সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভারত থেকে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসছে কাল, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০২:৫৭ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২১ রোববার আপডেট: ০৫:৩৪ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২১ রোববার
ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে আসছে সোমবার (২৫ জানুয়ারি)। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এছাড়া সরকার করোনায় এন্টিবডি টেস্টের অনুমতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি। আরও বলেন, ভ্যাকসিন নিতে সবাইকে উৎসাহিত করা হবে কিন্তু জোর করা হবে না।
রবিবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে করোনা ভ্যাকসিনের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নামে উৎপাদন করছে। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টা নাগাদ ভারতের পুনে থেকে একটি বিশেষ উড়োজাহাজে অক্সফোর্ড-অস্ট্রাজেনেকার ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ঢাকায় পৌঁছুবে।
**প্রথম দিন ভ্যাকসিন নেবেন নার্সসহ ২৫ জন, দ্বিতীয় দিন ৫০০
সেখানে তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে দেশে আসা ভারতের ২০ লাখ শুভেচ্ছা ভ্যাকসিন প্রয়োগে সব প্রস্তুতি সেরে নেওয়া হয়েছে। মোট ৭০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে রাখা ও বিতরণের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সরকারের নেয়া হয়েছে।
যে কোনো ওষুধ ও ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক মন্তব্য করে স্বাস্থমন্ত্রী বলেন, করোনার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও বিষয়টি হতে পারে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর কোনো ব্যক্তির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, করোনায় এন্টিবডি টেস্টের অনুমতি দিয়েছে সরকার।
ভ্যাকসিন প্রয়োগে ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদ বা উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের আগে দেয়া হবে কি-না, এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ভ্যাকসিন প্রয়োগে অবশ্যই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সেখানে প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেবার কথা উল্লেখ আছে। একারণে প্রথম দফায় অনেক রাজনীতিবিদ ভ্যাকসিন নিতে ইচ্ছুক হলেও দেয়া যাচ্ছে না। তবে, পর্যায়ক্রমে রাজনীতিবিদ, বয়স্ক ব্যক্তি থেকে শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী অন্যান্য আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে।”
রবিবার (২৪ জানুয়ারি) ভ্যাকসিন কার্যক্রম সম্পর্কে স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান জানান, গণভবন থেকে ২৭ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশে ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া ভ্যাকসিনেশন বা টিকাদান কর্মসূচিতে প্রথমদিনই নার্সের পাশাপাশি ভ্যাকসিন নিচ্ছেন আরও ২৫ জন। আর দ্বিতীয় দিনের তালিকাটি দীর্ঘ। ২৮ জানুয়ারি ৫০০ জনকে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে আসা করোনার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
ঢাকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন নেয়ার পর এক সপ্তাহ সবাইকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। যদি সবকিছু স্বাভাবিক থাকে তবে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পুরোদমে চলবে ভ্যাকসিন কার্যক্রম।
১৬ কোটিরও বেশি মানুষের এই দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ কোটি টিকা আনতে গত নভেম্বরে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশি ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে চুক্তি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
চুক্তিতে বলা হয়, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অনুমোদন দেওয়ার এক মাসের মধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট ৫০ লাখ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে বেক্সিমকোর মাধ্যমে। এরপর প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন দেবে। এভাবে মোট তিন কোটি ভ্যাকসিন কেনা হবে সেরাম থেকে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ জরুরি ব্যবহারে গত ৩ জানুয়ারি ভারতের ওষুধ প্রশাসন (ডিসিজিআই) অনুমোদন দেয়। এর আটদিনের মাথায় গত ১১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনো দিন ভারতের সেরাম থেকে ‘কোভিশিল্ড’ নামের ভ্যাকসিন দেশে আসবে। এ জন্য অনলাইনে নিবন্ধনও শুরু হবে ২৬ জানুয়ারি।