তেল আছে কি ষষ্ঠ মহাদেশে?
তেল আছে কি ষষ্ঠ মহাদেশে?
আমাদের এই পৃথিবীর সাতটি মহাদেশের মধ্যে দক্ষিণ মেরুকে বলা হয় ষষ্ট মহাদেশ। আবহাওয়াগত কারণে সেখানে উপনিবেশ বিকাশে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নইলে সম্ভব হলে এবং সুযোগ পেলে যে কোন দেশই সেখানে গিয়ে আপন দেশের পতাকটি উড়িয়ে দিতো। যাই হোক, অভিভাবকহীন মহাদেশটি আপাত:দৃষ্টে বরফাচ্ছাদিত মনে হলেও ভূতাত্তিক তথ্য ও আবিষ্কার নানান ঐশ্বর্যের সন্ধান দিয়েছে। বলা যায় না, বর্তমান জ্বালানির আকালের দিনে হয়তো এখানে ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ডরাশ বা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য তেলের ফিভারের মতো আরেকটা ঘটনা ঘটতেও পারে।
মহাদেশটি নানারকম খনিজ সম্পদ যেমন, লোহার খনি, নন ফেরাস ধাতু, কয়লা, স্বর্ণ এমনকি হীরক খনিতে সমৃদ্ধ। এতো কিছু যদি থেকেই থাকে, তবে তেলের খনি থাকাটি কেন অসম্ভব নয়?
তেল হলো হাউড্রোকার্বন। পৃথিবীতে এই হাড্রোকার্বন গঠন ও তা থেকে ফসিল জ্বালানি তৈরি করার ক্ষেত্রে জমাট বাঁধা মাটি, বরফের টুপি এবং আগ্নেয়গিরির ক্রিয়া কর্মের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ইউরেশিয়ার উত্তরাঞ্চলের হাইড্রোকার্বনের বিরাট সঞ্চয় হয়েছে ঐসব গুলোর মিলিত কর্মকান্ডের দরূন। একই রকমের ক্রিয়া কর্ম দক্ষিণ মেরুতেও। তাহলে কি দক্ষিণ মেরুতে তেলের ভান্ডার গড়ে তুলতে পারে না? দক্ষিণ মেরুতে তেলের ভান্ডার রয়েছে কিনা হলফ করে বলা যাচ্ছে না এমুহূর্তে। তবে ভৌগোলিক কারণে মনে হচ্ছে- তেল রয়েছে।
কুমেরুতে আগ্নেয়গিরির একটা শক্তিশালী বেল্ট আবিষ্কার হয়েছে। কুমেরুর কয়লা খনিতে ভূ কম্পনের বিরাট প্রভাব দেখে বলা হচ্ছে যে, এই অঞ্চলে হাইড্রোকার্বন গঠনে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটেছে অনেক বেশি ও দ্রুত। আর এ জন্য দায়ী তাপ ও কম্পন। কারণ, এখানে আগ্নেয়গিরির ভিতরের তাপ ও ভূমিকম্পন- দারুণভাবে সহায়ক হয়েছে। এমন ভাবার কারণ হচ্ছে, কুমেরু এক সময় ছিল সুজলা সুফলা, শস্য শ্যামলা উষ্ণ মহাদেশ। তাই হাইড্রোকার্বন গঠন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।
তারপর এখন থেকে প্রায় পঁচিশ মিলিয়ন বছর আগে কুমেরু শক্ত কঠিন বরফের আবরণে ঢাকা পড়লো। বরফ আরা পুরু হলে, ভিতরের তাপ বের হয়ে আসলো কিছুটা বরফ গলিয়ে। কিন্তু বরফের চাঁই রয়ে গেলো ঠিকই। ফারকোটের মতো জাপটে রাখলো মহাদেশটি। বরফ প্রচন্ড শক্তিতে নীচের পানিকে চাপ দিতে লাগলো। চাপ সহ্য করতে না পেরে নীচের পানি মাটি ও হাইড্রোকার্বন সহ চলে এলো মহাদেশের পাড় বরাবর। তাই আন্টার্কটিকায় তেল সন্ধান করতে গেলে মহাদেশেটির উপকুল এলাকাতেই খোঁজ করতে হবে প্রথমে। যাই হোক, সময়ে বোঝা যাবে সবকিছু।
শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বিড়াল ভয়ংকর!
- আপনি কি একজন এমবিভার্ট?
- মাটি খাওয়া মানুষ
- বিষাক্ত পাতাবাহার গাছ
- বঙ্গবন্ধুর যেসব অনন্য উক্তি জাগিয়ে তোলে প্রাণশক্তি
- নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
- বিশ্বব্যাপী গাছে গাছে জুতা ঝুলানো হয় কেন?
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রিকদের শেষ চিহ্ন [ভিডিও স্টোরি]
- টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী!
- পটকা মাছ কেন বিষাক্ত?