ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা
ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা নেই
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩৫ এএম, ৬ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার আপডেট: ০২:০৬ এএম, ৬ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার করোনার ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারত সরকার কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চাইলে যে কোনো দেশে টিকা রপ্তানি করতে পারবে। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক এই ঘোষণা দিয়েছে।
এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে ও হিন্দুস্তান টাইমস। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে জিটুজি ব্যবস্থাপনায় করোনার টিকা পাবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেন-
'আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার কোভিড ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। এ কথাটা পরিষ্কার হওয়া উচিত। যখন আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কথা বলি, তখন তিনটি মন্ত্রণালয়ের প্রসঙ্গ এসে যায়। এর একটি হলো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয় টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও নিষেধাজ্ঞা আনেনি। বিপিআই আই পি, এটাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি দপ্তর। এই দপ্তরটিও নিষেধ করেনি। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেডও। কাজেই আমি আমাদের মিডিয়ার বন্ধুদের বলব, যখন এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য আপনাদের কাছে আসে, তা প্রচার থেকে বিরত থাকবেন আপনারা।'
রাজেশ ভূষণ আরও বলেন-
ভ্যাকসিন উৎপাদানকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট ও ভারত বায়োটেক যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, কোভিড ভ্যাকসিনে সবার অধিকার রয়েছে। সবাই তা পাবে। এর অর্থ আমি স্পষ্ট করে বলতে চাইছি, ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপরে সরকার ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।'
ভারত সরকারের আনুষ্ঠানিক এই ঘোষণায় বাংলাদেশের দ্রুত ভ্যাকসিন পাওয়া না পাওয়ার অনিশ্চয়তার অবসান হয়েছে। এদিকে ভারত থেকে সব দেশেই করোনা ভ্যাকসিন রপ্তানির অনুমোদন আছে, এ কথা জানিয়ে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী আদর পূনাওয়ালা টুইট করেন মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি)।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ সংগ্রহের জন্য গত ৫ নভেম্বর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে সরকার। ভারতে ভ্যাকসিনের জরুরি অনুমোদন পাওয়ায় বাংলাদেশও ভ্যাকসিনপ্রাপ্তিতে আরও অগ্রসর হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞায় শিগগিরই বাংলাদেশের ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে বড় ধরণের অনিশ্চয়তা তৈরি হয় সোমবার। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
আরও পড়ুন**ভারত থেকে ভ্যাকসিন রপ্তানিতে বাধা নেই: জানালেন সেরামের সিইও
**ভ্যাকসিনের আমদানি ও ব্যবহারের অনুমোদন দিলো ওষুধ প্রশাসন
এরপর বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বেক্সিমকোর ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে কোথাও বিভ্রান্তির কিছু নেই। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, দুই দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে করা চুক্তিটির বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা এখানে কার্যকর হবে না। চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়েই বাংলাদেশ করোনার ভ্যাকসিন আসবে।
**ভ্যাকসিন নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই, বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
**ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা, অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ
একইদিনে,সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশের দিনই ভ্যাকসিনের আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন। এরপর মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে ১৩৭ পৃষ্ঠার নীতিমালা চূড়ান্ত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।