বিগফুট: ইয়েতির মার্কিনি তুতোভাই
বিগফুট: ইয়েতির মার্কিনি তুতোভাই
হিমালয়ের সাদা বরফের রাজ্যে ঘুরে বেড়ানো ইয়েতি’র এক জাতভাই হচ্ছে বিগফুট বা সাসকোয়াশ। এই বিগফুটের ‘আবাসস্থল’ উত্তর আমেরিকা মহাদেশ। ক্রিপ্টোজুওলজিতে বিশ্বাস করা অনেক মার্কিনি মনে করে বিশালাকৃতির এই বানরসদৃশ প্রাণীটি এখনো শ্যামচাচার দেশের তেপান্তরের মাঠে ভালোমতো খুঁজলেই পাওয়া যাবে।
ক্রিপ্টোজুওলজি হচ্ছে সেসকল প্রাণী, দানব, কিংবদন্তীতুল্য জন্তুজানোয়ার নিয়ে গবেষণা যেগুলোর অস্তিত্ব এখনো প্রমাণিত হয়নি অথচ যাদের থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই ক্রিপ্টোজুওলজির অংশ হচ্ছে লক নেস মনস্টার, ইয়েতি, চুপাকাবর ইত্যাদি। এগুলোর উৎপত্তিস্থল ভিন্ন ভিন্ন। আর এই কিংবদন্তীগুলো একটি দেশের জন্য গর্বের বিষয়ও। যেমন স্কটল্যান্ডের প্রসঙ্গ উঠলে সবার আগে বানশি বা লক নেস মনস্টারের কথাই মনে ভেসে ওঠে, কারণ এ দুটো কিংবদন্তীর উৎস সেখানে।
বিগফুট সেরকমই আমেরিকার একান্ত নিজস্ব কিংবদন্তী। দুপায়ে হাঁটা গরিলার মতো দেখতে প্রাণীটির সারা দেহ লোমে ঢাকা। উচ্চতাও প্রমাণ সাইজ মানুষের চেয়ে একটু বেশি, ৮-১০ ফুট লম্বা হিসেবে বর্ণনা করা হয় বিগফুটকে।
সেই ১৮৮৪ সালে প্রথমবারের মতো কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভিক্টোরিয়ায় অবস্থিত দ্য ব্রিটিশ কলোনিস্ট পত্রিকায় গরিলার মতো দেখতে একটি প্রাণী’র বিবরণ প্রকাশ করে। কানাডিয়ান এনসাইক্লোপিডিয়া: সাসকোয়াশ বইয়ের লেখক জন গ্রিন ১৯ ও ২০ শতকের মধ্যে প্রায় ১৩৪০টি বিগফুট দর্শনের ঘটনা নথিবদ্ধ করেন। এরপর এ নিয়ে আর উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি। পরবর্তীকালে ১৯৫০-এর দশকের শেষভাগে এসে বিগফুট কিংবদন্তী আবারও মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
১৯৫৮ সালে নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার স্থানীয় পত্রিকা দ্য হামবল্ড টাইমস ব্লাফ ক্রিক-এর পাশে বিশাল পায়ের ছাপ পাওয়ার খবর জানায়। তারা এ প্রাণীটির নাম দেয় বিগফুট। ১৯৫৯ সালে ট্রু ম্যাগাজিন-এ ছাপা হওয়া আরেকটি আর্টিকেলে একই ঘটনা নিয়ে লেখা হলে মানুষের মধ্যে বিগফুট ধরার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়।
আধুনিককালে এসে বিগফুট থাকার প্রমাণও তুলে ধরেন অনেকে। এখন পর্যন্ত দশ হাজার মানুষ বিগফুট দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। পায়ের ছাপ, ছবি, ভিডিও প্রকাশ হয় বিগফুট নিয়ে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত প্রমাণটি হলো একটি ভিডিও। ১৯৬৭ সালে রজার প্যাটারসন ও বব গিমলিন ব্লাফ ক্রিক-এ একটি ভিডিও ধারণ করেন যাতে দেখা যায় এক দশাসই চেহারার কালো, মনুষ্যাকৃতির জন্তু হেঁটে যাচ্ছে। অনেকে ভুয়া হিসেবে রায় দিলেও এখন পর্যন্ত বিগফুটের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হিসেবে এ ভিডিওটিকেই ধরা হয়। তবে আজকের দিনে এত শক্তিশালী ক্যামেরা থাকলেও কেউ আর এখন পর্যন্ত বিগফুটের নতুন কোনো ছবি তোলার সৌভাগ্য লাভ করেনি।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বিড়াল ভয়ংকর!
- আপনি কি একজন এমবিভার্ট?
- মাটি খাওয়া মানুষ
- বিষাক্ত পাতাবাহার গাছ
- বঙ্গবন্ধুর যেসব অনন্য উক্তি জাগিয়ে তোলে প্রাণশক্তি
- নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
- বিশ্বব্যাপী গাছে গাছে জুতা ঝুলানো হয় কেন?
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রিকদের শেষ চিহ্ন [ভিডিও স্টোরি]
- টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী!
- পটকা মাছ কেন বিষাক্ত?