অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বাংলাদেশকে ৪ ডলারে করোনার ভ্যাকসিন বিক্রি করবে সেরাম

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৪:২৫ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রতি ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ৪ ডলারে বিক্রি করা হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়াবে ২৩০.৯৪ টাকা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের চেয়েও ৪৭ শতাংশ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে বাংলাদেশের। ভারতে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম পড়ছে ২.৭২ ডলার।

১৬ কোটিরও বেশি মানুষের এই দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ কোটি টিকা আনতে গত নভেম্বরে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশি ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

চুক্তিতে বলা হয়, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অনুমোদন দেওয়ার এক মাসের মধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট ৫০ লাখ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে বেক্সিমকোর মাধ্যমে। এরপর প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন দেবে। এভাবে মোট তিন কোটি ভ্যাকসিন কেনা হবে সেরাম থেকে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ জরুরি ব্যবহারে গত ৩ জানুয়ারি  ভারতের ওষুধ প্রশাসন (ডিসিজিআই) অনুমোদন দেয়। এর আটদিনের মাথায় গতকালই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,  ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনো দিন ভারতের সেরাম থেকে ‘কোভিশিল্ড’ নামের  ভ্যাকসিন দেশে আসবে। এ জন্য অনলাইনে নিবন্ধনও শুরু হবে ২৬ জানুয়ারি। ভ্যাকসিন বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হলেও বলা হয়নি, সেরাম ইনস্টিটিউট কত দামে বাংলাদেশের কাছে ভ্যাকসিন বিক্রি করছে সে বিষয়ে জানানো হয়নি। 

অবশেষে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত তিনটি সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে রয়টার্স।

রয়টার্স বলছে, সেরাম ভারতে দুইশ রুপি বা ২.৭২ ডলারে প্রতিডোজ করোনা ভ্যাকসিন বিক্রি করবে। আর বাংলাদেশের কাছে প্রতিডোজ ভ্যাকসিন ছাড়তে পারে ৪ ডলার বা ৩৩৯.৬২ টাকায়।

সোমবার দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি মাসের ২১ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে সেরামের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেশে এসে পৌঁছাবে। আর ফেব্রুয়ারির  শুরু থেকে সেই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করা যাবে। প্রথম ধাপে ভ্যাকসিন পাবেন দেশের ৫০ লাখ মানুষ।

ভ্যাকসিন বিতরণ ও প্রয়োগ বৃত্তান্ত-
ভারতের সেরাম থেকে কোভিশিল্ড আসছে ২১-২৫ জানুয়ারি।
অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন ২৬ জানুয়ারি।
ভ্যাক্সিন আনছে বেক্সিমকো ফার্মা। 
ভ্যাকসিন দুই দিন বেক্সিমকো ফার্মার সংরক্ষণাগারে থাকবে। 
এরপর পৌঁছে যাবে বিভিন্ন জেলায়।
জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন নেবে স্বাস্থ্য বিভাগ।
শুরুতে ভ্যাকসিন পাবেন কিছু স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক, পর্যবেক্ষণে রাখা হবে সাত দিন।

প্রতি মাসে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসবে। এইভাবে ৬ মাসে ৩ কোটি ভ্যাকসিন আসবে। দেওয়া হবে দেড় কোটি মানুষকে। 

**৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসছে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে

**ভ্যাকসিনের অনলাইন নিবন্ধন ২৬ জানুয়ারি থেকে

কেন্দ্রের তালিকা-
ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জেলা/সদর হাসপাতাল, সরকারি/বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ও বক্ষব্যাধি হাসপাতাল।
 

ভ্যাকসিন দিচ্ছেন কারা-
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের দল ভ্যাকসিন দেবে। একটি দলে ছয়জন থাকবেন। তারা হলেন দুজন টিকাদানকারী (নার্স, সাব–অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও পরিবারকল্যাণ সহকারী) এবং চারজন স্বেচ্ছাসেবক। 

সারা দেশে ৭ হাজার ৩৪৪টি দল কাজ করবে। একটি কেন্দ্রে এক দিনে ১০০ থেকে ১৫০ জন মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কোন কেন্দ্রে কবে কারা ভ্যাকসিন পাবেন, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে।

**সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করে ভ্যাকসিন নিতে হবে

**দেশে করোনার ভ্যাকসিন পাচ্ছেন কারা কখন

**করোনার ভ্যাকসিনে যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে

**দেশে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন প্রয়োগে চূড়ান্ত অনুমোদন ওষুধ প্রশাসনের

**ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা, ১৮ জানুয়ারির আগেই সিদ্ধান্ত জানাবে ঢাকা

কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন-

এদিকে ৬ জানুয়ারি করোনা টিকার বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ ফাইজার–বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন নিতে চায় কি না। এই ভ্যাকসিন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখতে হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশ কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের ভ্যাকসিন নিতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। এই ভ্যাকসিন রাখার প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর ব্যাপারে ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে।