যতা, সামর্থ্য আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর ভূমিকা নিয়ে আলাদা করে প্রশ্ন তুললেন মাশরাফি। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ইনিংসের বিরতিতে ডমিঙ্গো মাঠে গিয়ে মাহমুদউল্লাহকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন সেসব নিয়ে গভীর আলোচনা করেছেন।
পাশাপাশি ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুককে কেন এখনো রাখা হয়েছে তাও জানতে চান তিনি। মাশরাফি মনে করছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার চাকরি না পাওয়া কোচগুলো বাংলাদেশে একসঙ্গে রিহ্যাব সেন্টারে চাকরি করছেন। এছাড়া প্রধান কোচ খেলোয়াড়দের আগলে রাখছেন কি না সেসব নিয়েও সন্দেহ তার।
মাশরাফি নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন,
‘ম্যাচের একদিন পার হয়ে গেল কত কথা শুনলাম, যার অনেক কিছুরই যুক্তি আছে। কারণ দল হেরে গেলে মানুষ তার প্রতিক্রিয়া নিজের মতো করে দিবে এটা স্বাভাবিক। আমার মনেও অনেক কিছুই এসেছে তবে দুইটা জিনিস খুব বেশি মনে হচ্ছে, ম্যাচটা হারার জন্য কি শুধুই রিয়াদ আর লিটনই দায়ী আর কোন বিষয় কি নেই। আমার যে বিষয়টি মনে হয়েছে সেটা হলো-
১. ম্যাচের ৯.৪ ওভার ৭৯ রানে ওদের ৪ উইকেট ঠিক তখন আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ড্রিংকস ব্রেক, তার মানে কোচ মাঠের ভিতর আসবে। আমাদের কোচও এসেছিল, তাহলে উনি এসে রিয়াদের সঙ্গে কী কথা বলেছিল। যদি বলে থাকে তাহলে কি সব দায় রিয়াদের? মানলাম অন ফিল্ড ক্যাপ্টেন কল ইজ ফাইনাল তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ক্রাঞ্চ মোমেন্টে কি কোচ ডিস্কাশন করে না, কারণ ক্যাপ্টেন তখন বিভিন্ন বিষয়ে চাপে থাকে। তার প্লান কী এটা কি জানতে চেয়েছিল কোচ, আর যদি কথা হয়ে থাকে তাহলে কি কোচের প্রেস হ্যান্ডেল করা উচিত ছিল কি না। কারণ রিয়াদের ভুলটা ধরা হয়েছে ঠিক ওই সময় থেকেই। কারণ ১১ নাম্বার ওভার করে মেহেদী দলের মূল বোলার, ১২ নাম্বার ওভার করে রিয়াদ সম্ভবত ৫/৬ রান দেয় ১৩ নাম্বার ওভার করে আফিফ যে ওভারে ১৫ রান হয়। কিন্তু রিয়াদ যে চিন্তা থেকে আফিফকে বলে এনেছিল সেটাতেও কিন্তু সুযোগ তৈরি হয়েছিল। যদি সুযোগ হাতছাড়া না হতো তাহলে আমরা বলতাম দারুণ ক্যাপ্টেন্সি। ক্যাচ মিসের অজুহাত না দিলেও এটাই সত্য ক্যাচ মিস এই প্রথম হয়নি আর লিটন দলের সেরা ফিল্ডারদের একজন। কোনো কোনো সময় ভাগ্যটাও সঙ্গে থাকতে হয়। তাহলে স্রেফ দল সফল না হওয়ার কারণে এই দুজনকে এতটা তুলোধুনো করা কতটা ঠিক আমি শিওর না। আর ঠিক এ কারণেই আমার মনে হয়েছে, যদি কোচ এ বিষয়ে রিয়াদের সঙ্গে কথা না বলে থাকে তাহলে তো ব্রেকের সময় দলের টিম বয়কেই মাঠে পাঠিয়ে দেওয়া যায় হাই-হ্যালো করতে। কোচের আর প্রয়োজন কী?
২. ম্যাচের আগে উইকেট অ্যাসেস শুধু ক্যাপ্টেন করে না পুরো টিম ম্যানেজমেন্ট সঙ্গে থাকে। তাহলে টিম করার সময় চিন্তা করেছে উইকেট স্লো হবে যার কারণে তাসকিনকে বসিয়ে নাসুমকে খেলানো। কিন্তু নাসুমকে পাওয়ার প্লের পর বোলিং করানো হলো না কারণ দুজন বাহাতি ব্যাটসম্যান উইকেটে তাহলে আগেই চিন্তা করা উচিত ছিল শ্রীলঙ্কার টপ ওর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বেশি তার উপর মাঠের একপাশে মাত্র ৫৬ গজ। যখন নাসুমকে নেওয়া হয়েছে তাহলে ব্রেকের সময় কোচ রিয়াদকে কী বলেছে যে নাসুম দলের মূল বোলার ওকে ব্যাক করো। কারণ ওই নাসুমই ব্রেকটা পরে দিয়েছে ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় শেষ। তাহলে ওই সময় কোচ কি বসে বসে কোন প্ল্যান না করে শুধু খেলা দেখেছে? আবারও বলছি সিদ্ধান্ত রিয়াদ নিবে কিন্তু ওকে তো হেল্প করতে হবে কারণ মাঠে ক্যাপ্টেন কখনও কখনও অসহায় হয়ে পড়ে। আর ঠিক তখনই টিম ম্যানেজমেন্টকে টেকঅফ করতে হয়। অন্যান্য দলে তো তাই দেখি।
৩. আরো অনেক বিষয় আছে বলা যায়, তবে লিটন ক্যাচ মিসের কোন এক্সকিউজ দিবো না এমনকি লিটন নিজেও দিবে না, তবে ক্যাচ মিস খেলার একটা অংশই। কিন্তু ফিল্ডিং কোচের কাছে কি এ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। ক্যাচ মিস কি এই প্রথম হলো! ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ম্যানেজমেন্টের প্রায় সবাই চাকরি হারিয়েছে স্রেফ বর্তমান ফিল্ডিং কোচ ছাড়া। তাহলে আমরা বিশ্বকাপে বা তারপর কি সেরা ফিল্ডিং সাইড হয়ে গিয়েছি? এখন টিম ম্যানেজমেন্ট দেখলে মনে হয় একটা রিহ্যাব সেন্টার, যেখানে সাউথ আফ্রিকার সব চাকরি না পাওয়া কোচগুলো একসঙ্গে আমাদের রিহ্যাব সেন্টারে চাকরি করছে। এদের বাদ দেওয়া আরো বিপদ, কারণ চুক্তির পুরো টাকাটা নিয়ে চলে যাবে। তাহলে দাড়াল কী, তারা যতদিন থাকবে আর মন যা চাইবে তাই করবে। হেড কোচ এক এক করে নিজ দেশের সবাইকে আনছে এরপর যারা অস্থায়ীভাবে আছে তাদেরও সরাবে আর নিজের মতো করে ম্যানেজমেন্ট সাজাবে। তাও মেনে নিলাম কিন্তু রাসেল (হেড কোচ) ম্যানেজমেন্টের জন্য যেভাবে স্টেপআপ করে মূল দলের জন্য তাহলে লুকিয়ে কেন। কেন তামিম, মুশফিক, রিয়াদ ভালো থাকে না। এটা ঠিক করা কি তার কাজ না!
তারপরও দায় খেলোয়াড়দেরকেই নিতে হয় বা হবে। এটাই স্বাভাবিক কারণ মাঠে তারাই খেলে কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার যে খেলোয়ারদেরকে সেরকম পরিবেশ করে দিতে হবে। তাদেরকে বুঝাতে হবে তাদের বিপদে কেউ পাশে না থাকুক অন্তত টিম ম্যানেজমেন্ট থাকবে।
আমি আমার ক্যাপ্টেন্সির শেষ প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলাম এই দলের কোচ যেই হোক না কেন এখন এই দলের রেজাল্ট করার সময় এক্সপেরিমেন্টের না। কোচের চাহিদা মেটানোর আগে আমাদের দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে। কারণ ক্রিকেট দেশের মানুষের কাছে এখন স্রেফ খেলা নেই, রীতিমতো আবেগে পরিণত হয়েছে।
ভালো করুক আমার প্রিয় দল।
আল্লাহ সহায় হোন আমাদের।‘
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- এবার কোটা আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন মিরাজ
- ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশি বোলারদের আধিপত্য
- কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী শুটার আতিকুর রহমান মারা গেছেন
- ফুটবল দিয়ে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই বড় অর্জন: শেষ সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা
- পৃথিবীর দিকে হাত বাড়াও ঈশ্বর, ফুটবল ঈশ্বর তোমার দিকে হাত বাড়িয়েছে
- এবার শিক্ষার্থীদের সমর্থনে মুশফিক-শান্তদের স্ত্রীরা
- ফিরে যাচ্ছেন সাকিব
- দেশের ফুটবল আবারও সালাউদ্দিনের হাতে
- এভারিস্তো: যে ব্রাজিলিয়ানকে সমান ভালোবাসে রিয়াল-বার্সা
- আইপিএল ২০২০
সূর্য কিরণে পুড়লো রাজস্থান