অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

দশম ও দ্বাদশের ক্লাস হবে নিয়মিত, অন্যান্য শ্রেণির সপ্তাহে একদিন

৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি চলছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০১:১০ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২১ রোববার   আপডেট: ০২:১৬ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২১ রোববার

দেশে আগামী মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলে প্রাথমিকভাবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে ক্লাসে আসবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি আরও বলেছেন, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েক মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর পাঠদান শেষে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

**অটো পাস বিষয়ে এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষা বিল-২০২১ সংসদে পাস

রবিবার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ তথ্য জানান। সে সময় তিনি আরও বলেন, যে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে ক্লাসে আসবে তারা পুরো সপ্তাহের পড়া যার যার ক্লাস থেকে বুঝে নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে নির্ধারিত দিনে আবার আসবে।

৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ
দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে
অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে এক দিন করে ক্লাসে আসবে
কয়েক মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর পাঠদান শেষে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা

দীপু মনি বলেন, যেহেতু শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। শ্রেণিকক্ষে তাদের স্বাভাবিকভাবেই গাদাগাদি করে বসতে হয়। এখনে উপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনার সুযোগ থাকবে না।

নিয়মিত করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি আরও জানান জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিষয়ক সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বছর যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তারা এক বছর সরাসরি ক্লাস করতে পারেনি। তারা অনলাইন ও টিভিতে অনেকে ক্লাস করেছে। কিছু শিক্ষার্থী একেবারেই ক্লাস করেনি। এ বছরের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়, তাহলে পরে কয়েক মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর পাঠদান শেষে পরীক্ষা নেওয়া যাবে।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির ঘোষণা আছে। সরকার গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিকের এবং ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকের রেকর্ড করা ক্লাস সংসদ টেলিভিশনে প্রচার করছে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর মনে করছে এই পদ্ধতিতে কেবল ক্লাস অনুসরণ করা যায়, শিক্ষার্থীরা সরাসরি অংশ নিতে পারে না। এ কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই আস্তে আস্তে এই প্রক্রিয়া থেকে সরে গেছে।

করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একই সঙ্গে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এ গাইডলাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিকল্পনা করা হয়েছে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার।

  • বসতে হবে দূরত্ব রেখে
  • বেঞ্চে বসার সময় দুই শিক্ষার্থীর মাঝে দূরত্ব থাকবে তিন ফুট। 
  • বেঞ্চের দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুটের কম হলে প্রতিটিতে একজন করে শিক্ষার্থী বসতে পারবে।
  • দৈর্ঘ্য পাঁচ থেকে সাত ফুট হলে প্রতি বেঞ্চে দুজন করে বসতে পারবে। 
  • স্কুলের প্রাঙ্গণ ও খোলা জায়গায় চলাফেরা করতে হবে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রথম ১৫ দিন যেকোনো একটি শ্রেণির কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। ষষ্ঠ থেকে দশম পর্যন্ত সব শ্রেণির কার্যক্রম একই সঙ্গে চালু করতে হলে কয়টি পালা (শিফট) প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিটি পালার জন্য শিক্ষাঘণ্টা কতটুকু হবে, তাও নির্ধারণের পরিকল্পনা করতে হবে। প্রয়োজনে দূর শিখন ও সপ্তাহ বিভাজন করে একেক দলকে একেক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনার ব্যবস্থা করতে হবে

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর প্রথম দুই মাসের মধ্যে এমন কোনো আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা বা মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা যাবে না, যা শিক্ষার্থীর ওপর চাপ তৈরি করতে পারে।

  • মাস্ক ছাড়া স্কুল নয়
  • স্কুলে প্রবেশের আগেই সবার তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব দৃশ্যমান স্থানে ‘নো মাস্ক, নো স্কুল’ লিখে তা সবাইকে মানার নির্দেশ দিতে হবে। 
  • প্রতি ৩০ জন মেয়ে শিক্ষার্থীর জন্য একটি এবং ৬০ জন ছেলে শিক্ষার্থীর জন্য একটি, এই অনুপাতে টয়লেট বা শৌচাগারের সংখ্যা বিবেচনা করতে হবে। 
  • দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। 
  • ক্লাসের পড়ালেখা সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে।