নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
ছবি ও লেখা: কমল দাশ
প্রকাশিত: ০৯:৫৭ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার আপডেট: ১০:০২ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার
নাগলিঙ্গম
নাগলিঙ্গম নামটা শুনেই কেমন নাগ-নাগিনির ব্যাপার চলে আসে। ফুলের পরাগচক্র দেখতে অনেকটা সাপের ফণার মতো। হয়তো এ কারণেই এর নাম নাগলিঙ্গম। জনশ্রুতি আছে, নাগলিঙ্গম গাছের ফুল ও ফল একান্তই নাগ-নাগিনির সম্পদ। যদিও বাস্তবে এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।
নাগলিঙ্গম! এত বড় গাছ! গাছের গোড়া ফুঁড়ে বের হওয়া লম্বা লতার মতো শাখায় ছোট ছোট হাজারো কুঁড়ি। এক সময় কুঁড়ি থেকে টকটকে লাল পলাশ কিংবা শিমুলের মতো ফুল মুখ বের করে আকাশের পানে।
নাগলিঙ্গম ফুলের পাপড়ি, রেণু, ফুলের গঠন আরো মোহনীয়। পাপড়ির মাথায় অসংখ্য ছোট ছোট সাপের মতো ফণা তোলা! তাই বোধ হয় অনিন্দ্য সুন্দর। এই ফুলের জন্যই গাছের নাম হয়েছে নাগলিঙ্গম।
নাগলিঙ্গমের ফুল গাঢ় গোলাপি, সেই সঙ্গে হালকা হলুদ রঙের মিশ্রণ। পাপড়ি ছয়টি, পাপড়ি গোলাকার কুলিপাকানো। যেন ফণা তোলা সাপ।
ফুলগুলো বেশ বড় বড়। এক কথায় দেখতে অসাধারণ!
নাগলিঙ্গম সৌরভের জন্যও সেরা। কী দিন, কী রাত, নাগলিঙ্গম গাছের পাশ দিয়ে গেলে এর তীব্র ঘ্রাণের মাদকতা আপনাকে কাছে টানবেই।
নাগলিঙ্গম ফুল সারা বছর ফুটলেও গ্রীষ্মকাল হচ্ছে নাগলিঙ্গম ফোটার আসল সময়। শীত এবং শরৎকালে গাছে কম ফুল ফুটে।
নাগলিঙ্গম আমাদের দেশে বিরল প্রকৃতির গাছ। এই ফুল সচরাচর দেখা যায় না। বেশির ভাগ মানুষের কাছে এটি অপরিচিত।
পৃথিবীতে এ গাছ এখন বিলুপ্তির পথে। নাগলিঙ্গম গাছের রয়েছে ব্যাপক ঔষধি গুণ। এর ফুল, পাতা ও বাকলের নিযার্স থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি হয়। এন্টিবায়োটিক, এন্টিফাঙ্গাল, এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করা হয় এর নিযার্স।
এই গাছ থেকে তৈরি ওষুধ পেটের পীড়া দূর করে। পাতার রস ত্বকের নানা সমস্যায় কাজ দেয়। ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময়ে নাগলিঙ্গমের পাতার রস ব্যবহার হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দযের্ বেঁচে থাকুক নাগলিঙ্গম।
ছবিগুলো চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে তোলা।