গ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ না হলে অবস্থানের হুমকি বিএনপি মেয়র প্রার্থীর
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার আপডেট: ০৩:৪৪ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, গত সাতদিন ধরে নগরীর বিভিন্ন থানায় ১০টি গায়েবি ও সাজানো মামলা করা হয়েছে। যে মামলাগুলো ২০১৮ সালের নির্বাচনের ঠিক ছয় মাস আগে থেকে দেখেছি। ১৯ জানুয়ারি থেকে প্রতিটি থানায় সে ধরণের ১০টির বেশি মামলা করা হয়েছে। এক হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে। রবিবার রাতে ৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাদ যাইনি নাগরিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক একরামুল করিম, তার ছেলে এবং মহিলা এবং শিশুরাও।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডা. শাহাদাত এসব অভিযোগ করেন। ১৯ জানুয়ারি থেকে গ্রেফতার হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার না হলে চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন।
নির্বাচনের আগের সাতদিন থেকে কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে অভিযোগ করে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী বলেন, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মাস্তান, সন্ত্রাসী আর ইয়াবা ব্যবসায়ী। আপনারা ইতোপূর্বে দেখেছেন যে ইভিএমে ভোট হলে একটি দলের সন্ত্রাসী, মাস্তানেরা ইভিএমের পাশে থেকে গার্ড দেয়। তাদের ইচ্ছামতো ভোট দিতে বলে। এজেন্ট বের করে দেয়। আমরা এর আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে গেছিলাম। সেখানে আমরা নয় দফা দাবি দিয়েছি। তাতে আমরা সুস্পষ্ট বলেছি যে, যেহেতু এজেন্টরা নির্বাচনের অংশ, তাই ভোটের দিন তাদের যেন সুরক্ষা দেয়া হয়।
তিনি বলেন, সিইসি চট্টগ্রাম এসেছিলেন। ওনার কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আশা করেছিলাম। আওয়ামী লীগের মধ্যে মারামারিতে তিনজন নিহত হয়েছে, আমাদের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে, প্রচার গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হয়রানি চলছে- এসব বিষয়ে সিইসি বক্তব্য দেবেন বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু সেরকম কিছু পাইনি।
পুলিশের হয়রানি থেকে মহিলা, শিশুরা পর্যন্ত বাদ যাচ্ছে না উল্লেখ করে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, রবিবার রাতে বাকলিয়া থানায় বিএনপি নেত্রী মুন্নি ও তার ১২ বছরের শিশুকে ধরে নিয়ে গেছে। নাগরিক ঐক্য পরিষদের বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিমকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় চকবাজার থানা পুলিশ। সঙ্গে তার ছেলেকেও ধরে নিয়ে যায়। অথচ তার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের নির্বাচন কর্মকর্তাকে আমরা এখন পর্যন্ত ৪০টি অভিযোগ দিয়েছি। এসবের কোনো সমাধান হয়নি। গত সাতদিন ধরে যেসব মিথ্যা মামলা হয়েছে, এই মিথ্যা মামলায় যাতে গ্রেপ্তার করা না হয় সেজন্য কমিশনকে বলেছি। আমাদের দাবি, এসব মামলা প্রত্যাহার করা হোক। যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।
দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে আমরা সব কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে তাদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মীর হেলাল, নাগরিক ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, এম এ আজিজ, সাইফুল আলম, কাজী বেলাল, আবদুল মন্নান, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, কামরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলন শেষে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের নামের তালিকা নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান শাহাদাত।