চসিক নির্বাচন
রেজাউলের চেয়ে সম্পদ আর মামলায় এগিয়ে শাহাদাত
ইমরান এমি, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ১১:২৭ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার
ডা. শাহাদাত হোসেন ও রেজাউল করিম
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের চেয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের ধন-সম্পদ বেশি। নির্বাচন কমিশনের রিটার্নি কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া এই দুই প্রার্থীর হলফনামা পর্যালোচনায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরীর নিজ নামে যেখানে নগদ আছে মাত্র ১ লাখ টাকা সেখানে নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের নগদ রয়েছে ১৫ লাখ টাকা। তবে রেজাউল করিমের নামে কোনো মামলা না থাকলেও ডা. শাহাদাত হোসেনের কাঁধে ঝুলছে ৪৮টি মামলা।
এম রেজাউল করিম চৌধুরীর হলফনামা সূত্রে জানা যায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৭,০৮,৫৩৯ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৩২,২৭,০৯০ টাকা। তার নিজ নামে একটি ৪ লাখ টাকা দামের মোটরগাড়ি আছে। বিবাহ সূত্রে নিজ নামে ২০ তোলা ও স্ত্রীর নামে ৪০ তোলা স্বর্ণ আছে। বিবাহ সূত্রে নিজ নামে ১০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মূলধন ২ লাখ টাকা ও ফার্মের মূলধন ১০ লাখ ৬ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে সম্পত্তি মেসার্স চৌধুরী ইলেকট্রনিক্স বাবদ রয়েছে ২,৮০,০০০ হাজার টাকা, ফার্মের মূলধন ২,৫১,৫০০ টাকা ও ঋণ হিসেবে আছে ৪ লাখ টাকা। নিজের বার্ষিক আয় বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান থেকে ৪,১৪,০০০ হাজার টাকা, ব্যবসায় নিজের কোনো আয় না থাকলেও নির্ভরশীলদের আয় ৩,৫০,০০০ টাকা।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে রেজাউল করিম চৌধুরীর নিজের নামে কৃষি ও অকৃষি জমি নেই। তবে স্ত্রীর নামে দুই গন্ডা দুই কড়া অকৃষি জমি আছে। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ভূমির ওপর ১ লাখ মূল্যের আবাসিক ভবন রয়েছে। নিজ নামে চারটি অ্যাপার্টমেন্ট, যার মূল্য ১ কোটি ৯ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকা। তার নিজ নামে কোনো ঋণ বা দেনা নেই। চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাট এলাকার বহদ্দারবাড়ির হারুন অর রশীদ চৌধুরীর বড় সন্তান রেজাউল করিম চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বি.এ। মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি।
অন্যদিকে ডা. শাহাদাত হোসেনের জমাকৃত হলফনামা সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম বাকলিয়ার ডিসি রোড এলাকার আহমদুর রহমানের ছেলে শাহাদাত হোসেন। তিনি এমবিবিএস ডিগ্রিধারী একজন চিকিৎসক। তার বার্ষিক আয় ২০,৭৪,৬২৫ টাকা। এর মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ আয় ৩,৫৩,০২৫ টাকা আর পেশাগত আয় ১৭,২১,৬০০ টাকা। হলফনামায় তার নিজ নামে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৯ হাজার ২২৭ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নিজের নগদ ১৫ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমাকৃত অর্থ ৩৪,৪৭,২৭৭ টাকা।
শাহাদাতের নিজের নামে ১১,৮০,০০০ হাজার টাকা দামের ফিল্ডার-টয়োটা কার ও ২৭,২০,০০০ টাকা দামের ভি-৭৩ মডেলের পুরনো জিপ গাড়ি আছে। নিজের নামে ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার আছে। অন্যান্য সম্পদের মধ্যে ট্রিটমেন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিজের ব্যবসায়িক মূলধন ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৬০০ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ডা. শাহদাতের নিজ নামে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে নিজ নামে ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১৮ শতক এবং ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ১.৫ কাঠা অকৃষি জমি রয়েছে। ৬৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা মূল্যের আটতলা দালানের এক অংশের মালিকানা আছে। এছাড়া ৩৫ লাখ টাকা দামের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। উত্তরা ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ব্যাংকে ৩ কোটি ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে ২৯ লাখ ৮১ হাজার ১৩২ টাকা ঋণ আছে ডা.শাহাদাত হোসেনের।