মশা মারতে দাগানো হবে মশা
মশা মারতে দাগানো হবে মশা
মশা মারতে কামান দাগার কথা তো হরহামেশা ব্যবহার হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় এবার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাকে বলা যেতে পারে মশা মারতে মশা দাগা। যাকে আবার ব্যঙ্গ করে বলা হচ্ছে ‘জুরাসিক পার্ক এক্সপেরিমেন্ট’।
ফ্লোরিডায় অ্যাডিস মশার প্রকোপ থাকে সবসময়। নাগরিকরা এর বিপক্ষে একরকম অসহায়ই বলা চলে। প্রতিবছর অনেকেই ডেঙ্গুতে মারা যান। কিংবা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এছাড়া গৃহপালিত প্রাণির মধ্যেও মরণঘাতি রোগ ছড়িয়ে পড়ে। আর এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিতেই রাজ্যটিতে ছাড়া হবে ৭৫ কোটি পুরুষ মশা!
আর এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে ব্রিটিশ বায়োটেক কোম্পানি ‘অক্সিটেক’। তার জন্য প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেছে জেনেটিকালি মোডিফায়েড (জিএম) বা জিন পরিবর্তিত মশা। যেগুলো আগামী দুই বছর পর্যায়ক্রমে কমিউনিটিগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া হবে। চলতি সপ্তাহে মোট ছয়টি স্থানে প্রথমবারের মতো ছাড়া হবে কয়েক হাজার মশা।
শুধুমাত্র নারী মশাই মানুষকে কামড় দেয় এবং রোগ সংক্রমিত হয়। কেননা ডিম উৎপাদনের জন্য তাদের রক্তের প্রয়োজন হয়। আর অক্সিটেক তৈরি পুরুষ মশার জিনগুলিতে সংশোধন করতে এমন প্রোটিন দেয়া হয়েছে যা দংশনের বয়সে যাওয়ার আগেই তার বংশধরদের হত্যা করবে। শুধুমাত্র পুরুষ মশা বেঁচে থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন নারী অ্যাডিস মশা মরে গেলে পুরুষ মশাগুলো বিদ্যমান অন্যান্য মশার সাথে বংশবৃদ্ধি করবে এবং এডিস মশা থেকে সৃষ্ট সমস্যা থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।
যদিও প্রকল্পটি মার্কিন পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে তবে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে অনেকের। ফ্লোরিডা কিস অঞ্চলের পরিবেশগত জোটের সদস্য ব্যারি ওয়ারি বলেছেন, আমরা মানবিক পরীক্ষায় জেনেটিকালি মোডিফাইড কোন কিছুর ব্যবহারে সম্মত নই।
বছরের শুরুর দিকে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী ম্যুরে নেলসন সরকারি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয়ে জানায়, এই ধরনের মশা ছড়িয়ে দিলে কেমন প্রভাব পড়বে তা এখনও সম্পূর্ণ জানা যায়নি। প্রকল্পের নিন্দা করে ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ নামক গ্রুপ জানিয়েছে, জিএম মশা ছেড়ে দিলে তা ফ্লোরিডিয়ানদের এবং পরিবেশের ক্ষতি করবে। এছাড়া বিপন্ন প্রজাতির প্রাণিরা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
তবে অক্সিটেক থেকে বলা হচ্ছে, আমার এর আগেও কয়েক বছরে বিলিয়ন মশা ছড়িয়েছি। পরিবেশ বা মানুষ ঝুঁকিতে পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এর আগেও অ্যাডিস মশা মারতে তা সফল হয়েছে। কিন্ত তখন মৌমাছি বা প্রজাপতির মতো উপকারী পোকামাকড়ের কোন ক্ষতি করেনি।
এর আগে ব্রাজিলের শহর ইন্দিয়াতুবাতে অনুরূপ প্রকল্প পরিচালনা করা হয়। যেখানে মাত্র ১৩ সপ্তাহে ৯৫ শতাংশ অ্যাডিস মশা দমন করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বিড়াল ভয়ংকর!
- আপনি কি একজন এমবিভার্ট?
- মাটি খাওয়া মানুষ
- বিষাক্ত পাতাবাহার গাছ
- বঙ্গবন্ধুর যেসব অনন্য উক্তি জাগিয়ে তোলে প্রাণশক্তি
- নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
- বিশ্বব্যাপী গাছে গাছে জুতা ঝুলানো হয় কেন?
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রিকদের শেষ চিহ্ন [ভিডিও স্টোরি]
- টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী!
- পটকা মাছ কেন বিষাক্ত?