৫০ লাখ ভ্যাকসিন কিনতে আজ ৬০০ কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০১:৩৬ এএম, ৩ জানুয়ারি ২০২১ রোববার আপডেট: ০৪:১৮ পিএম, ৩ জানুয়ারি ২০২১ রোববার
করোনার ভ্যাকসিন কেনার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেছে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর। ভারত থেকে ভ্যাকসিন কেনার জন্য অর্থছাড়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয় দিন কয়েক আগে। সেই তৎপরতার ধারাবাহিকতায়, ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন কেনার জন্য রবিবার (৩ জানুয়ারি) ৫০ লাখ ভ্যাকসিনের দাম বাবদ ৬০০ কোটি টাকা ব্যাংকে সেরাম ইন্সটিটিউটের অ্যাকাউন্টে জমা করছে সরকার। বিনিময়ে সেরাম ইন্সটিটিউট একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে। এই ৫০ লাখ হলো প্রথম চালানের ভ্যাকসিন।
বাংলাদেশ সরকার, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী এই অর্থ জমা দেওয়া হচ্ছে। অধিদপ্তর বলছে, সেরাম ইন্সটিটিউট অগ্রিম টাকা হিসেবে এটা নিচ্ছে, বাকি টাকা ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করার পর দেয়া হবে।
বাংলাদেশ সরকার-ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট-বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চুক্তি:
৫০ লাখ ভ্যাকসিনের জন্য ৬০০ কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ
পরবর্তী ধাপ হলো বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিশেষ কমিটির অনুমোদন
চুক্তি অনুযায়ী এই টাকা অগ্রিম
ভ্যাকসিন সরবরাহের পর বাকী টাকা পাবে সেরাম ইন্সটিটিউট
আগামী জুনের মধ্যে ভ্যাকসিন না আসলে অগ্রিম টাকা ফেরত পাবে বাংলাদেশ
ছয় মাসে ছয়টি চালানে ভ্যাকসিন আসবে, প্রথম চালান চলতি মাসেই
প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম ৪২৫ টাকা
প্রতি চালানে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন আসবে
শনিবার (২ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন**চলতি মাসেই আসছে ভ্যাকসিন, প্রতি ডোজ ৪২৫ টাকা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যুক্তরাজ্য ও ভারতে অনুমোদনের পর বাংলাদেশে ভ্যাকসিন নিয়ে আসতে এখন আর কোনো বাধা নেই।
আরও জানা গেছে, এই ভ্যাকসিনের জন্য দেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিশেষ কমিটির অনুমোদন পাওয়া যাবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজ প্রস্তুত আছে। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম যদি আগামী জুনের মধ্যে ভ্যাকসিন দিতে না পারে, তাহলে বাংলাদেশ অগ্রিম এই টাকা ফেরত পাবে।
আরও পড়ুন**দেশে সাড়ে ৪ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন মিলবে মে-জুনের মধ্যে
শুক্রবার (১ জানুয়ারি) ভারতে জরুরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দেওয়ার পরপরই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সই হওয়া চুক্তিতে বলা আছে, বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়ার পরই সেরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দেবে। ছয় মাসে ছয়টি চালানে এই ভ্যাকসিন আসবে। প্রতি চালানে ৫০ লাখ করে টিকা আসবে।
শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, 'অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন সর্বোচ্চ ৫ ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ৪২৫ টাকায় পাওয়া যাবে। এবং চলতি মাসেই ভ্যাকসিনের প্রথম চালান দেশে আসবে।দেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিনের অর্ডার নিশ্চিত করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে আরও অর্ডার দেওয়া হবে।
ভ্যাকসিন দেয়া হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে
তালিকা তৈরির পদ্ধতি প্রায় চূড়ান্ত
সুই-সিরিঞ্জসহ আনুষঙ্গিক জিনিস কেনার কাজ চলছে
ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবেন ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক
প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে শিগগিরিই
প্রথম চালানের ভ্যাকসিন কাদের প্রথম দেয়া হবে, সে বিষয়ে তালিকা প্রণয়নে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভ্যাকসিন পাবেন,তার তালিকা তৈরির পদ্ধতি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। তবে আগেভাগে তালিকা প্রকাশ করতে চায় না স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সুই-সিরিঞ্জসহ আনুষঙ্গিক জিনিস কেনার কাজ চলছে। ভ্যাকসিন প্রয়োহের জন্য সারা দেশে ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করবেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে।