যশোরে মিঠা পানিতে নোনা ট্যাংরার বাণিজ্যিক চাষ
যশোরে মিঠা পানিতে নোনা ট্যাংরার বাণিজ্যিক চাষ
যশোরে মিঠা পানিতে নোনা পানির দেশী ট্যাংরা মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত বরেণ্য মৎস্যচাষি আলহাজ্ব ফিরোজ খান। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে হ্যাচারিতে এ পোনা উৎপাদনের পর এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে পুকুর ও ঘেরে।
জানা যায়, ফিরোজ খান ২০১৯ সালে তার হ্যাচারিতে নোনা ট্যাংরা দেশী মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও উৎপাদনের ট্রায়াল শুরু করেন। দুই বছর পর এই দেশী মাছ চাষে সফলতা পান তিনি। চলতি বছর তিনি দেড় কোটি পোনা উৎপাদন করেছেন। এই পোনা নিয়ে পুকুর ও ঘেরে চাষ করছেন অনেক মৎস্যচাষী।
ফিরোজ খান বলেন, একক চাষে পুকুরে বিঘা প্রতি ৬০ হাজার ও মিশ্র চাষে বিঘা প্রতি ৪০ হাজার পোনা চাষ করা যায়। ফিস ফিড দিয়ে মাত্র চার মাস পরই এই মাছ বাজারজাত করা যায়। গড়ে ২৫টিতে কেজি অনুপাতে মণপ্রতি ১২-১৫ হাজার টাকা বাজারমূল্য পাওয়া যায়। খুচরা বাজারে যার মূল্য দাঁড়ায় ৪০০-৫০০ টাকা কেজি। মৃত্যুর হার কম হওয়ায় মাছ চাষে সহজে সফলতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের বিপুল আমিষের চাহিদার একটি বড় অংশও পূরণ করা সম্ভব।
নোনা পানির ট্যাংরা চাষের জন্য ফিরোজ খানের কাছ থেকে চার লাখ পোনা সংগ্রহ করেছেন যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল। তিনি জানান, প্রথমে সাত বিঘা পুকুরে এই পোনা ছাড়বেন। কাঙ্ক্ষিত ফলাফল মিললে ১৫০ বিঘার জলাশয়ে এই মাছ ছাড়ার টার্গেট রয়েছে তার।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, উপকূলীয় অঞ্চলের মাছের মধ্যে নোনা ট্যাংরা অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক সময় উপকূলীয় প্রাকৃতিক জলাশয়ে এই মাছ প্রচুর পাওয়া গেলেও নির্বিচারে আহরণ ও পরিবেশগত পরিবর্তনের কারণে এর প্রাকৃতিক প্রাপ্যতা হ্রাস পাচ্ছে। এতে মাছটির দাম বেড়ে গেছে।
যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন ঘেরে উৎপাদিত ট্যাংরা মাছ একেকটির ওজন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত হচ্ছে। শ্যামনগর সোনার মোড়স্থ আড়তে এমন ব্যক্তি ঘেরে উৎপাদিত ট্যাংরা মাছ টন টন প্রত্যহ আসছে। এখানকার স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি এসব ট্যাংরা বাইরে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে বাজারের ব্যবসায়িরা জানান। নোনা পানির ট্যাংরা সাইজে যেমন বড় হয় তেমনি সু-স্বাদু। এ কারনে এই মাছটি ভোক্তার কাছে খুবই জনপ্রিয়।
মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের খুলনার পাইকগাছা এলাকার লোনাপানি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র প্রধান ড. মো. লতিফুল ইসলাম জানান, ২০১০ সালের দিকে এই কেন্দ্র নোনা ট্যাংরা মাছের ব্রিড প্রতিপালন, কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কলাকৌশল উদ্ভাবনে সফলতা অর্জন করে। এই গবেষণায় জাতীয় পুরস্কার অর্জিত হয়েছে।
যশোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে নোনা ট্যাংরা মাছের পোনা উৎপাদন খুবই ভালো একটি পদক্ষেপ। একই ভাবে দেশী প্রজাতির পাবদা ও গুলশা মাছের পোনা উৎপাদন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- নর্ড স্ট্রিম ২ কী? কেন এটি নিয়ে এত বিতর্ক? পর্ব ১
- বিশেষ সাক্ষাৎকার
`চিকিৎসা সম্ভব, সমাজে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গ বলে কেউ থাকবে না` - চিড়িয়াখানায় অজগরের খাঁচায় জীবিত খরগোশ গুনছিলো মৃত্যুর ক্ষণ
- মগবাজারে বিস্ফোরণে অপরাজেয় বাংলার সম্পাদক-নির্বাহী সম্পাদক আহত
- যশোরে মিঠা পানিতে নোনা ট্যাংরার বাণিজ্যিক চাষ
- ১৪১ বছরের পুরনো পাগলা গারদে পাগল হওয়ার দশা!
- পাহাড়ি জঙ্গলে এলাচের বন, সবুজ গুটিতে স্বপ্ন ভাসে ওমর শরীফের
- করোনায় দৃশ্যমান স্বেচ্ছাসেবার শক্তি
- মেয়েটি দেখতে ভীষণ সুন্দর ও মেধাবী, তবে ভারতীয়
কৈশোরেই ব্রিটেনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক বাঙালি নারীর গল্প - স্বচ্ছতা, বিশ্বস্ততা সোনালী লাইফকে পৌঁছে দিয়েছে নতুন উচ্চতায়: রাশেদ আমান