অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শাক-সবজিতে ক্ষতিকর ভারী ধাতু, ফলে কীটনাশক

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪:৫৬ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার  

দেশের সবজিতে ভারী ধাতু ও ফলে কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। নয় ধরনের সবজি ও চার ধরনের ফল নিয়ে গবেষণা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এসব সবজি ও ফল খাওয়ার কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের জনসাধারণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের খাদ্যচক্রে এসব ভারী ধাতুর প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। তবে সেজন্য নির্দিষ্ট কোনো ফসল বা খাদ্যপণ্য নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে খাদ্য উৎপাদনের উৎসে বিষ ছড়ানোর সুযোগ বন্ধ করতে হবে বলে জানান তারা। এ ছাড়া আমদানি করা কীটনাশকে ভারী ধাতু যেন না থা‌কে- এটাও নিশ্চিত করা জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

আজ সোমবার রাজধানীতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত গবেষণার ফল অবহিতকরণ সেমিনারে এসব কথা জানানো হয়। সম্প্রতি সবজিতে রাসায়নিকের মাত্রা নিয়ে গবেষণা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ও ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া। তারা বাজার থেকে নয় ধরনের সবজি সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল আলু, বেগুন, ঢেঁড়স, টমেটো, লালশাক, পটল, বাঁধাকপি, শসা ও মটরশুঁটি। আর যেসব ফল নিয়ে গবেষণা করেছেন সেগুলো হলো আম, লিচু, বরই ও পেয়ারা।

গবেষণায় দেখা গেছে, এসব সবজিতে লেড, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়ামসহ বেশ কয়েকটি রাসায়নিকের উচ্চ মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে এ তালিকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর মাত্রায় ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে লালশাকে।

লালশাকে সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতু। যেখানে ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১৯০ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি, সেখানে লালশাকে পাওয়া গেছে ৭০৪ দশমিক ৩২ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি। বেগুনে পাওয়া গেছে ২৭৫ দশমিক ৬৬ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি, ঢেঁড়সে ৩৪৯ মাইক্রো গ্রাম ও টমেটোতে ১৯৫ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি। ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ উপস্থিতি পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা থেকে।

একইভাবে ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে শিম, শসা, ঢেঁড়স, পটল ও লালশাকে। লেডের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বেগুন, বাঁধাকপি, শিম, শসা, ঢেঁড়স, পটল, টমেটো ও লালশাকসহ ৯টি সবজিতে।

এদিকে, আম, লিচু, বরই ও পেয়ারার ৩২০টি নমুনায় কীটনাশক রেসিডিউ পরীক্ষা করে গড়ে ১০ শতাংশের মধ্যে ক্ষতিকর মাত্রায় কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

এ সময় দুই গবেষক ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন শেরে বাকৃবির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পরিচালক ড. শামশাদ বেগম কোরাইসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল রউফ মামুন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া প্রমুখ।