ব্ল্যাক আউট আক্রান্ত সৌরভ, কী এটা?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪৬ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার আপডেট: ০৩:৩৮ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার
সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ চোখে ঝাপসা দেখলেন। বনবন করে মাথা ঘুরছে। টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ে গেলেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, একে বলা হয় ‘ব্ল্যাক আউট’।
গেল শনিবার ভারতের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলির এ দশা হয়। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হন তিনি। অগত্যা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে তার হার্টে স্টেন বসানো হয়েছে। এখন অবস্থা স্থিতিশীল।
তো কেন এ ব্ল্যাক আউট হয়? ভারতীয় চিকিৎসক ডা. অসীম কুমার চক্রবর্তী বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হঠাৎ করে এটি হয়। প্রথমে মাথা ঘোরে, পরে চোখে ঝাপসা দেখেন। এরপর অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। অন্তত কয়েক সেকেন্ড সেই অবস্থায় থাকেন। মূলত মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডে অক্সিজেন ঠিকভাবে না পৌঁছলে এমনটা ঘটে।
তিনি বলেন, একাধিক কারণে ব্ল্যাক আউট হতে পারে। তবে এটি মানেই মারাত্মক বিপদ নয়। অনেক সময় হাইপার টেনশন (উচ্চ রক্তচাপ) থেকে প্রেসার বেড়ে কিংবা কমে গেলে এ উপসর্গ দেখা দেয়। এছাড়া হাইপার গ্লাইসেমিয়া বা ডায়াবেটিস মেলিটাস থেকে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
ব্ল্যাক আউটের সঙ্গে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সম্পর্ক
অসীম কুমার জানান, শারীরিক নানা সমস্যার কারণে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। মায়োপ্যাথি, হৃদপেশিতে আঘাত, অক্সিজেন প্রবাহ কমে গেলে সিনকোপাল অ্যাটাক হয়। বিভিন্ন কারণে হৃৎপিণ্ডের ধমনীর রক্ত প্রবাহে অবরোধের ফলে কোনও ব্লক হলে এটি হয়। মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে টিউমার বা সেরিব্রাল ইস্কেমিয়া থেকে এমনটা ঘটতে পারে।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণ
# বুকে অসহ্য চাপ, মোচড়ানো, অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব।
# হাত, পা, গলা, পিঠ, চোয়াল বা পাকস্থলির ওপরের অংশ ব্যথা অথবা অস্বস্তি।
# ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস।
# বমি বমি ভাব, বমি হওয়া।
# মাথা ঝিমঝিম করা।
# খুব ঘামতে থাকা।
# ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা।
# দুর্বলতা বা ক্লান্তি বোধ করা।
ব্ল্যাক আউটের পর করণীয়
এ প্রসঙ্গে ডা. অসীম চক্রবর্তী বলেন, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ব্ল্যাক আউটের পরবর্তী এক ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিলম্ব হলে বিপদ ঘটতে পারে। হাসপাতালে নেয়ার সময় অক্সিজেন ও স্যালাইন দিতে হবে। শুরুতেই লবণ, চিনি, লেবুর পানি খাওয়ানো উচিত। প্রাথমিক পরীক্ষার পর ইসিজি, ট্রপ টি টেস্ট করতে হয়। হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হতে এসব করা দরকার। এরপর কার্ডিয়াক এনজাইমের ওপর বিভিন্ন নিরীক্ষা করতে হয়। অতপর অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির সিদ্ধান্ত নিতে হয়।