অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রতিবেদন

৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩০ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৫:৪৭ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশে দশ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘এডুকেশন ওয়াচ ২০২০-২১ সমীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন’ এ জানা গেছে দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চায়। সরকার টেলিভিশন, রেডিও এবং অনলাইনের মাধ্যমে চলা দূরশিক্ষণ শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখলেও এসব মাধ্যমে যুক্ত হতে পারেনি ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।

স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষের পরিসংখ্যান
শিক্ষার্থী ৭৫ শতাংশ
অভিভাবক ৭৬ শতাশ
শিক্ষা কর্মকর্তা ৭৩ শতাংশ

এছাড়া ৭৬ শতাংশ অভিভাবক ও ৭৩ শতাংশ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে ৫৮ শতাংশ শিক্ষক ও ৫২ শতাংশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, উপযুক্ত সতর্কতা অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব হলে তবেই স্কুল খোলা যেতে পারে।

৬২ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করা দরকার। ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর মতামত, যেসব বিষয়ে পড়ানো হয়নি তা আগে পড়ানো হোক।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার এই তথ্য তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। দেশের আটটি বিভাগের আটটি জেলার ২১ উপজেলা নির্বাচন করা হয় এই গবেষণার জন্য। 

সমীক্ষায় মোট ২ হাজার ৯৯২ জন উত্তরদাতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী, ৫৭৮ জন শিক্ষক, ৫৭৬ জন অভিভাবক রয়েছেন। অন্যরা জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়েছে।

গণস্বাক্ষরতা অভিযান মনে করে, স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে ধাপে ধাপে স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ঘোষণা আসা প্রয়োজন। শুরুতে দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং পরবর্তীতে চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে।

ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে এ কাজগুলো করা যেতে পারে বলেও প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে। প্রথমে করোনার সংক্রমণ নেই বা একেবারে কম থাকা গ্রামীণ এলাকার স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এরপর মার্চ থেকে বড় বড় শহরের স্কুলগুলো খোলার সুপারিশ করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৭ দশমিক নয় শতাংশ শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় ডিভাইসের অভাবে শিক্ষাবঞ্চিত হয়েছে। অনলাইন ক্লাস আকর্ষণীয় না হওয়ায় ১৬ দশমিক পাঁচ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশগ্রহণ করেনি।

গণস্বাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, করোনার প্রভাবে ঝরে পড়া, অনুপস্থিতি, বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম বাড়বে। বিদ্যালয় খোলার পর বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, সে বিষয়েও মতামত এসেছে। বিদ্যালয়গুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, আসনবিন্যাস পরিবর্তন করে এক বেঞ্চে দুজন করে বসানো, পালা করে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে মতামত এসেছে।

অনুষ্ঠানে গণস্বাক্ষরতা অভিযান’র নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মঞ্জুর আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি আছে।