৮ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের গণসমাবেশ
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৪ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২৪ শুক্রবার
সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মন্দিরে হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থাসহ আট দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসমাবেশ করছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দলে দলে বিভিন্ন সনাতনী সংগঠনের ব্যানারে শহীদ মিনারে জড়ো হয় আন্দোলনকারীরা। শঙ্খ বাজিয়ে ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু করেন তারা।
উক্ত গণ-সমাবেশে অধ্যাপক ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নির্মল বিশ্বাস, প্রসেনজিৎ কুমার হালদার, রাজেশ নাহা, পিযুষ দাসের সঞ্চালনায় সমাবেশে ছিলেন চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক ভাবনামৃত সংঘ, ইস্কন-এর সাধারণ সম্পাদক লীলারাজ ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রাম পুন্ড্ররিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, শ্রীমং রবীশ্বানন্দ পুরী মহারাজ, শ্রীমং স্বরুপ দাস বাবাজী মহারাজ, শ্রীমং গোপীনাথ দাস ব্রহ্মচারী, প্রফেসর চন্দন সরকার, সুমন গোস্বামী পুলক। বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের প্রতিনিধি প্রসেঞ্জিত কুমার হালদার, রনি রাজবংশী, দেবব্রত সরকার, জাগো হিন্দু পরিষদের চট্টগ্রামের টিটু শীল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ হিন্দু পরিষদের সাবেক হিন্দু পরিষদের বিকাশ চন্দ্র দাস, নারায়ন গঞ্জ জেলা সভাপতি প্রকৌশলী উত্তম কুমার দাস, হিন্দু যুব পরিষদের সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি মনোদীপ মন্ডল, নির্মল বিশ্বাস, প্রদীপ কান্তি দে, সনাতনী অধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধি সাজেন কৃষ্ণ বল, বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক-এর এডভোকেট সুশান্ত অধিকারী, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্র কমিটির সভাপতি দিপঙ্কর সিকদার দীপু, মুখপাত্র সাজন কুমার মিশ্র, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সভাপতি আশীষ চন্দ্র দাশ, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুমন কুমার রায়, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত অধিকারী, বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশন এর মহাসচিব সাংবাদিক শ্যামল কান্তি নাগ, সারদাঞ্জলী ফোরামের মহানগর সভাপতি রতন চন্দ্র পাল ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন পাল। উক্ত মহাসমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করেন জাগো হিন্দু পরিষদ হরিজন ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান পরিষদ, ভক্ত সংঘ সোসাইটি,
ভক্ত সংঘ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম, সুহৃদ বাংলাদেশ।
সমাবেশে বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ ক্রান্তি দে বলেন, ৯ আগস্ট থেকে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের উপর যে অত্যাচার হচ্ছে সেটা বন্ধ করার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি। আমাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় বসার নয়, দেশকে অস্থিতিশীল করার নয়। আমরা কেবল অধিকারের জন্য এসেছি। আমাদের আট দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্যই আমরা সংগ্রাম করছি। এসময় সমাবেশে যেন রাষ্ট্র বিরোধী এবং ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্য না দেওয়া হয় সেজন্য সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
অ্যাডভোকেট সুশান্ত অধিকারী বলেন, সরকার পতনের পর থেকেই যেভাবে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, লুটপাট শুরু হয়েছে তাতে বোঝা যায় এদেশের সংখ্যালঘুরা কতটা অনিরাপদ। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন। নাহলে এই সমস্যা কখনোই নিরসন হবে না। পতিত সরকার সংখ্যালঘুদের অবহেলা করায়, বৈষম্য সৃষ্টি করায় তাদের পরিণতি ভালো হয়নি। সুতরাং অনতিবিলম্বে বৈষম্য নিরসন করে আট দফার বাস্তবায়ন করতে হবে।
সমাবেশে একাত্মাপ্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব ও মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে, হিন্দু যুব মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি গৌতম হালদার প্রান্ত, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ও বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট বিধান বিহারী গোস্বামী, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী দাস প্রমুখ।
৮ দফা দাবি
১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য "নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন" গঠনের মাধ্যমে "দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল" গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়েউপযুক্ত শাস্তি প্রদান ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. অনতিবিলম্বে "সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন" প্রণয়ন করতে হবে।
৩. সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন ।
৪. সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট কে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নত করতে হবে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট কে ও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে ।
৫. "দেবত্তোর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন" প্রণয়ন এবং "অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ" আইন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলের প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করতে হবে ।
৭. সংস্কৃত পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন করতে হবে।
৮. শারদীয় দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দিতে হবে পাশাপাশি প্রতিটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রধান প্রধান ধর্মীয় উৎসবের প্রয়োজনীয় ছুটি প্রদান করতে হবে।