রোগ নির্ণয়ে সার্চ ইঞ্জিনে কতটা ভরসা রাখবেন?
হেল্থ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সোমবার
যে কোন ঘটনায় প্রথমেই গুগল বা অন্যান্য জায়গায় সার্চ করার প্রবণতা আছে অনেকের। অন্য বিষয়গুলোতে সন্তোষজনক উত্তর মিললেও চিকিৎসা ক্ষেত্রে তা বিপদজনক। কেননা যে কোন সাধারণ রোগের উপসর্গ লিখলেও সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে উদ্বেগজনক ফলাফল দেখায়। ফলে মানুষ আরও বেশি চাপে পড়ে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির হতে পারে।
ভারতের বিখ্যাত ফোর্টিস হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সঞ্জয় সাহা ও ডা. প্রদীপ সাহা জানান, আমাদের জীবনে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এনেছে ডিজিটালাইজেশন। অনেক কিছু্ই সহজলভ্য হওয়ায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত্র তথ্যও মানুষ ইন্টারনেট থেকেই খুঁজে নেয়। বিশেষত এই করোনায় তা আরও বেড়েছে। ঘরে কীভাবে স্যানিটাইজার বানানো যায় কিংবা করোনা কোথায় কত ঘন্টা জীবন্ত থাকে এমন তথ্য অধিকাংশই অনলাইনে জানতে চেয়েছেন।
সার্চ ইঞ্জিনে রোগ নির্ণয়ের ঝুঁকি
চিকিৎসকদ্বয় জানান, সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ভুল রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা প্রবল। উদাহরণ দিয়ে বলেন, যদি কেউ ‘মাথা ব্যাথা’ লিখে সার্চ দেয় তাহলে ভিন্ন ভিন্ন ২০টি ফলাফল দেখাবে। একটি থেকে অন্যটিতে মানুষ বেশি ভয় পাবে।
হয়তো কারও মাথা ব্যাথা একদমই সাধারণ কিছু, কিন্তু সার্চ ইঞ্জিনে দেখাবে মাথায় ক্যান্সারজাত টিউমার কিংবা অন্য কোন নিউরোলজিকাল সমস্যা দেখাবে। আর এ ফলাফল দেখে কেউ যদি চিকিৎসা নেয়া শুরু করে তবে ক্ষতি হতে পারে মারাত্মক।
জানতে হবে ‘সাইবারচন্ড্রিয়া’ সম্পর্কে
ইন্টারনেটে স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য অনুসন্ধানের কারণে ব্যক্তির মনে যে ভয় সৃষ্টি হয় তার প্রবণতাকে সাইবারচন্ড্রিয়া বলে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অনেক মানুষ এখন এ সমস্যায় ভুগছে। এ ধরনের রোগীরা সামান্য শারিরীক সমস্যাতেও হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। মনে করতে থাকেন মারাত্মক কোন রোগে ভুগছেন তারা। এ প্রবণতা মানুষের কাজে এবং সম্পর্কেও প্রভাব ফেলে।
পেশাদার চিকিৎসকের কাছে যাওয়া
ডা. প্রদীপ ও সঞ্জিব সাহা বলেন, আমাদের কাছে অনেক রোগী আসেন নিজের স্বাস্থ্য ও উপসর্গ বিষয়ক প্রশ্ন নিয়ে। অনেকে ইন্টারনেট থেকে জেনে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষাও করে আসে। অবশ্যই এমন রোগীকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে সবাইকে মনে রাখতে হবে একজন পেশাদার চিকিৎসকের বিকল্প কথনই ইন্টারনেট হতে পারে না।
যেসব বিষয় মনে রাখতে হবে
- যে কেউ অনলাইনে কন্টেন্ট শেয়ার করতে পারে।
- প্রশ্নের প্রাথমিক উত্তর জানতে ইন্টারনেট ব্যবহার করুন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে নয়।
- স্বাস্থ্য ক্লিনিক, হাসপাতালের ওয়েবসাইট, প্রসিদ্ধ স্বাস্থ্য ম্যাগাজিন কিংবা পাবলিকেশন থেকে তথ্য অনুসন্ধান করুন।
- ইন্টারনেট থেকে দেখলেও পেশাদার চিকিৎসকের সাথে অবশ্যই আলাপ করুন।
- অনলাইনে যাবতীয় বিষয় দেখে আপনার প্রশ্নগুলো লিখে নিন। তারপর চিকিৎসক কিংবা আপনার নিকবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে সেগুলোর উত্তর জানুন।