আত্মহত্যার জঙ্গল!
আত্মহত্যার জঙ্গল!
অকিগাহারা জঙ্গল |
জাপানের ফুজি পর্বতমালার পাদদেশে লাভার পাথরে মসে ঢাকা জমিনের ওপর সাইপ্রেস ও পাইন গাছে ভর্তি দেড় মাইল লম্বা এক জঙ্গল। জাপানি ভাষায় জঙ্গলটির নাম অকিগাহারা। এই বনটি পৃথিবীতে খুব পরিচিত, তবে তা এর সৌন্দর্যের জন্য নয় বরং, জাপানের অকিগাহারা বন ‘জনপ্রিয়’ আত্মহত্যা করার জন্য। এই জঙ্গলে মানুষজন আত্মহত্যা করার লক্ষ্য নিয়ে আসে।
‘আত্মহত্যার জঙ্গল’ নামে পরিচিত এই বন সাক্ষী অনেক মৃত্যুর। জাপানে আত্মহত্যার হার এমনিতে আনেক বেশি। ২০১৫ সালে দেশটিতে ২৪০০০ মানুষ আত্মহত্যায় মৃত্যুবরণ করেন, তার মধ্যে অকিগাহারার ভেতরে মারা যান ১০০ জন। এই জঙ্গলের কুখ্যাতি কয়েক দশকের। ১৯৬০ সালে প্রকাশিত জাপানি লেখক সেইচো মাতসুমোতো’র উপন্যাস ‘টাওয়ার অভ ওয়েভ’-এ নায়িকাকে দেখা যায় এই জঙ্গলে এসে আত্মহত্যা করতে। ২০১৬ সালের জাপানি হরর ফিল্ম ‘দ্য ফরেস্ট’-এ নায়িকা তার হারানো বোনকে খুঁজতে জঙ্গলটিতে যায়।
জঙ্গলটির প্রবেশের মুখে একটি সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘তোমার বাবা-মা যে জীবন তোমাকে দিয়েছে তা খুবই মূল্যবান।’ আরেকটি সাইনবোর্ডের দিকে তাকাল দেখা যায় সেখানে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য সাহায্যের আশা দেওয়া হচ্ছে। জাপানে মানুষ কাজ ও পড়ালেখা নিয়ে যথেষ্ট মানসিক পীড়নে ভোগেন।
তবে আজকাল এ জঙ্গলে মানুষের আত্মহত্যার পরিমাণ আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। এক দশক আগেও যেখানে গড়ে ১০০ জন মানুষ আত্মহত্যা করতেন, সেখানে সে সংখ্যা বর্তমানে ৩০-এ নেমে এসেছে।
ঐতিহাসিকভাবে অকিগাহারা’র সাথে মৃত্যু জড়িয়ে আছে। এক সময় জাপানি ভিক্ষুরা এই জঙ্গলে এসে উপবাস করতেন মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা করে। জাপানি লোককথা অনুযায়ী, এ জঙ্গলে যারা আত্মহত্যা করেছে তাদের প্রেতাত্মারা এখানে ঘুরে বেড়ায়। আর যারা একবার এখানে প্রবেশ করে তারা আর ফিরে আসতে পারে না।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বিড়াল ভয়ংকর!
- আপনি কি একজন এমবিভার্ট?
- মাটি খাওয়া মানুষ
- বিষাক্ত পাতাবাহার গাছ
- বঙ্গবন্ধুর যেসব অনন্য উক্তি জাগিয়ে তোলে প্রাণশক্তি
- নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
- বিশ্বব্যাপী গাছে গাছে জুতা ঝুলানো হয় কেন?
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রিকদের শেষ চিহ্ন [ভিডিও স্টোরি]
- টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী!
- পটকা মাছ কেন বিষাক্ত?