১১ বছরে সড়কে ঝরেছে ১ লাখ ৫ হাজার ৩৩৮ প্রাণ
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৪ সোমবার
একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। আর এ কান্না যেন থামছেই না। গেল ১১ বছরে দেশে ৬০ হাজার ৯৮০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ১ লাখ ৫ হাজার ৩৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সড়ক মন্ত্রণালয়ে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন ওবায়দুল কাদের। আর এ সময়ে পরিবহনে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য, সড়কে চাঁদাবাজি, মানসম্মত গণপরিবহন নামানো, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে চরমভাবে তার ব্যর্থতার কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন হলেও সড়ক পরিবহন সেক্টরে ওবায়দুল কাদেরের প্রেতাত্মারা এখনও বিভিন্ন পদে বসে আছে। সে কারণেই মূলত তারা যানজট ও দুর্ঘটনা কমানোর পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়কে ভয়াবহ যানজট ও বিশৃঙ্খলা থামাতে না পারলে বর্তমান সরকারকে ভয়াবহ খেসারত দিতে হবে। তাই পরিবহন খাত জঞ্জালমুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই। আর এ কাজে আপাদমস্তক সংস্কার প্রয়োজন। অন্যান্য জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ খাতের মতো পরিবহন খাতেও সে কারণে সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, শেখ হাসিনা যাওয়ার পরে ২ মাস হয়ে গেলো তা-ও কেন দ্রব্যমূল্যের দাম কমলো না? পরিবহন খাত কেন উন্নত হলো না?
তিনি আরও বলেন, সড়কে-রেলে যা হচ্ছে তা হত্যাকাণ্ড। এগুলোকে দুর্ঘটনা বলা যায় না, কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। মূল কথা হলো, সড়কে দুর্ঘটনা হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। তাই দুর্ঘটনা ঘটছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বিগত ২০১৪ সাল থেকে চলতি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০ হাজার ৯৮০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লাখ ৫ হাজার ৩৩৮ জন নিহত ও ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে গণপরিবহন সংকটে মোটরসাইকেলে যাতায়াতের কারণে ২০ হাজার ১২৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩৭ হাজার ৫৫৩ জন নিহত ৪৬ হাজার ১৬৭ জন আহত হয়েছেন। যা মোট নিহতের ৩৯.৬৫ শতাংশ।
এ ছাড়া মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩১.৭৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৭.৫৯ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ২২.৫৪ শতাংশ ফিডার রোডে হয়েছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
একইসঙ্গে সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৪৪ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.৮২ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৮৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে বলেও জানায় সংগঠনটি।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে গণপরিবহন বিশ্লেষক আবদুল হক, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি তাওহিদুল হক লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।