অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সম্পর্ক আরও গভীর করবে ঢাকা-বেইজিং, বিনিয়োগের সঙ্গে বাড়বে বিনিময়

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:১৪ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২৫ বৃহস্পতিবার  

ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক আরও গভীর করতে সম্মত হয়েছে চীন ও বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেবে এশিয়ার পরাশক্তি দেশটি।

কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুই দেশ বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, মানুষে মানুষে বিনিময় বৃদ্ধিতেও সম্মত হয়েছে।

চীনের উপকূলীয় শহরে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে দেশটির নির্বাহী ভাইস-প্রিমিয়ার ডিং জুয়েশিয়াং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।

ডিং জুয়েশিয়াং বলেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আপনার সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। চীন আশা করে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ ও বিকশিত হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা এক-চীন নীতির প্রতি দেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগদানকারী প্রথম দক্ষিণ এশীয় দেশ হিসেবে ঢাকা গর্বিত।

ঢাকা উন্নয়ন ও জীবিকা নির্বাহের প্রকল্পগুলোতে চীনের সহায়তা কামনা করে এবং বাংলাদেশের জন্য চীনা ঋণের সুদের হার ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে এক বা দুই শতাংশ করার আহ্বানও জানায়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে চীনা অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে প্রতিশ্রুতি ফি মওকুফেরও দাবি জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা তৈরি পোশাক, বৈদ্যুতিক যানবাহন, হালকা যন্ত্রপাতি, উচ্চ প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক্স, চিপ উৎপাদন এবং সৌর প্যানেল শিল্পসহ চীনা উৎপাদন শিল্পের স্থানান্তর সহজতর করার জন্য বেইজিংয়ের সাহায্য চেয়েছেন।

উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াং বলেছেন, বেইজিং ২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করবে। বেইজিং ঢাকার অঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতেও আগ্রহী।

তিনি বলেছেন, চীন বাংলাদেশের মংলা বন্দর এবং দাশেরকান্দি পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টায় অর্থায়ন করবে।

উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন গত বছর বাংলাদেশ থেকে আম আমদানির জন্য একটি প্রোটোকল স্বাক্ষর করেছে। বিশাল বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমাতে চীন বাংলাদেশ থেকে কাঁঠাল, পেয়ারা এবং অন্যান্য জলজ পণ্য আমদানি করবে।

তিনি বলেন, চীন সরকার এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আরও বৃত্তি দেবে। কয়েক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করছে।

ডিং জুয়েশিয়াং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জন্য চারটি সমুদ্রগামী জাহাজ কেনার জন্য চীনা তহবিলের আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের লক্ষ্যে বেইজিং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপকেও উৎসাহিত করবে।

অধ্যাপক ইউনূস চীনা নেতৃত্বকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি বাংলাদেশ-চীন অংশীদারিত্বের ক্রমবর্ধমান গভীরতার আরেকটি মাইলফলক। 'আসুন আমরা দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার একটি নতুন যুগের সূচনার জন্য একসঙ্গে কাজ করার সংকল্প করি।'

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি, রেল ও সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।