সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বিদেশ ফেরতদের আইসিটি প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট, নতুন সম্ভাবনা

বিশেষ সংবাদদাতা

১৪:৪৬, ৪ অক্টোবর ২০২০

আপডেট: ১৫:১২, ৪ অক্টোবর ২০২০

২৭৮৭

বিদেশ ফেরতদের আইসিটি প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট, নতুন সম্ভাবনা

করোনা মহামারির কারণে বিদেশ থেকে যারা কাজ হারিয়ে দেশে ফিরেছেন, কিংবা দেশে ফিরে কাজ হারিয়েছেন, অথবা যারা দেশে ফিরে আর ফিরতে পারছেন না তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে কোডার্স ট্রাস্ট বাংলাদেশ। তাদের দেয়া হচ্ছে আইসিটি প্রশিক্ষণ। তাতে তারা দক্ষ হয়ে উঠবেন কাজ খুঁজে নিতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে দেশে বসে আবারও আয় করতে পারবেন বিদেশি অর্থ। এমনকি তারা নিজেরাই হতে পারবেন উদ্যোক্তা। দিতে পারবেন অন্যদেরও চাকরি। 

এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা জানিয়েছেন, তারা কোডার্স ট্রাস্টের উদ্যোগে এই কর্মসূচিকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেছেন, এতে খুলে যাবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার। 

বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অংশীদারীত্বে সম্পন্ন হচ্ছে এই কর্মসূচি। রবিবার (৪ অক্টোবর) ওয়েবিনারে সম্পন্ন এই উদ্বোধনী  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, শুরুতে যা সঙ্কট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলো পরে তাতেই সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছি। আজ সে সম্ভাবনা আলোর মুখ দেখছে। সচিব বলেন, আমরা কোডার্স ট্রাস্টকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। 

২০২০ সালের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, দেশের ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বিদেশে অবস্থান করেন তার মধ্যে কিছু সংখ্যক মানুষ প্রতিবছরই দেশে ফেরেন সে হিসাবে সংখ্যাটি বড় নয়, কিন্তু তাতে আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। আমরা মনে করি এদের প্রত্যেকেই কিছু না কিছু যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে দেশে ফিরেছেন, আমরা সেগুলো কাজে লাগাতে চাই। তাদের সেই দক্ষতার স্বীকৃতি দিতে চাই, একই সঙ্গে, তাদের নতুন নতুন দক্ষতা দিতেও রয়েছে উদ্যোগ, আইসিটি তার অন্যতম। 

কর্মসূচির আওতায় কোডার্স ট্রাস্ট ১৪০ জন দেশে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেবে। 

সচিব এই কর্মসূচিকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই কর্মসূচি সফলতা পেলে আরও ব্যাপক পরিসরে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। 

কোডার্স ট্রাস্টের প্রশিক্ষণের ওপর আস্থা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি আশা করি এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি হবে, এবং বিদেশ থেকে যারা ফিরেছেন তারা নতুন করে নিজেদের খুঁজে পাবেন। 

কোডার্স ট্রাস্টের কো-ফাউন্ডার অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। স্বাগত বক্তব্য তিনি বলেন, এই কর্মসূচির পেছনে একটি সেন্টিমেন্ট কাজ করছে। আমি নিজে প্রবাসি বাংলাদেশি, আমেরিকা ছাড়াও বিশ্বের অর্ধশত দেশে গেছি, আমি দেখেছি দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে এই প্রবাসী শ্রমিকদের ভূমিকা ও আন্তরিকতা। তবে কোভিড-১৯ তাদের নতুন করে বিপদের মুখে ফেলেছে, তাদের জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। আজিজ আহমদ বলেন, এই প্রশিক্ষণ আপনাদের জন্য নতুন একটি সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আমি মনে করি। তবে প্রশিক্ষণটি সকলকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে মনযোগ দিয়ে শেষ করার আহ্বান জানান তিনি। 
‘আপনারা সফলতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ করলে শুধু দেশেই না, দেশে থেকে আবার বিদেশের চাকরি নিতে পারবেন, বলেন আজিজ আহমদ। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আবদুল করিম বলেন, একটা সময়ে বলা হতো- নলেজ ইজ পাওয়ার, ইনফরমেশন ইজ পাওয়ার, এখন স্কিল ইজ পাওয়ার। আমি আশা করি বিদেশ ফেরতদের এই প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে আত্ম কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে, এবং তারা আবার আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন। 

কোডার্স ট্রাস্টের প্রশিক্ষণ দক্ষতার সঙ্গে আমরা পরিচিত, আশা করি এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা প্রবাস থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে পারবে, বলেন তিনি। 

সাবেক শিক্ষা ও আইসিটি সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে যারা এসেছেন, তাদের অনেকেই বলেন, আমরা সাধারণ শ্রমের কাজ করেছি, আমরা কি করতে পারবো? যেটা ভুল ধারণা। কোডার্স ট্রাস্ট তার মানসম্মত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আপনাদের দক্ষ করে তুলবে। প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা এই তিনের সমন্বয়ে আপনারা এগিয়ে যেতে পারবেন। আর আপনারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হতে পারবেন। প্রশিক্ষণার্থীদের মনযোগ দিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য তিনিও আহ্বান জানান। 

স্টার্ট আপ বাংলাদেশ এর আইসিটি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক, অতিরিক্ত সচিব মজিবুল হক বলেন, বিদেশ থেকে যারা এসেছেন তাদের কয়েকটি ক্লাস্টারে ভাগ করে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সরকারের একার পক্ষে এই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। একটি উপযুক্ত সময়ে কোডার্স ট্রাস্ট তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, বলেন তিনি।

কোডার্স ট্রাস্টের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল হালিম জানান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৫৭৯৪ জনের তালিকা থেকে ১২৫০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোডার্স ট্রাস্ট। এদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ ও সুবিধা সকলের নেই। এদের মধ্য থেকেই প্রাথমিক ভাবে ১৪০ জনকে নির্বাচন করা হয় যাদের চারটি গ্রুপে ভাগ করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। 

এই প্রশিক্ষণের পর তারা নিজেরা যেমন কাজ পেতে পারবেন, তেমনি নিজেরা কাজ দিতেও পারবেন, বলেন আবদুল হালিম। 

সমাপনী বক্তব্যে আজিজ আহমদ আবারও বলেন, যারা প্রশিক্ষণ নিতে চাইছেন, তাদের কমিটমেন্টই এই কর্মসূচিকে সফলতা দেবে। তিনি বলেন, এটি একটি ছোট্ট প্রশিক্ষণ, কিন্তু এই প্রশিক্ষণই বদলে দিতে পারে অনেক কিছু। 

অনুষ্ঠানে প্রথম ব্যাচের ৩৫ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। তাদের উদ্দেশ্যে আজিজ আহমদ বলেন, আপনাদের সাফল্যেই আমাদের সফলতা। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই শুরু হয় প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ। 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
সাই-টেক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত