শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪ || ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কপ২৬ জলবায়ু চুক্তি: বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

১৫:২৮, ১৪ নভেম্বর ২০২১

৪৮৯

কপ২৬ জলবায়ু চুক্তি: বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

দুই সপ্তাহ আলোচনার পর অবশেষে বিশ্বের প্রায় দুইশটি দেশ জলবায়ু প্রতিরোধ বিষয়ে এক চুক্তিতে পৌঁছাতে রাজি হলো। কপ২৬ জলবায়ু চুক্তি সম্পর্কে জাতিসংঘ 'গুরুত্বপূর্ণ ধাপ' এবং 'আপস'; দুটো শব্দই ব্যবহার করেছে। উন্নত দেশগুলোর চোখে গ্লাসগো সম্মেলনের পরিসমাপ্তি সফল, কিন্তু জলবায়ু-সহিংসতার স্বীকার দেশগুলো এবং বৈশ্বিক পরিবেশবাদীরা এটিকে বলছে 'পৃথিবী ও এর মানুষদের সাথে বেইমানি'। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা-এ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছে এক প্রতিবেদনে।

গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তি একদিকে কিছুটা প্রশংসা পেয়েছে, কারণ এটি নিদেনপক্ষে পৃথিবীর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখার ব্যাপারে শর্ত রেখেছে, অন্যদিকে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন কেননা কয়লাভিত্তিক পরিবেশদূষক জ্বালানি ব্যবহারে এই চুক্তির ভাষা ক্রমশ মিহি হয়েছে।

কয়লাচালিত ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার প্রসঙ্গে যেখানে প্রাথমিক খসড়ায় এগুলোর ব্যবহার বন্ধ করার কথা বলা হয়েছিল, সেখানে চূড়ান্ত চুক্তিতে কেবল এগুলোর ব্যবহার ধীরে ধীরে কমানোর ইঙ্গিত করা হয়েছে। বিশ্বের যেসব দেশ জলবায়ু-সহিংতার সবচেয়ে বেশি শিকার, সেসব দেশকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের কোনো প্রতিশ্রুতিও উল্লেখ নেই এখানে। বরং, ভবিষ্যতে এ নিয়ে আরও 'আলোচনা' হবে বলে কথা দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলছেন, গ্লাসগো চুক্তির চূড়ান্ত ভাষা আপসমূলক। তার মতে যেখানে এখন 'গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত' বলা হয়েছে সেখানে আদতে 'জরুরিভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার' সময় এসেছে। ওদিকে জলবায়ুবিষয়ক আমেরিকার দূত জন কেরি বলেছেন, ভালো আপসপ্রক্রিয়ায় সবাই কিছু না কিছু অসন্তুষ্ট থাকেন।

উন্নত দেশগুলো, জীবাশ্ম জ্বালানির ভাণ্ডার দেশগুলো স্বভাবতই এই চুক্তি নিয়ে বাড়বাড়ন্ত দেখাবে না। চীনের প্রতিনিধি জাও ইংমিন মনে করেন, জলবায়ু বিষয়ক সমস্যা সমাধানে আমরা এখন আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছি। তার কাছে সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে এ সমস্যা সমাধানে একটি 'রুলবুক' তৈরি করতে পারাটা। বরিস জনসনও আশাবাদী, গ্লাসগোর সম্মেলনের ফলাফলকে তিনি 'ব্রেকথ্রু' হিসেবেই দেখছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও জলবায়ু চুক্তির ফলাফলে সন্তুষ্ট। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরবও জানাল, তারা 'খুশি' জলবায়ু চুক্তি নিয়ে।

ছোট ছোট দেশগুলো, দ্বীপরাষ্ট্রসমূহ, অনুন্নত দেশ যারা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝাপটা সরাসরি টের পাচ্ছেন, তাদের কাছে এ চুক্তি স্বভাবতই অসন্তোষজনক। মালদ্বীপের পরিবেশমন্ত্রী'র কথায় পুরো গ্লাসগো চুক্তির সারমর্মই যেন ফুটে উঠেছে। 'অন্য দেশগুলোর কাছে যা ভারসাম্যসূলক ও ব্যবহারিক তা-তে আমাদের কোনো লাভ হবেনা। এভাবে এগোলে আমরা সময়মতো নিজেদের রক্ষা করতে পারব না', বলেন দেশটির পরিবেশমন্ত্রী অমিনাথ শনা।

ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর সালিমুল হক কোনো রাখঢাক না রেখেই বলে দিয়েছেন এ সম্মেলন ব্যর্থ। তার মতে অনুন্নত দেশগুলো এ সম্মেলনে যা পেয়েছে তা 'সম্পূর্ণ হতাশাজনক' ও 'অপ্রীতিকর'।

গ্রেটা থুনবার্গ-এর মতে এ সম্মেলনের অর্জন অর্থহীন বাগাড়ম্বর ছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু তিনি অঙ্গীকার করেন, 'আমরা হাল ছেড়ে দেব না।'

আসাদ রেহমান বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূরীকণে কাজ করা 'ওয়ার অন ওয়ান্ট'-এর সাথে যুক্ত আছেন। তার ভাষায়, এই সম্মেলনে 'পৃথিবী আর পৃথিবীবাসীর প্রতি একধরনের বেইমানি'। তিনি বলেন, যারা আজ এ চুক্তির ফলাফলকে উদযাপন করছে তারা সবাই তেল, গ্যাস কোম্পানিগুলোর লবিয়িস্ট। এদের কারোরই ইচ্ছা নেই জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)

আরও পড়ুন

Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
বিশেষ সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত