অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

মস্তিষ্ক রদবদল

শেখ আনোয়ার

প্রকাশিত: ০৭:২২ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার   আপডেট: ০৭:২৫ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার

মস্তিষ্ক ট্রান্সপ্লান্টেশন নিয়ে বহুদিন ধরে নানান রকম কথাবার্তা চলে আসছে। তবে ব্যাপারটি এখনো কল্পবিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে। বিকল বা ক্ষতিগ্রস্থ মস্তিষ্ক সংস্থাপন এখনও পর্যন্ত সুদুর পরাহত হলেও ২০২৫ সাল নাগাদ মানব মস্তিষ্কের কিছু কিছু অংশ রদবদল বা প্রতিস্থাপন করার ক্ষমতা মানুষের করায়ত্ত্ব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

হার্ভাডের নিউরো সায়েন্টিস্ট ড. ইভান সিনডার জানাচ্ছেন, গোটা মস্তিষ্ক সংযোজন অসম্ভব তা নয়, তবে এখন পর্যন্ত তা কল্পবিজ্ঞানের বিষয়। কেননা এজন্য যেসব সংযোগ স্থাপন করা দরকার সেগুলো অতি জটিল প্রক্রিয়ার অংশ। এখানে লাখ লাখ সংযোগের ব্যাপার রয়ে গেছে। কিন্তু মস্তিষ্ক কোষ সংযোজন করতে গিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞান এ পর্যন্ত মিশ্রফল লাভ করেছে। এ ব্যাপারে পারকিনসন রোগের চিকিৎসার কথা বলা যেতে পারে। ডোপানিম নামক একটি রাসায়নিক উপাদানের কারণে মস্তিষ্ক কোষগুলো ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে রোগ দেখা দেয়। ডোপামিনের কাজ হলো মস্তিষ্কের বার্তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে বয়ে নিয়ে যাওয়া।

এক দশক আগে সুইডিশ বিজ্ঞানীরা মানব ভ্রুণের ডোপামিন উৎপাদনকারী মস্তিষ্ক কোষ পারকিনসন রোগীর মস্তিষ্কে লাগিয়ে সাফল্য ও ব্যর্থতা দু’টোই লাভ করেছেন। তবে এক্ষেত্রে পরিপূর্ণ সাফল্যের সংবাদ সৃষ্টি করেছেন ড. সিনডার। তিনি ভ্রুণের মস্তিষ্কের মূল কোষগুলো আহরণ করে ল্যাবরেটরিতে ব্যাপকভাবে উৎপাদনের সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি আশা করেন এ কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্থ মস্তিষ্কে প্রবেশ করিয়ে দিলে এগুলো নিজেরাই মৃত বা রোগাক্রান্ত কোষের স্থলাভিষিক্ত হবে। সেজন্য সিনডার আজ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারছেন, ২০২৫ সাল নাগাদ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ মস্তিষ্ক সারিয়ে তোলার সক্রিয় উপায়ের অধিকারী হবে। আর মস্তিষ্ক কোষ পুনরুৎপাদনের প্রক্রিয়া জানা হয়ে গেলে নতুন করে মস্তিষ্ক তৈরি করা কিংবা অন্ততঃপক্ষে মস্তিষ্কের অংশ বিষেষ তৈরি করার ক্ষমতা মানুষের করায়ক্ত হবে।
 
শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক।