দেশে উপজেলা পর্যায়ে ৫০০০০০ ফ্রিল্যান্সার তৈরিতে কোডার্সট্রাস্টের যাত্রা শুরু
দেশে উপজেলা পর্যায়ে ৫০০০০০ ফ্রিল্যান্সার তৈরিতে কোডার্সট্রাস্টের যাত্রা শুরু
বাংলাদেশের শহর-উপশহর হয়ে ইউনিয়ন-গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তির ফ্রিল্যান্সার ছড়িয়ে থাকবে। যারা নিজ নিজ অঞ্চলে থেকেই কাজ করবে এই খাতের আন্তর্জাতিক কর্মবাজারে। আয় করবে বৈদেশিক মুদ্রা। এমনই একটি কর্মসূচি এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে বাংলাদেশে। যা বাস্তবায়িত হচ্ছে পাবলিক-প্রাইভেট কর্মসূচির আওতায়। আর সরকারের সাথে এই প্রকল্পের গর্বিত অংশীদার হয়ে কাজ করছে কোডার্সট্রাস্ট।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তথ্য-প্রযুক্তি কোম্পানিটির বাংলাদেশে রয়েছে ব্যাপক ও বহুমাত্রিক কার্যক্রম। ২০১৩ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে যুব শ্রেণি তথা সকল বয়সের নারী-পুরুষকে আইটি খাতে দক্ষ করে তোলার কাজ করে আসছে। এরই মধ্যে তৈরি করেছে ৬০ হাজারের বেশি আইটি-দক্ষ কর্মশক্তি। যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কর্মবাজারে সাফল্যের সাথে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার এই প্রকল্পের মাধ্যমে গোটা দেশে ৫০০০০০ (পাঁচ লাখ) নতুন ফ্রিল্যান্সার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে কোডার্সট্রাস্ট। সরকারের আইসিটি বিভাগ ও হাইটেক-পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথভাবে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কার্যক্রমের প্রথম ধাপ হিসেবে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ। কোডার্সট্রাস্টের পরিক্ষিত, দক্ষ ও সুপ্রতিষ্ঠিত প্রশিক্ষকরা এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন উপজেলা পর্যায় থেকে আসা প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন । এই প্রশিক্ষকরাই পরে নিজ নিজ এলাকায় প্রশিক্ষণ দেবেন স্থানীয় যুব শ্রেণি তথা যে কোনো বয়সী আগ্রহী নারী পুরুষকে। যারা ধীরে ধীরে আইটি দক্ষতা নিজে নিজেই কাজ খুঁজবেন বিশ্ব কর্মবাজারে।
সেদিন আর দূরে নয়, যখন এই গ্রাম-গঞ্জের মানুষগুলোই নিজ ঘরে বসে আয় করবে বিশ্ব আইটি কর্মবাজার থেকে প্রকৃত অর্থ (রিয়েল মানি), বললেন কোডার্সট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আজিজ আহমদ।
প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বপর্যায়ে সুনাম অর্জনকারী কোডার্সট্রাস্ট যে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত তার সক্ষমতার বিস্তার ঘটাতে চায় এই কর্মসূচি তারই প্রমাণ। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সেরা দক্ষতার ডিজিটাল মানবসম্পদ গড়ে তুলতে এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, বলছিলেন এই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সফল আইটি উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক আজিজ আহমদ।
এদেশের যুব শক্তিকে একটি উন্নততর জীবনের পথে এগিয়ে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো এজেন্ডা নেই, বলেন তিনি।
গত ৫ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সময় আইসিটি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলকও সে কথাই বলছিলেন। তিনি বলেন, এই কর্মসূচিতে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্যই হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিককে একেকজন মেধাবী, উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন স্মার্ট ব্যক্তিতে পরিণত করা। যার মাধ্যমে গঠিত হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। তথ্য-প্রযুক্তিতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে তোলার পথ ধরেই এই লক্ষ্য অর্জিত হবে।
** আইটিতে দক্ষ জনশক্তি গড়তে কোডার্সট্রাস্ট’র সঙ্গে সরকারের দুটি চুক্তি
৫ জানুয়ারি দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে কোডার্সট্রাস্ট। এর একটি তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের সাথে অপরটি সরকারের হাইটেক-পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে। সে সময় বক্তৃতায় হাইটেক-পার্কের মহাপরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ এই কর্মসূচিকে দেশের তরুণ প্রজন্মকে আইটিতে দক্ষ করে তোলার একটি উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন। কোডার্সট্রাস্টকে একটি আস্থার জায়গা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদর্শণ করে তাদের কাজ থেকে মুগ্ধ হয়েছি। তারা নিজ উদ্যোগে অনেক ছেলে-মেয়েকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।
অপর সমঝোতা চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন আইসিটি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম। তিনিও তার বক্তৃতায় কোডার্সট্রাস্টের প্রতি আস্থার কথা জানান। কোডার্সট্রাস্টের পক্ষে দুটি চুক্তিতেই সই করেন এর সিইও শামসুল হক।
সমঝোতা চুক্তি সইয়ের পরপরই কাজ শুরু করে কোডার্সট্রাস্ট এবং তার প্রথম প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন করে। গত ২৬ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫দিন ব্যাপী এই কর্মসূচি প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন ডিওআইসিটির মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন কোডার্সট্রাস্টের চেয়ারম্যান আজিজ আহমদ। ছিলেন ডিওআইটি'র ডেপুটি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর নিলুফা ইয়াসমিন ও কোডার্সট্রাস্টের সিইও শামসুল হকসহ অন্য কর্মকর্তারা।
প্রথম দফায় ১৩টি উপজেলা থেকে ৩২ জন এই প্রশিক্ষক-প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এই প্রশিক্ষকরাই নিজ নিজ উপজেলায় আইটি কর্মশক্তিতে নতুন মুখদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এভাবে প্রথম বছরেই দেশের ৬৪টি জেলায় ৬৪ হাজার কর্মশক্তি তৈরি করা হবে। এবং ৫ বছরের মধ্যে প্রযুক্তি খাতে মোট ৫ লাখ কর্মশক্তি তৈরি হবে।
প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষকদের উৎসাহিত করেন আইসিটি বিভাগের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল। তবে প্রশিক্ষকদের জন্য সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণার ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস রাচেলের অংশগ্রহণ। এই কর্মসূচিতে যোগ দিতেই তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে যান।
প্রথম প্রশিক্ষণ সফলতার সাথে শেষ করার পর আজিজ আহমদ বলেন, এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জিডিটাল হিউম্যান রিসোর্স তৈরিতে কোডার্সট্রাস্ট তার ভূমিকা সমুন্নত রাখার প্রতিজ্ঞা পুনর্ব্যক্ত করছে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বুধ, শনি ও চাঁদ ত্রিভুজ হয়ে দেখা দেবে রাতের আকাশে
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ৫ ভয়ংকর দিক
- ফ্রিল্যান্সার ফাহিম ছিলেন আমাদের বিস্ময়, আমাদের অনুপ্রেরণা
- ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত
- জীবন বাঁচাতেও সাহায্য করে মোবাইল, জানা আছে কি?
- কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশের উদ্যোগে
ফ্রিল্যান্সিং প্রতিযোগিতায় ১০০০০০ টাকার প্রাইজমানি জিতলেন ফাতেমা মোস্তারী - কী আছে বাজারে আসা নতুন আইফোনে!
- বিদেশ ফেরতদের আইসিটি প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট, নতুন সম্ভাবনা
- ওয়ানপ্লাস ছাড়লেন সহ-প্রতিষ্ঠাতা কার্ল পেই
- একচেটিয়া ব্যবসা ভেঙ্গে দেওয়ার সুপারিশ
অ্যামাজন-অ্যাপল-ফেসবুক-গুগলের বিরুদ্ধে ৪৪৯ পৃষ্ঠার রিপোর্ট