সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

আমেরিকার ভুতুড়ে বন্দুক সমস্যা

সাতরং ডেস্ক

১৫:৫৭, ১৫ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৫:৫৮, ১৫ নভেম্বর ২০২১

৫২৫

আমেরিকার ভুতুড়ে বন্দুক সমস্যা

ঘোস্ট গান
ঘোস্ট গান

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ নাগরিকগণ চাইলে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য বন্দুক ব্যবহার করতে পারেন। দেশটির অনেক রাজ্যেই অস্ত্র কেনার জন্য লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়না। যে কেউ চাইলে নিত্যদিনের সদাইয়ের মতো যেকোনো অস্ত্রের দোকানে গিয়ে একটি বন্দুক কিনে ফেলতে পারেন। পিস্তল, রিভলবারের মতো হ্যান্ডগান যেমন এখানে কেনা যায়, তেমনি অ্যাসল্ট রাইফেল, শটগানও কেনা সহজ যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির সংবিধানের 'সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট' নাগরিকদের নিরাপত্তা, শিকার, ও আনন্দের জন্য অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।

কিন্তু তা-ই বলে ব্যাপারটা যে এতটাই সাধারণ তা নয়। অনেক রাজ্যে অস্ত্র বহনের জন্য লাইসেন্স নিতে হয়। কোথাও কোথাও অস্ত্র ক্রয়ের পর স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে নিবন্ধন করিয়ে নিতে হয়। তবে কারা একেবারেই অস্ত্র বহন করতে পারবে না সে ব্যাপারে সব রাজ্যে একই নিয়ম। এ ধরণের ক্যাটাগরিতে পড়ে অপরাধী, পলাতক ব্যক্তি, ডমেস্টিক অ্যাবিউজার, নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি, মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি, অমার্কিনী ইত্যাদি।

অস্ত্রের লাইসেন্স, প্রদর্শন, বহন ইত্যাদি নিয়ে এক রাজ্যে এক রকম নিয়ম থাকলেও এই অস্ত্রগুলোর কিন্তু সরকারি হিসাব থাকে। অর্থাৎ, এগুলো সব বৈধ অস্ত্র এবং প্রতিটি অস্ত্রের নিজস্ব সিরিয়াল নাম্বার রয়েছে। তাই এগুলোকে ট্রেস করা (খুঁজে বের করা) সম্ভব। কিন্তু এ প্রথম যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র ব্যবহার প্রসঙ্গে নতুন এক সমস্যার মুখে পড়েছে। এ সমস্যাটি হলো 'ঘোস্ট গান' (Ghost guns)-এর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং তার ফলে আগ্নেয়াস্ত্রসংশ্লিষ্ট সহিংসতার প্রকোপ বৃদ্ধি।

ঘোস্ট গান নামেই বোঝা যায় এটি কী হতে পারে। ঘোস্ট গান হচ্ছে এমন সব বন্দুক যেগুলোর কোনো সিরিয়াল নাম্বার নেই, যেগুলোকে ট্রেস করা সম্ভব নয়। আরেকটি বিশেষ দিক হলো, এ বন্দুকগুলো কোনো কারখানায় তৈরি হয় না, বরং ব্যক্তি নিজেই এগুলো তৈরি করেন।

ঘোস্ট গান গুলো আদতে খুচরা খুচরা অংশে বিক্রি হয়। অর্থাৎ যিনি ঘোস্ট গান কিনবেন তিনি আলাদা আলাদা করে বন্দুকের বিভিন্ন অংশ যেমন মাজল, স্টক, ট্রিগার, ম্যাগাজিন, স্কোপ ইত্যাদি অনলাইনে ক্রয় করেন। এরপর সেগুলো একসাথে জুড়ে দিয়ে নিজের মতো করে বন্দুকটি ঘরে বসেই বানিয়ে ফেলেন তিনি।

যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সাধারণ একটি বিষয়, তাই অনেক মানুষই বন্দুকের কারিগরি দিক সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। ফলে একটি বন্দুক খুলে সেটি আবার ঠিকঠাক করা অনেকের পক্ষে খুবই সাধারণ একটি কাজ।

ঘোস্ট গানগুলোর আরেকটি বিশেষত্ব হলো এগুলোর পার্টসগুলো থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি করা যায়। আজকাল যেহেতু থ্রিডি প্রিন্টার ক্রমশ সহজলভ্য হচ্ছে, তাই ভবিষ্যতে কাউকে আর অনলাইনে ঘোস্ট গানের পার্টস অর্ডার করতে হবে না। নিজে ঘরে বসেই থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার করে নিজের ইচ্ছেমতো আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করতে পারবেন। আর এটাই ঘোস্ট গানের সমস্যাকে আরও বেশি তীব্র করে তুলতে পারে।

ঘোস্ট গানের ফলে এখন অপরাধীরাও অস্ত্র বহন করতে পারছে। ফলে দেশটিতে বন্দুক হামলার সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে। যদিও বাইডেন প্রশাসন নতুন একটি আইন প্রণয়ন করতে চাচ্ছেন যেখানে বন্দুকের আলাদা অংশগুলোতেও সিরিয়াল নাম্বার থাকতে হবে। কিন্তু এ আইন কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আর থ্রিডি প্রিন্টিং ব্যবস্থা তো আছেই।

দ্য নিই ইয়র্ক টাইমস অবলম্বনে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank