হ্যাকারদের কবলে `স্মার্ট কৃষি` বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ প্রক্রিয়া হুম
হ্যাকারদের কবলে `স্মার্ট কৃষি` বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ প্রক্রিয়া হুম
আধুনিক স্মার্ট কৃষি যন্ত্রপাতির ওপর চোখ ফেলেছে ভার্চুয়াল জগতের ক্ষতিকারক চরিত্র হ্যাকাররা। এতে সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে ওই যন্ত্রগুলো। আর তাতে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ প্রক্রিয়াই এখন ঝুঁকিগ্রস্ত।
বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, হ্যাকাররা কৃষিকাজে ব্যাবহৃত হার্ডওয়্যারগুলো অকেজো করে দিতে চেষ্টা করছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। বীজবপণ থেকে শুরু করে শস্য কাটার প্রক্রিয়া পর্যন্ত সকল কিছুই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্বের অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী জন ডিরি বলছে, তারা এখন এসব যন্ত্র ব্যবহারের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে তা ঠিক করার প্রয়াস নিয়েছে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় বীজ ছিটানোর যন্ত্র, ড্রোন ও শস্য কাটার রোবোটগুলোই হ্যাকারদের মূল টার্গেট।
যুক্তরাজ্য সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই বলছে এ ধরনের সাইবার অ্যাটাকের হুমকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। জন ডিরি বলছে, ক্রেতার সুরক্ষা এবং তাদের নিজস্ব যন্ত্রগুলো ও ড্যাটা এসবই তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে রয়েছে।
বিশ্বে কৃষি খামারগুলোতে আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমাগত হারে বাড়ছে। কৃষিখাতে ব্যবহৃত রোবটগুলো এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পরিচালিত হয়। এতে কৃষিকাতে মানব শ্রমশক্তির ব্যবহার কমে আসছে। অত্যন্ত নাজুক ও উচ্চমূল্যের সব্জি অ্যাসপারাগাস চাষ, যা একসময় ভীষণ শ্রমঘন ছিলো, তা এখন পুরোপুরিই যন্ত্রে চলছে।
তবে এর পাশাপাশি এসব যন্ত্রের ব্যবহারের নিরাপত্তা ক্রমেই ঝুঁকিতে পড়ছে। তাতে ঝুঁকিগ্রস্ত হচ্ছে খাদ্য-সরবরাহ প্রক্রিয়া, যা কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরও আগে থেকেই হুমকিতে রয়েছে।
মাডি মেশিনস নামের একটি প্রতিষ্ঠান স্প্রাউট নামের একটি রোবট ব্যবহার করে অ্যাসপারাগাস হার্ভেস্ট করে। এর কো-ফাউন্ডার ক্রিস চ্যাভাসেকে উদ্ধৃত করে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মূল ঝুঁকিটি হচ্ছে, বিশ্বের যে কোনো স্থানে বসে যে কেউ এই মেশিনগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। এবং তারা যা চাইবে মেশিন তথন তা-ই করবে। অথবা তারা চাইলে মেশিনটিকে পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে।
অ্যাসপারাগাস-ই যে হ্যাকারদের মূল টার্গেট, তা নয়, এই ক্ষতিকারক হ্যাকাররা গোটা কৃষি অবকাঠামোকেই হুমকিতে ফেলে দিচ্ছে। বৃহৎ কোম্পানিগুলোও এই সাইবার চক্রের টার্গেটের বাইরে নয়। এদের কেউ রানসমওয়্যার ব্যবহার করে ম্যালিসিয়াস কোড পাঠায় যার মাধ্যমে ড্যাটা এনক্রিপ্ট করে পুরো প্রক্রিয়াটিই বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব।
গেলো বছর বিশ্বের অন্যতম একটি মাংস প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি জেবিএস এই সাইবার অ্যাটাকারদের কবলে পড়ে। এবং পরে ১১ মিলিয়ন ডলার দিয়ে তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়। এ মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি খামার এজিজিও এই রানসমওয়ার হামলার শিকার হয়, এতে তাদের উৎপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর আগে এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে গঠিত সরকারি পর্যায়ের একটি সাইবার সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষ এই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিলো যে, রাশিয়ার অর্থায়নে হ্যাকাররা সাপ্লাই চেইনকে টার্গেটে পরিণত করতে পারে। পশ্চিমা জাতীয় অবকাঠামোয় এই সাপ্লাই চেইন একটি প্রধানতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সিক কোডস ছদ্মনামে কাজ করেন এমন একজন এথিক্যাল হ্যাকারের বরাত দিয়ে বিবিসি বলেছে, তিনি জন ডিরি'র ব্যবহৃত সফটওয়ারের দুর্বলতাগুলো আবিষ্কার করেছেন, যা তিনি কোম্পানিটিকে জানিয়েছেন। এই এথিকাল হ্যাকার জানান, জন ডিরির ওয়েবসাইট ও তাদের ব্যবহৃত অ্যাপগুলোর পথ ধরেই তাদের ইনফরমেশন ও মেশিন ড্যাটার মধ্যে দখল নেওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বুধ, শনি ও চাঁদ ত্রিভুজ হয়ে দেখা দেবে রাতের আকাশে
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ৫ ভয়ংকর দিক
- ফ্রিল্যান্সার ফাহিম ছিলেন আমাদের বিস্ময়, আমাদের অনুপ্রেরণা
- ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত
- জীবন বাঁচাতেও সাহায্য করে মোবাইল, জানা আছে কি?
- কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশের উদ্যোগে
ফ্রিল্যান্সিং প্রতিযোগিতায় ১০০০০০ টাকার প্রাইজমানি জিতলেন ফাতেমা মোস্তারী - কী আছে বাজারে আসা নতুন আইফোনে!
- বিদেশ ফেরতদের আইসিটি প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট, নতুন সম্ভাবনা
- ওয়ানপ্লাস ছাড়লেন সহ-প্রতিষ্ঠাতা কার্ল পেই
- একচেটিয়া ব্যবসা ভেঙ্গে দেওয়ার সুপারিশ
অ্যামাজন-অ্যাপল-ফেসবুক-গুগলের বিরুদ্ধে ৪৪৯ পৃষ্ঠার রিপোর্ট