অটিজমে সামাজিক নিগ্রহের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা জরুরি, জাতিসংঘ সাইড ইভেন্টে সায়মা ওয়াজেদ
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৫১ এএম, ৭ এপ্রিল ২০২১ বুধবার আপডেট: ০৭:৫৩ এএম, ৭ এপ্রিল ২০২১ বুধবার
জাতিসংঘে পালন বিশ্ব অটিজম দিবস
বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) জাতিসংঘে যৌথভাবে “কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ে অটিজম: বৈশ্বিক সাড়াদান ও পুনরুদ্ধারে কীভাবে প্রযুক্তি সহায়তা করতে পারে” শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সাইড ইভেন্ট আয়োজন করে জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কুয়েত, পোল্যান্ড, কাতার ও কোরিয়া স্থায়ী মিশন এবং জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগ ও অটিজম স্পিক্স্।
ইভেন্টটিতে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশের অটিজম ও নিউরোডেভোলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের শুভেচ্ছা দূত সায়মা ওয়াজেদ। ভার্চুয়ালভাবে আয়োজিত এই সভায় দেয়া বক্তব্যে কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ে অটিজম আক্রান্ত শিশু ও তাদের পরিবারবর্গের জন্য বিশেষ সহায়তা পদক্ষেপ গ্রহণ ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বাংলাদেশের উত্তম অনুশীলনগুলো তুলে ধরেন সায়মা ওয়াজেদ।
অতিমারিকালে শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হওয়ার ফলে সারাবিশ্বে অটিজমের শিকার শিশুরা সামঞ্জস্যহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, উল্লেখ করেন তিনি।
সায়মা বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান সামাজিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শক্তিশালী তথ্য-প্রযুক্তি অবকাঠামো এবং বিস্তৃত কমিউনিটি-ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা অনেক পরিবারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন সমাজে অটিজমের শিকার পরিবারবর্গ যে সকল সামাজিক চ্যালেঞ্জ ও নিগ্রহের মুখোমুখি হয় তার উদাহরণ টেনে মিজ্ সায়মা বলেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সচেতনতা বৃদ্ধি ও তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে টেকসই ও ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন আনতে পেরেছে।
"বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অটিজমের ক্ষেত্রে বাড়তি সচেতনতার প্রয়োজন। অটিজম ও নিউরোডেভোলাপমেন্টাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার যে ধরণের সামাজিক নিগ্রহের শিকার হয় তা মোকাবিলাসহ এসংক্রান্ত সামগ্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা জরুরি।"
এ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং সশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে গত ৭ বছর ধরে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি, জানান সায়মা ওয়াজেদ।
ইভেন্টটিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ ও কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধিদ্বয়। অটিজম সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, প্রতিশ্রুতি এবং গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, “প্রতিবন্ধীতা ও নিউরোডেভোলাপমেন্টাল ডিজঅর্ডারের শিকার ব্যক্তিবগের সুরক্ষায় বাংলাদেশে আমরা শক্তিশালী আইন ও বিধি প্রণয়ণ করেছি এবং বিভিন্নমূখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এসকল পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধীতা সহায়ক ই-সেবা, রেফারেল সেবা এবং দেশব্যাপী সহায়তা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ”।
অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় বিশেষ করে কোভিড অতিমারির এই সময়ে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও গবেষণায় আরও বেশী বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই প্রযুক্তি-বিভাজন দূর করতে হবে, প্রযুক্তি হতে হবে সহজলভ্য এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সকলেরই এতে প্রবেশাধিকার থাকতে হবে”।
ইভেন্টটিতে সুনির্দিষ্ট ইস্যুসমূহ তুলে ধরেন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগের পলিসি সমন্বয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর সহকারি সেক্রেটারি-জেনারেল। সায়মা ওয়াজেদ ছাড়াও প্যানেল আলোচনা পর্বে অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিষয় বিশেষজ্ঞগণ অংশ নেন।
অটিজমের শিকার ব্যক্তিবর্গসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন পেশার মানুষ ভার্চুয়াল এই ইভেন্টটিতে অংশ নেন।