সৈন্যদের আজব খাবার
শেখ আনোয়ার
প্রকাশিত: ০৬:২৯ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার
যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য সৈন্যদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নস্থানে যেতে হয়। যুদ্ধের অবস্থা বুঝে আবার অবস্থান করতে হয় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। যাত্রাপথে কাঁধে বহন করতে হয় অস্ত্র এবং খাবার পানীয়সহ প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র। যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যদের মধ্যে অনেক সময় দেখা যায় খাবারের সমস্যা। আর এর ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে অনেক সময় তারা খাবারের অভাবে অসুস্থ ও নির্জীব হয়ে পরেন।
সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটসের মার্কিন সেনাবাহিনীর সোলজার সিস্টেম সেন্টারের অঙ্গসংগঠন কমব্যাট ফিডিং ডাইরেক্টরেক্ট সৈন্যদের খাবার সমস্যার সমাধানের জন্য এক ধরনের শুকনো খাবার উদ্ভাবন করেছেন। সবচেয়ে মজার ও বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এই শুকনো খাবার নোংরা পানি কিংবা নিজেদের প্রস্রাব দিয়েও ভেজানো যায়। খাবারগুলো এমন একটি থলির মধ্যে সংরক্ষিত থাকে, যা শতকরা ৯৯ দশমিক ৯ ভাগ ব্যাকটেরিয়া ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ পরিশোধন করতে সক্ষম। কাজেই যুদ্ধের সময় সৈন্যরা যে কোনো ধরনের নোংরা পানি কিংবা পানির অনুপস্থিতিতে নিজেদের প্রস্রাব ব্যবহার করলেও সহজ এই পরিশোধনের ফলে তাদের আর অতিরিক্ত পানি বহন করার প্রয়োজন পড়বে না এবং পিপাসায় কাতরাতে হবে না।
একটি প্লাস্টিকের পাতলা আবরণের ঝিল্লি ও আঁশের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫ ন্যানোমিটার চওড়া ছিদ্রের মাধ্যমে নোংরা পানি বা প্রস্রাব থলির ভেতর প্রবাহিত হয়ে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করবে। এর ফলে খাবারের মধ্যে শুধু পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ পানিই পৌঁছাবে। তলানিতে জমে থাকবে ব্যাকটেরিয়া। খাবার হিসেবে থলিতে থাকবে মুরগির মাংস ও চাল। শুকনো খাবারগুলো নোংরা পানি অথবা প্রস্রাবকে সহজেই পরিশোধন করে ফেলবে। সৈন্যদের যেখানে একদিনের খাবার হিসেব (তিন বেলার খাদ্য) প্রায় সাড়ে ৩ কিলোগ্রাম ওজনের খাবার সরবরাহ করা হতো, সেখানে এই নতুন আবিষ্কৃত পদ্ধতিতে খাবারে ওজন হবে মাত্র শুন্য দশমিক ৪ কিলোগ্রাম অর্থাৎ ৪০০ গ্রাম। শুধু তাই নয়, ওই খাবারের পাশাপাশি তারা ইনডেস্ট্রাকটিবল স্যান্ডউইচ অর্থাৎ অবিনশ্বর স্যান্ডউইচ নামে আরো একটি মজার খাবারও তৈরি করেছেন। যেটি তিন বছর পর্যন্ত তাজা অবস্থায় থাকবে। সৈন্যদের জন্য এই ধরনের সহজ ও সুন্দর খাবার আজবই বটে।
শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।