২০৩৬ সালের মধ্যে প্রাসঙ্গিকতা হারাবে জীবাশ্ম জ্বালানি!
২০৩৬ সালের মধ্যে প্রাসঙ্গিকতা হারাবে জীবাশ্ম জ্বালানি!
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে থাকলে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের মোট জীবাশ্ম জ্বালানির অর্ধেকের কোনো আর্থিক মূল্য থাকবে না বলে নতুন একটি গবেষণায় দাবী করা হয়েছে।
এতে করে বিশ্বের দেশগুলোর অবস্থা 'কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ'-এর মতো হতে পারে। যেসব দেশ শূণ্য-কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে দেরি করবে তারা বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে। অন্যদিকে দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছানো দেশগুলো লাভের মুখই দেখবে।
নতুন এ গবেষণাটি 'নেচার অ্যানার্জি' জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে, যদি ভবিষ্যতের সম্ভাব্য চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি তেল ও গ্যাস উত্তোলন করা হয় তবে প্রায় ১১ থেকে ১৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের অপ্রয়োজনীয় জীবাশ্ম জ্বালানি উদ্বৃত্ত থেকে যাবে যার থেকে কোনো অর্থনৈতিক মুনাফা পাবেন না বিনিয়োগকারীরা।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পেলে এগুলো আরও সস্তা হয়ে যাবে। তখন জীবাশ্ম জ্বালানির দামে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। তেল ও কয়লা না পুড়িয়ে ফেলে রাখতে হবে। ফলে এসব জ্বালানি দিয়ে যেসব যন্ত্রপাতি, শিল্পকারখানা চলত সেগুলো দিয়ে আর কিছু উৎপাদন করা যাবে না।
দূরবর্তী ও দুর্গম স্থানে অবস্থিত জ্বালানি উত্তোলন করতে খরচ বেড়ে যাবে। উত্তর সাগরে থাকা তেলে আরোহণ করা এমনিতেও খরুচে, যদি ভবিষ্যতে চাহিদা আরও কমে যায় তাহলে এ খরচ তুলনামূলক আরও বেরে যাবে।
যে সব দেশ ক্রমশ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নির্ভরশীল হয়ে যাবে তারা তাদের জীবাশ্ম জ্বালানির খরচ বাঁচিয়ে তা নতুন জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে পারবে।
গবেষণাটির প্রধান লেখক জ্যঁ ফঁসোয়া মারকিয়ার বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তর পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থাকেই লাভবান করবে। কিন্তু এ পরিবর্তন দক্ষ হাতে সামলাতে হবে, কেননা তা না হলে অনেক অঞ্চল দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থার মুখে পড়তে পারে। বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়।
মারকিয়ার আরও বলেন, 'সবচেয়ে বাজে দৃশ্যপট চিন্তা করতে গেলে, এমন হতে পারে যে মানুষজন জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে করতে একসময় টের পাবে যে বৈশ্বিক চাহিদা কমে গেছে এবং তাদের হাতে যা আছে তা মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। এতে করে ২০০৮ সালের মতো অর্থনৈতিক মন্দাও আবার দেখা দিতে পারে।'
রাশিয়া ও ব্রাজিলের মতো তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো ভবিষ্যতে এরকম ক্ষতির আশঙ্কায় কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করতে পারে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মতো যেসব দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি করে তারা চাইবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে আরও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে। জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদার এই পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক আবহকেও পাল্টে দিতে পারে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বিড়াল ভয়ংকর!
- আপনি কি একজন এমবিভার্ট?
- মাটি খাওয়া মানুষ
- বিষাক্ত পাতাবাহার গাছ
- বঙ্গবন্ধুর যেসব অনন্য উক্তি জাগিয়ে তোলে প্রাণশক্তি
- নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
- বিশ্বব্যাপী গাছে গাছে জুতা ঝুলানো হয় কেন?
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রিকদের শেষ চিহ্ন [ভিডিও স্টোরি]
- টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী!
- পটকা মাছ কেন বিষাক্ত?