হাডসন নদীতে যাত্রীবাহী বিমানের অবতরণ ও একজন ক্যাপ্টেন সালি
হাডসন নদীতে যাত্রীবাহী বিমানের অবতরণ ও একজন ক্যাপ্টেন সালি
হাডসন নদীতে ফ্লাইট ১৫৪৯ |
২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি তারিখে নিউ ইয়র্ক সিটি'র হাডসন নদীর পাড়ে যারা ছিলেন তারা এক অদ্ভুত ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন। একটি এয়ারবাস এ৩২০ মডেলের যাত্রীবাহী বিমান হাডসন নদীর বুকে অবতরণ করছে। সেদিন এত বড় ঝুঁকি নেওয়ার পরও বিমানটির সব যাত্রী বেঁচে গিয়েছিলন কেবল পাইলটদের দক্ষতার কারণে। এ ঘটনাটি 'মিরাকল অন দ্য হাডসন' নামে বিখ্যাত হয়ে আছে।
ইউএস এয়ারওয়েজ ১৫৪৯ ফ্লাইটটি নিউ ইয়র্ক সিটি'র লা গার্ডিয়া এয়ারপোর্ট থেকে নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লট বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা ছিল। প্লেইনটির দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন চেজলি 'সালি' সলেনবার্গার এবং ফার্স্ট অফিসার জেফরি স্কাইলস। এ দুজনেরই ২০০০০ ঘণ্টার বেশি বিমান চালনার অভিজ্ঞতা ছিল।
টেইক-অফ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু আকাশে ওড়ার পরই একঝাঁক পাখির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষের স্বীকার হয় ১৫০ জন যাত্রী পরিবহন করা বিমানটি। সামনের উইন্ডস্ক্রিনে চিড় ধরে, একটু পরে দুটো ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যায়। তখন সবে বিমানবন্দর থেকে সাড়ে চার মাইল পথ অতিক্রম করেছিল ফ্লাইটটি। আর উচ্চতাও ছিল মাত্র ৩০০০ ফিটের কাছাকাছি।
ইঞ্জিন বন্ধ হলেও পরবর্তী ১৯ সেকেন্ড বিমানটি ওপরের দিকে ওঠে। এরপর ক্যাপ্টেন সালি বিমানের অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিট চালু করেন। এদিকে ফার্স্ট অফিসার স্কাইলস ইঞ্জিনগুলো পুনরায় চালু করার চেষ্টা করেন।
দুর্ঘটনার ২২ সেকেন্ডের মাথায় ক্যাপ্টেন মেডে (Mayday) কলে ঘোষণা করেন, 'ক্যাকটাস ১৫৩৯ (ফ্লাইটটির কল সাইন) পাখির সাথে ধাক্কা খেয়েছে। দুটো ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা লা গার্ডিয়া'র দিকে ফিরে আসছি।'
কিন্তু একটু পরে সালি বুঝতে পারেন, এ অবস্থায় লা গার্ডিয়ায় ফেরত যাওয়া সম্ভব না। এরপর তিনি নিউ জার্সি'র টেটারবরো বিমানবন্দরে অবতরণ করতে চাইলেও তাও অসম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়। এরপরই চরম সিদ্ধান্তটি নিতে হয় পাইলটদ্বয়কে। হাডসন নদীর ওপর অবতরণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না তাদের হাতে।
সেদিন বিকেল ৩.৩১ মিনিটে হাডসনের ওপর ক্র্যাশ ল্যান্ড করে ফ্লাইট ১৫৪৯। বিমানটি ঠিকঠাকভাবে অবতরণ করবে নাকি নদীর বুকে আছড়ে পড়বে তা পুরোপুরি নির্ভর করছিল মূলত ক্যাপ্টেনের দক্ষতার ওপর। সেই অগ্নিপরীক্ষায় পাশ করে যান সালি। বিমানের তেমন কোনো ক্ষতি ছাড়াই হাডসন নদীতে ল্যান্ড করান তিনি। এরপরই আশেপাশে থাকা ফেরি, স্টিমার, স্পিডবোট তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। ঘটনার আধাঘণ্টার মধ্যেই সব যাত্রীকে বিমান থেকে উদ্ধার করা হয়। এই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি তাই মিরাকল হিসেবেই পরিচিতি লাভ করে সবার কাছে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বিড়াল ভয়ংকর!
- আপনি কি একজন এমবিভার্ট?
- মাটি খাওয়া মানুষ
- বিষাক্ত পাতাবাহার গাছ
- বঙ্গবন্ধুর যেসব অনন্য উক্তি জাগিয়ে তোলে প্রাণশক্তি
- নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
- বিশ্বব্যাপী গাছে গাছে জুতা ঝুলানো হয় কেন?
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রিকদের শেষ চিহ্ন [ভিডিও স্টোরি]
- টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী!
- পটকা মাছ কেন বিষাক্ত?