দ্বিতীয় দফায় ১০০০ রোহিঙ্গা যাচ্ছে ভাসানচরে
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার আপডেট: ০১:৩২ এএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ সোমবার
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দলকে আগামী ২৯ ডিসেম্বর ভাসানচরে নেয়া হচ্ছে। তাদের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ দফায় বঙ্গোপসাগরের আলোচিত চরে যাবে ১০০০ রোহিঙ্গা। ইতিমধ্যে তাদের স্থানান্তরের এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে প্রথম ধাপে ১৬০০ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেয়া হয়। সেবার জাহাজে করে তাদের সেখানে নেয়া হয়। এবারো সেরকম কিছুতে নতুন আবাস্থলে যেতে পারে তারা!
মিয়ানমার সরকার মদদপুষ্ট সেনাবাহিনীর নির্যাতনে সাগর পথে নৌকাযোগে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে সংখ্যালঘু মুসলিমরা। মূলত তারাই রোহিঙ্গা নামে পরিচিত।
একে একে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নেয় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা। তাতে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেই প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
তবে শুরুতে সাগরের ভেতরে জনমানবহীন ওই চরে আশ্রয় নিতে রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহের কারণে দ্রুত তাদের সেখানে স্থানান্তর সম্ভব হয়নি।
নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে সরকার। মেঘনা মোহনার দ্বীপে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সর্বপ্রথম নমুনা হিসেবে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়। এরপর গেল ৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি চরটি দেখতে যান।
তারা ফেরার পর তাদের কথা শুনে রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসানচরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারপর স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার থাকা এবং রান্নার ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, খেলার মাঠ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের সঙ্গে জীবিকা নির্বাহের সুযোগও তৈরি করা হয়েছে।
তবে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আপত্তি রয়েছে। সাগরের মাঝে বিচ্ছিন্ন ওই দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে রোহিঙ্গারা কতটা নিরাপত্তা পাবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।
কিন্তু ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত ১৭৬ বছরের মধ্যে কোনো ঘূর্ণিঝড় এ দ্বীপের ওপর দিয়ে অতিক্রম করেনি।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, শরণার্থীদের তুলনামূলক ভালোভাবে থাকার জন্য যে সুযোগ-সুবিধাগুলো ভাসানচরে রাখা হয়েছে, সেগুলো কক্সবাজারের ক্যাম্পে নেই।