সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রহস্যের আধার গ্যালাক্সি

শেখ আনোয়ার

১৮:১০, ৮ জানুয়ারি ২০২২

আপডেট: ১৮:১৮, ৮ জানুয়ারি ২০২২

৮৭৩

রহস্যের আধার গ্যালাক্সি

গ্যালাক্সি হচ্ছে অসংখ্য নক্ষত্র এবং নীহারিকার এক সুবিপুল সমাহার। মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির আনুমানিক সংখ্যা সহস্রাধিক। গ্যালাক্সিরও রয়েছে বিভিন্ন রকম আকৃতি। উপবৃত্তাকার, কুন্ডলীকৃত, দ্বিমাত্রিক ইত্যাদি। ক্ষুদ্র বামনাকৃতির তারা সমষ্টি থেকে শুরু করে দানবাকৃতির বিশাল ছায়াপথও রয়েছে। এদের জন্মও খুব সম্ভবত একশো কোটি শতাব্দী আগে। 

ধারণা করা হয় প্রথমে পৃথক পৃথক ছায়াপথ সৃষ্টি হয়ে তারপর একত্র হয়ে স্তবক তৈরি করেছে। গ্যালাক্সির অপর নামই একত্র হয়ে হচ্ছে ছায়াপথ। নিকটবর্তী গ্যালাক্সিসমূহ আমাদের এই মহাবিশ্বের খুব নিকটে কিছু ছায়াপথ রয়েছে যেগুলো হলো ১. অ্যান্ড্রোমিডা, ২. আকাশগঙ্গা, ৩. ট্রায়াংগুলাম।

আসলে গ্যালাক্সি বলতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা ডিম্বাকার অবয়ব যার মধ্যভাগ স্ফীত এবং বাকি অংশ চাকতির মতো। এই ডিম্বের ব্যাস মোটামুটি ১ লক্ষ আলোকবর্ষ কিলোমিটার এবং মাত্র ১ হাজার আলোকবর্ষ (কিলোমিটার পুরু। সাধারণত খুব ছোট ছায়াপথের ব্যাস হয় প্রায় ৫০০০ আলোকবর্ষ এবং দানবাকৃতির রেডিও ছায়াপথের ব্যাস হয় প্রায় ৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। গ্যালাক্সিদের দৃশ্যমান ভরের সাধারণ বিস্তার হচ্ছে ১০০,০০০ থেকে ১,০০০,০০০,০০০,০০০ সূর্যভর। একটি প্রমাণ আকারের বিশাল কুন্ডলী ছায়াপথের ভর হয় প্রায় ৫০০,০০০,০০০,০০০ সূর্যভর। দীপ্তি ছায়াপথদের মধ্যে সবচেয়ে কম দীপ্তির ছায়াপথ হচ্ছে বামন ছায়াপথ। যার দীপ্তি হচ্ছে ১০০,০০০ সূর্যের সমান। সবচেয়ে উজ্জ্বল দীপ্তির ছায়াপথদের কেন্দ্রে থাকে কোয়েশার। যাদের দীপ্তি হচ্ছে প্রায় ২,০০০,০০০,০০০,০০০ সূর্যের সমান।

লক্ষ কোটি তারার সমন্বয়ে ছায়াপথ গঠিত। সমস্ত তারাকে টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। কারণ এরা বহুদূরে অবস্থিত। সাধারণত গ্যালাক্সিতে তিন ধরনের তারা থাকে। ১. হাইড্রোজেন দহনকারী, নবীন, প্রধান ধারার নীল তারা। ২. হিলিয়াম দহনকারী, লাল অন্তিম দশায় উপস্থিত দানব তারা। ৩. বিস্ফোরণশীল এবং বিষম তারা (যেমন নোভা বা সুপারনোভা)।

যদিও সব ছায়াপথের ইতিহাস অভিন্ন নয়, তথাপি বয়োবৃদ্ধ তারাদের বয়স পরিমাপ কওে বিজ্ঞানীরা দেখেন যে, প্রায় সব ছায়াপথেরই বয়স প্রায় একই। আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বয়স পরিমাপ করে প্রায় ১০ বিলিয়ন বছর পাওয়া যায়। অন্ধকার রাতে, মেঘমুক্ত আকাশে দৃশ্যমান অনন্ত রহস্যময় ছায়াপথ মিল্কিওয়ে। খালি চোখে এটি সৌন্দর্য ও অপার রহস্যের আধার। এটাই ছায়াপথের নন্দনতত্ত্ব। 

এই সুবিশাল ছায়াপথে আমাদের বাস। আমাদের সূর্য তার সৌর-পরিবার এবং অসংখ্য তারা, নীহারিকা নিয়ে এই বিশাল ছায়াপথ ছুটে চলেছে অসীম মহাশূন্যের মধ্য দিয়ে। দূর-দূরান্তের নক্ষত্রের সামান্য, মৃদু মিটিমিটি আলো যে কত রহস্যের আধার তা এখন মানুষ উপলব্ধি করছে। নক্ষত্রের একবিন্দু আলো, মানুষের মনে অসীম কৌত‚হলের সৃষ্টি করে। এভাবেই মানুষ শত বিষণœতা, শত হতাশার মাঝেও জেগে থাকে, জেগে থাকে তার চেতনা, মনীষা, জ্ঞান, গরিমা।

শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক। এম.ফিল স্কলার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank