ব্র্যাকের গবেষণা
মহামারিকালে চিকিৎসা বর্জ্যের ৯৩ ভাগই অব্যবস্থাপনা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০২০ সোমবার আপডেট: ০৬:৪৪ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২০ বুধবার
কোভিড- ১৯ মহামারিকালে বাংলাদেশে চিকিৎসা বর্জের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা হচ্ছেনা। ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি পরিচালিত কোভিড-১৯ মহামারিকালে কার্যকর মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় দাবী করা হয়, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসা বর্জ্যের মাত্র ৬.৬ ভাগের সঠিক ব্যবস্থাপনা হয়। বাকী ৯৩.৪ ভাগ বর্জ্যই সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় নেই। ২০ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালিত এই গবেষণার ফলাফল সোমবার (৫ই অক্টোবর) ওয়েবিনারের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
গবেষণায় উঠে এসেছে, সারাদেশে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৪৮ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার মাত্র ৩৫ টন (১৪.১%) সঠিক নিয়মে ব্যবস্থাপনার আওতায় ছিল। কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী থেকে প্রতিদিন ২৮২.৪৫ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার পুরোটাই গৃহস্থালি বর্জ্যের সাথে অপসারণ করা হয়। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও জানিয়েছেন তারা প্রায় সব বাড়ী থেকেই গৃহস্থালি বর্জ্যের সাথে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পন্যের বর্জ্য পান।
ওয়েবিনারের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, মানুষের ভোগ বাড়তে থাকায় বর্জ্যও বাড়ছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থাপনার ঘাটতি আছে। এর কারণ আগে থেকে গুরুত্ব না দেওয়া, জন্গণের অসচেতনতা, প্রযুক্তির অভাব আরও অনেক কিছু। এখন নিয়ম করা হচ্ছে- প্রতিটি হাসপাতালে এই বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, গত মে মাসে শুধু ঢাকাতেই ৩ হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
জরিপে অংশগ্রহণ করেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭৮.৫ ভাগ মনে করেন, অধিকাংশ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী একবার ব্যবহারযোগ্য। ৮৩.৭ ভাগের মতে, অধিকাংশ মানুষ এসবের সঠিক অপসারণ সম্পর্কে সচেতন নন। ৮৮.৪ ভাগ মানুষ মনে করেন, বাসাবাড়ির বর্জ্যের সাথে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী মেশানো উচিত নয়।
ওয়েবিনারের সভাপতি ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এই সমস্যার মোকাবেলায় চারটি বিষয়ে জোর দিতে হবে, সচেতনতাকে অভ্যাসের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, সকলের উদ্যোগের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা অর্জন, লাগসই সমাধানের কৌশল নির্ধারণ। এই দায়িত্বপালনের একটা সুস্পষ্ট বিভাজন দরকার। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদ বলেন, বিদ্যমান কাঠামোয় মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোন সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি বা উদ্যোগ নেই। যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরী।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. বদরুল আমিন বলেন, তারা এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।