জলবায়ু পরিবর্তন: বাড়ছে অপরিণত শিশুর জন্ম
জলবায়ু পরিবর্তন: বাড়ছে অপরিণত শিশুর জন্ম
জলবায়ু পরিবর্তন কতটা ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনছে তা পরিষ্কার হচ্ছে নতুন নতুন সব গবেষণায়। সম্প্রতি প্রকাশিত ছয়টি গবেষণায় দেখা গেছে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বাড়ছে অপরিণত বয়সে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা। এছাড়াও সৃষ্টি হচ্ছে আরও নানা জটিলতা।
গবেষণাপত্রগুলো প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা জার্নাল পিডিয়াট্রিক অ্যান্ড পেরিন্যাটাল এপিডিমিয়োলজির বিশেষ সংখ্যায়।
গবেষণায় উঠে এসেছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা উত্তরোত্তর বাড়ায় ক্ষতি হচ্ছে মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণের। উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে অপরিণত নবজাতকের সংখ্যা। সাধারণত মাতৃগর্ভে ৩৮-৪২ সপ্তাহ পর জন্ম নিলে সেটাকে স্বাভাবিক মনে করা হয়। কিন্তু এখন এর আগেই জন্ম নিচ্ছে অনেক শিশু।
এছাড়া জন্মের পর শিশুদের ওজন বাড়ছে অবাঞ্ছিতভাবে। এর ফলে প্রথম শৈশবেই অনাকাঙ্ক্ষিত স্থূলত্বের শিকার হচ্ছে শিশুরা। বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের শিকার হয়ে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনাও উত্তরোত্তর বাড়ছে।
গবেষণাপত্রগুলোর কয়েকটি জানিয়েছে, উষ্ণায়ন ও দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশ্বজুড়ে দাবানলের ঘটনা ও এর তীব্রতা বেড়েছে। এর ফলে যে ক্ষতিকারক ধোঁয়ার সৃষ্টি হচ্ছে তা নবজাতকের নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার জন্ম দিচ্ছে। এর বোঝা বেশি বয়স পর্যন্ত বয়ে যেতে হচ্ছে।
পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের জন্য যে মাত্রাধিক বায়ুদূষণ হচ্ছে তার জেরে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। যুক্তরাষ্ট্র, ডেনমার্ক, ইসরায়েল, অস্ট্রেলিয়াসহ পুরো বিশ্বে গবেষণা চালিয়ে লেখা হয়েছে এসব গবেষণাপত্র।
উষ্ণায়নের সঙ্গে নবজাতকের ওজন বৃদ্ধির বিপজ্জনক প্রবণতা ধরা পড়েছে কয়েকটি গবেষণায়। ইসরায়েলে ২ লক্ষ শিশুর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, উষ্ণায়নের জন্য জন্মের এক বছরের মধ্যেই অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধির শিকার হচ্ছে শিশুরা। সেই ওজন বৃদ্ধি পরে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে অন্তত ৫ থেকে ১০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে। এর ফলে বিশ্বে শিশুদের অস্বাভাবিক স্থূলত্ব মহামারির আকার নিয়েছে। এই মূহূর্তে বিশ্বের অন্তত ১৮ শতাংশ শিশু অস্বাভাবিক ওজনের শিকার। দাবানলের ধোঁয়া অন্তঃসত্ত্বা ও নবজাতকের কতটা ক্ষতি করছে সেই ছবিও স্পষ্ট হয়েছে কয়েকটি গবেষণাপত্রে। দেখা গেছে, দাবানলের ধোঁয়া সন্তান ধারণের সামান্য সময় আগে কোনো মহিলার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার আশঙ্কা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ফলে সন্তানের জন্মের পর মায়েরা যেমন দীর্ঘমেয়াদি নানা ধরনের রোগের শিকার হচ্ছেন, তেমন জন্মের পর থেকেই নবজাতকরাও নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার শিকার হচ্ছে। অপরিণত শিশুর জন্মের সংখ্যা বাড়ছে। গ্যাস্ট্রোস্কাইসিস নামে একটি জটিল রোগের শিকার হচ্ছে নবজাতকরা। যে রোগে নবজাতকের অন্ত্র বা অন্যান্য অঙ্গ প্রসারিত হয়ে ত্বকে ছিদ্র তৈরি করে বেরিয়ে আসে শরীরের বাইরে।
গবেষণাগুলোর কয়েকটি জানিয়েছে, দাবানলের ধোঁয়ার জন্য মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণের এই ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ ২৮ শতাংশ বেড়ে গেছে। সেটা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম তিন মাসেই। উষ্ণায়ন, বায়ুদূষণ ও অত্যধিক তাপপ্রবাহের ঘটনা অপরিণত শিশুর জন্মহারও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- নর্ড স্ট্রিম ২ কী? কেন এটি নিয়ে এত বিতর্ক? পর্ব ১
- বিশেষ সাক্ষাৎকার
`চিকিৎসা সম্ভব, সমাজে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গ বলে কেউ থাকবে না` - চিড়িয়াখানায় অজগরের খাঁচায় জীবিত খরগোশ গুনছিলো মৃত্যুর ক্ষণ
- মগবাজারে বিস্ফোরণে অপরাজেয় বাংলার সম্পাদক-নির্বাহী সম্পাদক আহত
- যশোরে মিঠা পানিতে নোনা ট্যাংরার বাণিজ্যিক চাষ
- ১৪১ বছরের পুরনো পাগলা গারদে পাগল হওয়ার দশা!
- পাহাড়ি জঙ্গলে এলাচের বন, সবুজ গুটিতে স্বপ্ন ভাসে ওমর শরীফের
- করোনায় দৃশ্যমান স্বেচ্ছাসেবার শক্তি
- স্বচ্ছতা, বিশ্বস্ততা সোনালী লাইফকে পৌঁছে দিয়েছে নতুন উচ্চতায়: রাশেদ আমান
- মেয়েটি দেখতে ভীষণ সুন্দর ও মেধাবী, তবে ভারতীয়
কৈশোরেই ব্রিটেনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক বাঙালি নারীর গল্প