পর্যটন দিবসে পর্যটক শূন্য সুন্দরবন!
প্রকাশিত: ০১:৫৪ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার আপডেট: ০১:২৪ এএম, ১ অক্টোবর ২০২০ বৃহস্পতিবার
‘যদিও রজনী পোহালো তবু, দিবসও কেন এলো না, এলো না’-রজনী শেষে দিবস এসছিল কিন্তু আসেনি পর্যটক। অথচ দিনটিই ছিলো বিশ্ব পর্যটন দিবস। ঘাটের মাঝি ওসমান গনি, সিরাজুল ইসলাম, মোহর আলী, আবুল কালাম মালিসহ অনেকেই জানালেন, বিশ্ব পর্যটন দিবসে একজন পর্যটকেরও দেখা পাননি তারা। ঘাটের নৌকা ঘাটেই থেকে গেলো। করোনার কারণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটক শূন্য অবস্থায় এখন সাতক্ষীরার সুন্দরবন।
সাতক্ষীরা থেকে সড়ক পথের শেষ প্রান্ত যেখানে মিলেছে সেখানেই নীলডুমুর। একবারে সবুজ অরণ্যের বুকের ভিতর ঠেলে উঠেছে এ পথ। নীলডুমুরের মাটি স্পর্শ করতেই চোখে পড়ে বিস্তৃত জলরাশি। ডানে-বামে, সামনে-পিছনে সুন্দরী গাছে শোভিত নয়নাভিরাম সুন্দরবনের অপরূপ দৃশ্য। নদী বেয়ে ভাটির টানে দক্ষিণে যেতেই চোখে পড়ে জোয়ার-ভাটার খেলা। চোখে পড়ে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য। সড়ক পথে সুন্দরবনের এ দৃশ্য উপভোগ করতে এখানে ছুটে আসেন হাজার হাজার পর্যটক। কিন্তু এবার সেই সুন্দরের মঞ্চে কোন পর্যটক দেখা যায়নি।
প্রতিবছর পর্যটকদের আগমনের আশায় এখানে ঘাটে রাখা হয় শতশত নৌকা। ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসে পর্যটক শূণ্য দেখা যায় নীলডুমুর খেয়াঘাট।
অপার সম্ভাবনাময় সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাতক্ষীরার পর্যটন এলাকাগুলো পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে রাজস্ব ঘাটতি। অন্য দিকে পর্যটকবহনকারী নৌকার মাঝি ও ট্রলার শ্রমিকরা পড়েছে চরম বিপাকে। মহামারী করোনাভাইরাস, ঘূর্ণিঝড় আম্পান আর নদী ভাঙনে তারা দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
এইসময় বিগত বছরগুলোতে দেখা যেত পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। নানা রঙে সাজানো হতো নৌকা ও ট্রলার। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজমে দেখা যেত পর্যটকের মিলনমেলা। শিশু-কিশোর, যুব-বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পদভারে মুখরিত থাকতো সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্রগুলো। আজ সেই দৃশ্য ম্লান হয়ে গেছে। থেমে গেছে সেই কোলাহল। বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে হারিয়ে গেছে সেই সোনালী দিন।
এবিষয় বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সুন্দরবন কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম এলাকায় সরকারিভাবে কোন পর্যটক প্রবেশ করতে না পারায় সরকারি রাজস্ব হয়নি। এতে পর্যটন শিল্পে দারুণ প্রভাব পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত অর্থ বছরে সুন্দরবনের পর্যটনখাতে ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৫০ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন পর্যন্ত সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মন্ত্রণালয় থেকে পর্যটনের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।