শুভ জন্মদিন আমির খান, যে পাঁচে অনন্য তিনি
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৫ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২১ রোববার আপডেট: ০৪:২৭ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২১ রোববার
আমির খান সম্পর্কে প্রায়শই বলা হয় ‘দ্য ম্যান অব ম্যানি ফার্স্ট’। সত্যিই তো, বলিউডে নতুন অনেক কিছুই যে এসেছে তার হাত ধরে। আমির খানই প্রথম বলিউড তারকা যিনি খোলামেলাভাবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যাওয়া বাদ দিয়েছিলেন। তাও এমন সময় যখন অ্যাওয়ার্ড শো’গুলোর অবস্থা রমরমা।
আমির খানই একমাত্র তারকা যিনি ব্যবসার চেয়ে নিজের মনের কথা শোনেন। সে কারণে ‘ধোবি ঘাট’ ‘পিপলি লাইভ’ এর মতো অতি সাধারণ ছবিতেও তাকে দেখা গেছে। বছরে একটি ছবি করার ট্রেন্ডও শুরু করেন এই সুপারস্টারই।
অভিনয় তো আছেই সাথে বিপণন ও মার্কেটিংয়েও তিনি মাস্টার। কেন বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো তাকে দিয়ে লেকচার দেয়ায় না সেটাই ভাবনার বিষয়। ‘লাগান’ এর মতো চলচ্চিত্র বানানোর ঝুঁকি নেয়ার কথা তিনিই একমাত্র ভাবতে পেরেছিলেন। আমির খানের ‘গজনি’ই বলিউডের ১০০ কোটি রুপির ক্লাব খোলে। নিজের ছবিগুলোকে এতটাই হিট বানিয়েছেন যে ৩০০ কোটি কামালেও সেটাকে ফ্লপ ভাবা হয়!
১৪ মার্চ-এ তারকা পা রাখছেন ৫৬ বছর বয়সে। এদিন লাখো ভক্তের পাশাপাশি অসংখ্য বলিউড তারকার ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি। কারিনা কাপুরতো জানিয়েই দিয়েছেন ‘আমির একজনই’। চলুন দেখে নেয়া যাক আমির খানের পারফেকশনিস্ট হওয়ার পাঁচ কারণ।
বিপণনের যুবরাজ
আমির খানের বিপণন জ্ঞান এতই সমৃদ্ধ যে তিনি যে কোন মার্কেটিং গুরুকে পাঠ দিতে পারবেন। তিনি যে কোন গণ্ডির বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে পারেন। বিপণনের অংশ হিসেবেই ‘পিকে’ ছবির পোস্টারে কাপড় ছাড়া দাঁড়িয়েছিলেন। ‘থ্রি ইডিয়টে’ নিজের চরিত্রের সাথে মিলিয়ে দীর্ঘদিন গণমাধ্যম থেকে দূরে ছিলেন। গজনির সময় দর্শকদের মাথা নেড়া করে দিয়েছিলেন। ‘কেয়ামাত সে কেয়ামাত তাক’ ছবির পোস্টার নিজেই লাগিয়েছিলেন অটো রিক্সার পেছনে।
চরিত্রের জন্য নিজেকে বদলানো
আমির খানের প্রতিটি ছবিই একটি আরেকটির চেয়ে বিপরীত। প্রতিটি চরিত্র নিয়ে ভক্তদের উচ্ছাস থাকে তুঙ্গে। তার কারণ হলো প্রতিটি ছবির জন্য আমির খান নিজেকে ভিন্ন ভাবে প্রস্তুত করেন। ‘দঙ্গল’ ছবিতে তাকে দেখা গেছে একজন অবসরপ্রাপ্ত মুষ্টিযোদ্ধা চরিত্রে। তার জন্য নিজের শরীর নিয়ে খেলেছেন নানা রকম খেলা। একবার মোটা হয়েছেন তো অন্যবার ওজন কমিয়েছেন।
সিক্রেট সুপরাস্টারে তাকে দেখা গেছে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে। তালাশে ছিলেন পুলিশ এবং পিকে ছবিতে নিজেকে হাজির করেছেন ভোজপুরী বলা অ্যালিয়েন হিসেবে। তার আগে থ্রি ইডিয়টে কলুজ পড়ুয়া যুবকের ভুমিকায়।
বছরে মাত্র এক ছবি
একটা সময় ছিল যখন এক অভিনেতা একই সাথে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের ছবিতে অভিনয় করতেন। আমির খান সেটা ভেঙে বছরে একটি ছবিতে নিজেকে সীমাবদ্ধ করেন। ফলে তার ভক্তরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেন পরবর্তী ছবি কি হবে, কেমন হবে।
সংখ্যার চেয়ে মানে প্রাধান্য দেয়ায় যে কাজ হাতে নেন তাতে পুরো মনযোগ দিয়ে কাজ করতে পারেন মি. পারফেকশনিস্ট। যার ফলে আমির খানের কাজের মান আরও বেশি ভালো হয়েছে এবং বছরের পর বছর হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। এর মাঝে কেবল ‘থাগস অব হিন্দুস্তান’ই তেমন ব্যবসা করতে পারেনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি সমাজসেবা
অভিনেতা হয়ে ভারতের রাজনীতিতে কথা বলতে যাওয়া মারাত্মক ঝুঁকির। দীপিকা পাডুকোন যেমন জেএনইউ এর প্রতিবাদে গিয়ে বিপদে পড়ছিলেন নিজের ছবি নিয়ে। তবে আমির খান খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে বিষয়গুলো এড়িয়ে সমাজসেবায় কাজ করেছেন।
২০০৬ সালে তার ফানা ছবি প্রকাশের আগে জড়িয়ে যান ‘নারমাদা বাচাও আন্দোলন’ এ। যার ফলে তার ছবি নিষিদ্ধ করা হয় গুজরাটে। তার পরের বছর থেকেই আমির খান টেলিভিশনে হাজির হন তার ‘সত্যমেভ জয়তে’ শো নিয়ে, যেখানে আমির খানকে অভিনেতা কম সাংবাদিক ভূমিকায় বেশি দেখা গেছে।
কমিক চরিত্রেও সমান পারদর্শী
কমিক চরিত্রেও আমির খান এত দক্ষ যে স্ট্যান্ডাপ কমেডিয়ানরাও তাকে ইর্ষা করেন। ‘রাঙ্গিলা’ ‘ইশক’ ‘আন্দাজ আপনা আপনা’ ‘দিল চাহতা হে’র মতো ছবিতে তার হাস্যরসাত্মক সংলাপ সবার মুখে হাসি ফুটিয়েছে। আমির খানের অসাধারণ অভিনয়ই ‘আন্দাজ আপনা আপনা’ অন্য মাত্রা যোগ করে। শুনা যাচ্ছে, রনবির সিং ও রনবির কাপুর আগামী দিনে এই ছবির রিমেকে কাজ করবেন। যেখানে রনবির সিংকে আমির খানের ভুমিকায় দেখা যাবে।