প্রান্তিক চাষী আমজাদ আলী, মানসিক প্রতিবন্ধী এক মা ও মমতাময়ী শেখ হাসিনার গল্প
বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২০ বুধবার আপডেট: ০৫:২৮ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২০ বুধবার
কতকিছু খুঁটিনাটি বিষয় তার চোখে পড়ে। সে সব দেখে-জেনে চুপ থাকেন না। নিজের মতো করে ব্যবস্থা নেন। জানান দিয়ে কিংবা পূর্ব ঘোষণা দিয়ে নয়, একদম চুপিসারে। অবশেষে যেদিন ঘটনাটি ঘটে তখনই জানা যায়, এতসব কিছুর পেছনের মানুষটি আর কেউ নন, তিনি শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব যাকে আগেই দিয়েছে খেতাব ’মানবতার মা’।
সহায়তা দিয়েই যে ক্ষান্ত থাকেন, তা নয়। কাছে ডেকে নেন, কিংবা চলে যান কাছে। জড়িয়ে ধরেন পরম মমতায়। অনেক বিপন্ন মানুষের জীবনে এমন সৌভাগ্য এসেছে। করোনা মহামারির এই সময়েও তা থেমে নেই। তবে নিজে যেতে পারছেন না, কিংবা ডেকে আনতে পারছেন না। কিন্তু তার সহায়তা পৌঁছে যাচ্ছে সঠিক ঠিকানায়।
বুধবার (৭ অক্টোবর) তেমনই একটি দিন ছিলো ঝিনাইদহের মায়াধরপুর গ্রামের প্রান্তিক চাষী আমজাদ আলীর জীবনে। যিনি নিজেও মানবিকতার এক উদাহরণ তৈরি করেছেন এর আগেই। তারই পুরস্কার হিসেবে তিনি পেলেন আরও বড় পুরস্কার। তবে এই দিনটির কথা ভেবে নয়, কিংবা পুরস্কারের কথা ভেবে নয়, আমজাদ আলী যা করেছিলেন, সে ছিলো মানবিকতার প্রতি তার অগাধ শ্রদ্ধা হিসেবে।
সে কাহিনী জানতে একটু পেছনে যেতে হবে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলাবাজারের ২২/২৩ বছরের এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে তার শারীরিক অসুস্থতা এবং তার গর্ভের সন্তানের কথা চিন্তা করে মানবিক কারণে নিজের বাড়ি নিয়ে যান মায়াধরপুর গ্রামের প্রান্তিক চাষী আমজাদ আলী।
আমজাদ নিজেই গরীব মানুষ। মাঠে তার কোন চাষযোগ্য জমি নেই। সারাবছর অন্যের ক্ষেতে কাজ করে সংসার চালান। এক মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। কিন্তু সে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ৬ মাস ধরে শয্যাশায়ী। ফলে এখন শুধু আমজাদের একার রোজগারে সংসার চালাতে হচ্ছে। নিজের অভাবের মধ্যেও তিনি অনন্য মানবিকতার পরিচয় সেদিন দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদপত্রের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারেন। তখনই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গর্ভবতী প্রতিবন্ধী নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ অক্টোবর দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন তিনি । মা ও মেয়ে উভয়েই সুস্থ আছেন, সে খবরটিও নিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে তার মনে দাগ কেটেছে আমজাদ আলীর মানবিকতা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বুধবার (৭ অক্টোবর) সকালে আমজাদ আলীর ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে একটি মটর চালিত রিকশাভ্যান দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী নারীটিকে করে দেওয়া হয়েছে 'প্রতিবন্ধী কার্ড'। এছাড়া প্রতিবন্ধী ঐ নারী এবং তার সদ্যপ্রসূত শিশু কন্যার দেখভালের জন্য নগদ ৫৫ হাজার টাকাও আমজাদ আলীকে দেওয়া হয়েছে।