অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সুন্দরবনে মধুর চাকে দোল খায় ৪ হাজার মৌয়ালের স্বপ্ন

এসএম শহীদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা 

প্রকাশিত: ০৪:৪৮ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৪:৫৭ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার

সুন্দরবনের মধু দেশের ঐতিহ্য। এখানকার খাঁটি মধুর ঘ্রাণ ও স্বাদ অতুলনীয়। মধু প্রিয়দের কাছে সুন্দরবনের খাঁটি মধুর কদর অন্যরকম। এ অঞ্চলে ৪ হাজার ১৩ জন পেশাদার মৌয়াল সুন্দরবন হতে মধু আহরণ করে। মধুর চাকে দোল খায় তাদের স্বপ্ন।

সুন্দরবনে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া গরান, খলিষা, কেওড়া ও বাইন গাছের ফুল হতে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে। খলিষা ফুলের মধু সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের। দেখতে সাদা, খেতে সুস্বাদু।
 
সাতক্ষীরা সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) এমএ হাসানের সাথে কথা বলে জানা গেলো, প্রতি বছরের এপ্রিল ও মে দুই মাস মৌয়ালরা সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করেন। ২০২০ সালে সাতক্ষীরা রেঞ্জে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৫০ কুইন্টাল। কিন্তু মধু আহরিত হয়েছে ২ হাজার ৬ কুইন্টাল। আর মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৬৫ কুইন্টাল। মোম আহরিত হয়েছে ৬০২ কুইন্টাল। এ সময়কালে রাজস্ব উপার্জিত হয় ১৫ লাখ ৪ হাজার ৮৭৫ টাকা। 

সুন্দরবনে মৌচাক হতে পর্যাপ্ত মধু আহরণের জন্য মৌয়ালদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কারণ উপযুক্ত সময় ছাড়া মৌচাক থেকে পর্যাপ্ত মধু পাওয়া যায় না। তাছাড়া মধু আহরণের সময় যাতে মৌমাছি আঘাতপ্রাপ্ত না হয় সেদিকে সর্বোচ্চ নজর রাখতে হয়। 

এমএ হাসান আরও জানান, জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাবে গাছে ফুল ভালো না হলে মধু উৎপাদন ব্যাহত হয়। কারণ ফুলের সাথে মধু উৎপাদনের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। পরিচর্যা ও সংরক্ষণের ফলে ইদানিং সুন্দরবনে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে মধু উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
শ্যামনগরে মধু নিয়ে কাজ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ এনভায়ারমেন্ট ডেভলপমেন্ট সোসাইটি। সংস্থাটির পরিচালক মাসুদুর রহমান মুকুল বলেন, প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত সুন্দরবনের মধু উৎকৃষ্টমানের। কিন্তু উৎপাদিত মধু সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণ করা গেলে বিদেশে বেশি দামে বিক্রি করা যাবে। সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে দেশ। তিনি নিউজিল্যান্ডে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ভানুকা মধুর কথা উল্লেখ করে বলেন, পৃথীবির সবচেয়ে দামি মধু এটি। এ মধু প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবন অঞ্চলে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠলে অধিক কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিদেশে মধু রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।