অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী! 

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার   আপডেট: ০৬:০৬ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার

ইংল্যান্ডের যাত্রীবাহী বৃহদাকার সামুদ্রিক জাহাজ ‘আরএমএস টাইটানিক’ সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করে এটি। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি, প্রথম সমুদ্রযাত্রায় ডুবে যায় বিশালাকৃতির ব্রিটিশ জাহাজটি। পথিমধ্যে ১৫ এপ্রিল বৃহৎ এক হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের অতল গভীরে তলিয়ে যায় সেটি।

বিলাসবহুল এ জাহাজে ছিলেন ২২২৪ জন যাত্রী। এর মধ্যে ১৫০০ জনই মারা যান। অকালে প্রাণ ঝরে অগণিত শিশু-কিশোরেরও। বাকিরা কোনোভাবে লাইফ বোটের বদৌলতে বেঁচে যান। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে ১০৮ বছর। তবু টাইটানিকের ডুবা নিয়ে রহস্য থেকে গেছে। কারণ, সেটি ছিল ‘অমর’। এটি ডুববে তা কস্মিনকালে কল্পনাও করেননি কেউ। এজন্যই এ নাম দিয়েছিলেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হোয়াইট স্টার লাইন। কিন্তু বিধিবাম! প্রথম যাত্রাতেই কেল্লাফতে। 

এ নিয়ে সাধারণ ধারণা পাওয়ার জন্য আমাদের অবশ্য ধন্যবাদ জানাতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত পরিচালক জেমস ক্যামেরনকে। তার বানানো সিনেমার সৌজন্যেই তাবৎ দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ উপলব্ধি করতে পারেন সেই বিভীষিকাময় রাতের কাহিনী।

তবে এতদিন পরও সেই রহস্য উন্মোচন হয়নি। টাইটানিক কিভাবে ডুবল তা নিয়ে ইতোমধ্যে হয়েছে অসংখ্য চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেকে বলেন, ঈশ্বরের অভিশাপে এটি ডুবেছে। কেউ বলেন, প্রাকৃতিক গোলযোগের কারণে বরফের পাহাড়ের ধাক্কাতেই সেটি বিপর্যস্ত হয়। তবে এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।

কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন, শুধু একটি বড় হিমশৈল দৈতাকৃতি জাহাজের ডুবে যাওয়ার কারণ হতে পারে না। নেপথ্যে রয়েছে এক রহস্যময় ইতিহাস। যা এখনও সবার কাছে অজানা। আর সেই তথ্য উদঘাটনে আগ্রহী হয়েছেন বিজ্ঞানী মিলা জিনকোভা। ১৪ এপ্রিল রাতে ঠিক কি হয়েছিল তা পুনর্বিবেচনা করতে চান তিনি। সেই উদ্দেশ্যে  নতুন গবেষণা শুরু করেছেন এ মার্কিন নাগরিক।

নতুন খবর হচ্ছে, বিখ্যাত এ সুবিশাল জাহাজ ডুবে যাওয়ার পেছনে আইস বার্গের পাশাপাশি সোলার আফ্লেয়ার্সের ভূমিকা ছিল। বিজ্ঞানের পরিভাষায়, এটি সৌরশিখা গুলি ঝড়; যা সূর্যপৃষ্ঠের তাপের হঠাৎ বৃদ্ধিতে হয়। এর ফলে পৃথিবীতে যোগাযোগ এবং উপগ্রহগুলো প্রভাবিত হতে পারে।

জিনকোভার কথায়, টাইটানিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আগে নিকটবর্তী জাহাজ ‘মাসাবা’ থেকে রেডিওর মাধ্যমে সতর্কবার্তা পায়। কিন্তু সেটির তরঙ্গ যোগাযোগের দায়িত্বে থাকা কর্তারা একে অপ্রয়োজনীয় মনে করেন। ফলে রাত ২টা থেকে ২টা ২০ মিনিটের মধ্যে তা সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। 

আবহাওয়া সংক্রান্ত নিজের জার্নালে তিনি বলেন, টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ঘটনাস্থল থেকে ১৩ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল আরেকটি জাহাজ। কিন্তু তথাকথিত ‘অবিনশ্বর’ জাহাজ থেকে রেডিও বার্তায় নিজেদের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য ভুল দেয়ায় শেষ রক্ষা হয়নি নিষ্পাপ লোকজনেরও। হিমশীতল পানিতে ডুবে মারা যান সবাই।

‘মেয়াডাব্লু ডটকম’কে জিনকোভা বলেন, সেই রাতে উত্তর আটলান্টিকে একটি শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় হয়েছিল। এ জাতীয় ঝড়ের সামান্যতম পরিবর্তন কম্পাসকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তবে তার এ গবেষণার ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

এছাড়া বিশ্ববিখ্যাত এ জাহাজর ডুবে যাওয়ার পেছনে অপেশাদার রেডিও অপারেটরও দায়ী ছিলেন বলে মনে করা হয়। ভূতাত্ত্বিক অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা ছিল না তাদের। ওদের খামখেয়ালিতে ওই ধ্বংসযজ্ঞ হয় বলে মত বহু বিশেষজ্ঞের।