চা-এর চতুর্মুখি গুণ
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২৬ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার আপডেট: ০৬:৩৯ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার
প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এশিয়ার দেশগুলোতে চা পান এবং ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। বর্তমান করোনাকালীন স্বাস্থ্য সংকটে প্রতিরক্ষার প্রথম ধাপ হিসেবে প্রাকৃতিক উপাদানগুলো যেনো আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
এদিকে নিয়মিত চা পান মানুষের সুস্থ থাকায় দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞই। যার অনেক প্রমাণও রয়েছে। পাশাপাশি কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না থাকায় এবং সম্পুর্ণ নিরাপদ হওয়ায় বিশ্বাস করা হয় চায়ে রয়েছে রোগ নিরাময়ের অনেক বৈশিষ্ঠ্যই।
নিচে এমনই কয়েক ধরনের চা-এর বর্ণনা তুলে ধরা হলো-
ক্যামোমাইল চা
মূলত ক্যামোমাইল হলো অ্যাসটেরেসি প্রজাতির ডেইজি জাতীয় সাদা ও হলুদ ফুল। ফুলগুলোকে শুকিয়ে পানিতে ছেড়ে দিলেই এই চা প্রস্তুত করা যায়। প্রাকৃতিকভাবে কোন ধরনের ক্যাফেইনের উপস্থিতি না থাকায় এবং পাশাপাশি ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যাপিজিনের উপস্থিতির ফলে এই চা মানুষকে স্বাস্থ্যকর ঘুম দিতে পারে।
এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, ঠান্ডা থেকে পরিত্রান পেতে, পেশির শক্তি বৃদ্ধি, পিরিয়ডের ব্যাথা কমানো, দুঃশ্চিন্তা প্রশমন এবং ত্বককে হালকা করতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ইচিনেসিয়া চা
ইচিনেসিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের রকি পর্বত, কানাডা এবং ইউরোপের কিছু দেশে জন্মানো এক ফুলের উদ্ভিদ। উদ্ভিদটি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ যেমন সর্দি-কাশির চিকিৎসার জন্য ভেষজ ওষুধ হিসাবে কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
ইচিনেসিয়া গাছের প্রায় সব অংশই ভেষজ ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফুল, পাতা এবং শিকড় উভয়ই। তবে সাধারণত, ইচিনেসিয়া চা-এর ফর্ম হিসাবেই বেশি ব্যবহৃত হয়।
এছাড়াও শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা স্থিতিশীল রাখা, রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও এই চা ভূমিকা রাখে। দিনে এক বা দুই কাপ ইচেনেসিয়া চা সবার পান করা উচিৎ। বিশেষ করে মৌসুম পরিবর্তনের সময়।
গ্রিন টি
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, একদিনে ৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করতে পারে গ্রিন টি। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, নিয়মিত গ্রিন টি খেতে পারলে বছরে চার কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব। এর কারণ ক্যাটেচিন নামের একটি উপাদান থাকে এই চায়ে, যা ভিটামিন ই এবং সি’র থেকেও বেশি শক্তিশালী।
শুধুই কি ফ্যাট বার্ন? না তেমনটা নয়, আছে আরও অনেক উপকারিতা। গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা সব দিক থেকে শরীর চাঙা রাখে। এটি রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়, ক্যানসার প্রতিরোধ করে, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে বলেও প্রচলিত।
ওজন নিয়ন্ত্রণে আজকাল অনেকেই গ্রিন টিকে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখতে পছন্দ করেন। চাইলে আপনিও যোগ দিতে পারেন তাদের দলে।
হলুদ-আদা চা
হলুদের চায়ের উপকারিতার কথা এখন অনেকেই জানেন। বহুগুণে গুণান্বিত এই চায় হয়ে উঠছে বেশ জনপ্রিয়্। সাথে আদা দিলে তো কথাই নেই। সে ক্ষেত্রে উপকার হবে দ্বিগুণ।
কেননা হলুদ-আদা চা পান করলে প্রচুর উপকার মেলে। তার কারণ, এর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এছাড়াও রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, কপার এবং জিঙ্কের মতো খনিজ পদার্থ। হজমে সমস্যা হচ্ছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, হাই কোলেস্টেরল, মানসিক সমস্যা, ওজন কমাতে চান, এমনকি যাদের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেশি তাদেরও এই চা পান করা উচিত্। এছাড়াও এই চা হার্ট ভালো রাখে, মনযোগ বাড়াতে সাহায্য করে, বেদনানাশক হিসেবে উপযোগী এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।