জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় জন কেরি
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার আপডেট: ০১:৪৫ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার
জলবায়ুবিষয়ক ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকা সফরে জন কেরি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি শুক্রবার (৮ এপ্রিল) ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। বেলা সাড়ে এগারোটায় জন কেরিকে বহনকারী মার্কিন বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ উড়োজাহাজ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মূলত, মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে জলবায়ুবিষয়ক ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতেই দিল্লি থেকে জন কেরির এই কয়েক ঘন্টার ঢাকা সফর। হোয়াইট হাউসের নতুন ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের কোনো প্রতিনিধির বাংলাদেশ সফর দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শুরুতেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর তিনি একই জায়গায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দীনের সঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন জন কেরি। ওই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর হাতে জো বাইডেনের দেওয়া লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেটের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জো বাইডেন গত ২৭ জানুয়ারি ঘোষণা দিয়েছিলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে তিনি একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবেন। ২২ ও ২৩ এপ্রিল ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠেয় এই শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও রাশিয়া, চীন, জাপান, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ভারতসহ ৪০টি দেশের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ঢাকার কূটনীতিকেরা বলছেন, জন কেরির সংক্ষিপ্ত সফরের মূল বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন। তবে প্রাসঙ্গিকভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানসহ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আসতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের অনেক অর্জনও আছে। জন কেরির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ কে আব্দুল মোমেনের দুই দফা কথা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত উদ্যোগে বাংলাদেশকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
তবে কেরির সফরকে বাংলাদের জন্য গর্বের বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘উনি না আসলেও পারতেন। কিন্তু উনি প্রধানমন্ত্রীকে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। এতে আমরা খুবই প্রাউড ফিল করছি। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন জলবায়ু ইস্যুকে বড়ই গুরুত্ব দিচ্ছে।'
কেরির সফরের সময় বাংলাদেশ প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে বলে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক উষ্ণতা দেড় ডিগ্রিতে নামিয়ে আনার বিষয়ে জোর দেব। একইসঙ্গে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী উন্নত ও শিল্পন্নোত দেশগুলো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে যে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নের জন্য চাপ দেব।’
বাইডেন শপথ নিয়েই জন কেরিকে তার জলবায়ু উপদেষ্টা নিয়োগ দেন। তিনি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্যারিস চুক্তি নিয়ে গভীরভাবে কাজ করেছেন। বলতে গেলে তার চেষ্টাতেই ২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জলবায়ু চুক্তি (প্যারিস এগ্রিমেন্ট) হয়েছিল।