অপহৃত ৫ জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০২৪ বুধবার
মাছ ধরতে গিয়ে নাফ নদীতে অপহৃত বাংলাদেশি পাঁচ জেলেকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার জল সীমানায় নাফ নদীর মাঝখানে টহলরত বিজিবির কাছে নৌকাসহ জেলেদের হস্তান্তর করা হয়। এর আগে গত সোমবার মাছ শিকারে যাওয়া জেলেদের একটি নৌকা বিকল হলে, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের ধরে নিয়ে যান বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
বিজিবি জেলেদের নিয়ে টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়া সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি ঘাটে পৌঁছায় পৌনে ২টায়। এসময় জেটি ঘাটে টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিইদ্দীন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেদের ফেরত আনার প্রক্রিয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, টেকনাফ-২ বিজিবির মেজর ইশতিয়াক আহমেদ ও মেজর ছৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ।
আরাকান আর্মি সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে অপহৃত জেলেদের ফেরত আনা হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে টু-বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিইদ্দীন আহমেদ বলেন, গত সোমবার নাফ নদীতে বাংলাদেশি পাঁচ জেলে মাছ শিকার করছিল। এ অবস্থায় তাদের নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে পরে। এসময় তাদের নৌকা ভেসে মিয়ানমার সীমান্তে ঢুকে পরে। ফলে খাইং চং নামক জায়গায় থেকে মিয়ানমার বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে নৌকাসহ পাঁচ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি। এক পর্যায়ে আজকে দুপুরে আরাকান আর্মি বাংলাদেশি জেলেদের হস্তান্তর করলে, তাদের ফেরত আনা হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবির এ কর্মকর্তা জানান, আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ বলতে, পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে মিয়ানমারের সীমান্তে যে সংগঠন থাকুক না কেন দেশের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে যোগাযোগ করা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি ও মিয়ানমার সীমান্তে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এই পাঁচ জেলেকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেই ব্যাপারে তাদের (আরাকান আর্মির) সঙ্গেও কথা হয়েছে। যার কারণে সম্প্রতি সময়েও বাংলাদেশে কোনো ট্রলারের ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া আমরা প্রতিনিয়ত সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিহত করছি।
ফেরত আসা জেলেরা হলেন, রাশেদ হোসেন, মো. বোরহান, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ রাসেল ও মোহাম্মদ আলম।
ফেরত আসা নৌকার মাঝি মো. আলম বলেন, আমরা নাফ নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়েছিলাম। সেখানে স্পিড বোট নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাদেরকে ধরে নিয়ে গিয়ে মংডুতে তাদের (আরাকান আর্মি) একটি ক্যাম্পে রাখা হয়। এসময় আমাদের মারধর করা হয়। পরে রাত ৩টায় জঙ্গল থেকে পায়ে হেঁটে আরেকটি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। প্রথমবার মেরেছিল আর মারেনি। দুই বেলায় খাবার দিয়েছিল। তবে এখন দেশে আসতে পেরে খুশি লাগছে।
আরেক জেলে মো. বোরহান বলেন, মাছ ধরতে গেলে আমাদের নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়, পরে ভেসে মিয়ানমারের কাছাকাছি চলে গেলে আরাকান আর্মি এসে ধরে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে মারধরও করে।