অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা 

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০৪ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৫ রোববার  

মায়ানমারে চলমান সংঘাত, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা, বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত হওয়াসহ নাফ নদের তীরে সাধারণ মানুষের জীবিকা ব্যাহত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে তা আরো বড় নিরাপত্তা হুমকিতে রূপ নিতে পারে।’ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রোববার (২০ এপ্রিল) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল জ্যাঁ-পিয়েরে লাক্রোয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, তার এই সফর রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের নতুন আশা জুগিয়েছে।

সাক্ষাতের সময় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি নারী নিয়োগের আহ্বান জানান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক শান্তিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশি নারীদের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিশেষভাবে উৎসাহ দিচ্ছি।

বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে শান্তিরক্ষী (সেনা ও পুলিশ) প্রেরণকারী দেশগুলোর শীর্ষ তিনটির একটি। বর্তমানে ১১টি সক্রিয় মিশনের মধ্যে ১০টিতে ৫,৬৭৭ জন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন।

জাতিসংঘ আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল শান্তিরক্ষায় আরো বেশি নারী অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে জাতিসংঘের নীতির কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আমরা নারীদের নির্দিষ্ট ভূমিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। শান্তিরক্ষার সব পর্যায়ে নারীদের নিয়োগে জাতিসংঘ সমর্থন দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করতে বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। ‘পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমে’ (পিসিআরএস) বাংলাদেশের পাঁচটি ইউনিট র‍্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট পর্যায়ে রাখার প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

ড. ইউনূস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায়, সদর দপ্তর এবং মিশন উভয় পর্যায়ে বাংলাদেশিদের নেতৃত্বমূলক অবস্থানে প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির পক্ষে মত দেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানান জ্যাঁ-পিয়েরে লাক্রোয়া।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী যাচাই প্রক্রিয়া (ভেটিং) কঠোরভাবে অনুসরণ করে এবং প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহি বিষয়ে জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে মানবাধিকার সুরক্ষা জোরদারে আগ্রহী।’

প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়, বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে আগামী ১৩ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেবে।