খুবির ৩ শিক্ষককে শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার আদেশ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৭:১৭ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুতি ও অপসারণ আদেশের বিরুদ্ধে রুল নিশি জারি করে তাদের শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার আদেশ প্রদান করেছেন উচ্চ আদালত।
তিন শিক্ষক হলেন-
বাংলা বিভাগের বরখাস্ত হওয়া সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল
অপসারিত হওয়া ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী এবং
বাংলা বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে উচ্চ আদালত এই আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, ওই তিন শিক্ষকের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে কোন আইনি বাধা নেই।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ২৮ জানুয়ারি তারিখে চাকরিচ্যুতি ও অপসারণ আদেশের বিরুদ্ধে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
তিনি মঙ্গলবার বলেন, রিটের শুনানি নিয়ে আজ মাননীয় উচ্চ আদালত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশের বিরুদ্ধে রুল নিশি জারি করেছেন এবং তিন শিক্ষকের শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে স্থিতাবস্থার আদেশ প্রদান করেছেন। যেহেতু উক্ত তিন শিক্ষক এখনো তাদের দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি, তাই তাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে কোন আইনি বাধা নেই।
তিনি বলেন, তিন শিক্ষকের প্রতি যে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে তা কোন বিচারেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি তাদের একাডেমিক ফ্রিডমের ওপর আঘাত।
উল্লেখ্য, গত বছর জানুয়ারিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেতন-ফি কমানো, আবাসন সংকট সমাধানসহ পাঁচ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেন। তাতে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি এক শিক্ষককে বরখাস্ত এবং দুই শিক্ষককে অপসারণ করা হয়।
সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী, বরখাস্ত হলে তারা অন্য কোনো সরকারি চাকরি করতে পারবেন না। অপসারিত হলে করতে পারেন।
এছাড়া এ মাসেই অসদাচরণের অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রকে দুই বছরের জন্য আর একজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। অন্যদিকে একজনের সার্টিফিকেট এক বছরের জন্য স্থগিত এবং অন্য একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানকে ২০১০ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১২ সালে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর দুই মেয়াদে ১০ বছর দুই মাস উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষে গত ২৮ জানুয়ারি বিকেলে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।
মেয়াদের শেষ দিকে এসে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি কমানো এবং আবাসন সংকট নিরসনসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জের ধরে দুই ছাত্রকে বরখাস্ত এবং তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়।
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ওই দুই ছাত্র নয় দিন অনশন চালিয়ে আসার পর ২৬ জানুয়ারি তাদের শরবত খাইয়ে অনশন ভাঙান উপাচার্য ফায়েক উজ্জামান। ২৮ জানুয়ারি তাদের বহিষ্কারাদেশ মওকুফের কথা জানিয়ে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।